সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

বিজয়ের মাস ডিসেম্বর : মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ভাবনা-১০

মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা-পরিবার সুরক্ষার আইন চাই

-------খাজা সফিউল বাসার রুজমন

কামরুজ্জামান টুটুল ॥
মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা-পরিবার সুরক্ষার আইন চাই

আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবুল বাসার। বাবাকে হারিয়েছি ছোটবেলায়। বাবার তেমন কোনো স্মৃতি মনে নেই। তবে বাবার রেখে যাওয়া বীরত্বগাথা সবসময় শুনতাম তাঁর সহযোদ্ধাদের কাছে। শৈশবে দাদার কাছে শুনেছিলাম বাবা সবাইকে না জানিয়ে পায়ে হেঁটে ও নৌকাযোগে ভারতে প্রবেশ করেন। সেখানে ট্রেনিং শেষ করে দেশে ফিরে বাবা গোপনে মায়ের সাথে দেখা করতে আসলে সবাই জানতে পারে যে, তিনি বেঁচে আছেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে সরকারের কাছে দাবি জানাবো মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সুরক্ষা আইন করার জন্যে। দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের নিয়মিত আয়োজন ‘বিজয়ের মাস ডিসেম্বর : মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ভাবনা’ শিরোনামে আজ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন খাজা সফিউল বাসার রুজমন। তার সাক্ষাৎকারটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার বাবা (যিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা)-এর নাম ও সংক্ষিপ্ত পরিচয় কী? তিনি কোথায় যুদ্ধ করেছেন?

খাজা সফিউল বাসার রুজমন : আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার। তিনি চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার বিলওয়াই গ্রামের হাজী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ইন্টারমিডিয়েট পড়াকালীন বাড়ির সম্পর্কের বড়ভাই বিএলএফের যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম মোহন-এর সহযোদ্ধা হন আমার বাবা। ভারতের হাতিমারা ক্যাম্পে টেনিং শেষ করে দেশে ফিরে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেন বলাখালের আলোচিত ওয়্যারলেস এলাকার সম্মুখ যুদ্ধে। যুদ্ধ পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল সদর দপ্তরে হিসাব কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরি করেন। তিনি ১৯৯৭ সালে নিজ এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আপনার অনুভূতি কী?

খাজা সফিউল বাসার রুজমন : বাবার বীরত্বপূর্ণ জীবন আমাকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে। যতদিন বেঁচে থাকবো বাবার মত দেশপ্রেমে নিজেকে উজাড় করে দেবো। তাই স্বাধীনতার সপক্ষে সর্বদাই নিবেদিত থাকবো এবং স্বাধীনতার বিরোধী শত্রুদের আমৃত্যু ঘৃণা করে যাবো।

চাঁদপুর কণ্ঠ : মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারে আপনার করণীয় কী কী হওয়া উচিত বলে মনে করেন?

খাজা সফিউল বাসার রুজমন : স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিগুলো আজ দুর্বল হয়ে আসছে। দেশের বর্তমান প্রজন্মকে আজ মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে একটি শ্রেণী দাঁড় করানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ অনুধাবন পূর্বক সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে মানসিকভাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।

মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের অনুকূলে চালু রাখা নামমাত্র ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা’ (যার প্রকৃত কোনোরূপ বাস্তবায়ন নেই) প্রত্যাহার করে শতভাগ মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের চাকুরি নিশ্চিত করা উচিত। সেই সাথে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা-পরিবার সুরক্ষার আইন প্রণয়ন করার দাবি জানাচ্ছি। এতে করে রাষ্ট্রের কিছুটা হলেও দায় মুক্তি মিলবে বলে আশা করছি।

উল্লেখ্য, খাজা সাফিউল বাসার (রুজমন), হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং হাজীগঞ্জ পৌরসভার বাজার পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়