প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে আবারো ঘূর্ণিঝড়ের থাবায় ইটভাটা ॥ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে মালিকরা
ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র রেশ কাটতে না কাটতেই নতুন করে আবার ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউমে’র থাবার মধ্যে পড়েছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইটভাটা মালিকেরা। গত ১৭ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র আঘাতে উপজেলার প্রায় ২০টি ইটভাটার ১ কোটিরও বেশি কাঁচা ইট নষ্ট হয়। যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিলো ৫ কোটি টাকা। গত ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে অধিক পারিশ্রমিক দিয়ে শ্রমিক সংগ্রহ করে রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছিলেন মালিকরা। নতুন করে লাখ লাখ ইট প্রস্তুতও করেছিলেন। কিন্তু নতুন করে আবার ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের থাবার মধ্যে পড়েছে ইটভাটার মালিকরা।
বুধবার ও বৃহস্পতিবার মুন্সিরহাট, কামতা, গল্লাক, মানিকরাজসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের ইটভাটাগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নতুন করে লাখ লাখ কাঁচা ইট প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। নতুন করে আবির্ভূত ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের থাবা থেকে রক্ষার জন্যে পলিথিন দিয়ে কাঁচা ইট ঢাকনা দিয়ে রাখা হয়েছে।
এ সময় উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা একাধিক ইটভাটার শ্রমিকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, গত ক’দিন আগে ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’ আমাদের মালিকদের লাখ লাখ কাঁচা ইট নষ্ট করে সর্বস্বান্ত করে গেছে। এখন আবার নতুন করে ঘূর্ণিঝড় হয়েছে, যার কারণে আমাদের মালিকপক্ষের মন অত্যন্ত খারাপ। অনেক মালিক মন খারাপের কারণে ইটভাটার কাছেও আসে না। এছাড়া ইটভাটার মালিকদের এই ক্ষতি দেখে শ্রমিকদেরও মন খারাপ।
মানিক রাজ ইটভাটার পরিচালক আব্দুল সাত্তার মেম্বার বলেন, গত ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে আমাদের সব শেষ। এখন আবার অধিক হারে ঋণ নিয়ে নতুন করে আবার কাঁচা ইট প্রস্তুত করেছি। কিন্তু আবার নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দেখা দিয়েছে। এতে করে আমাদের কী হয় আল্লাহ ভালো জানেন।
তিনি বলেন, ইটভাটাগুলো প্রশাসনের যেসব দপ্তর দেখাশোনা করে তারা যদি ইটভাটাগুলোর প্রতি একটু সহানুভূতিশীল হয় তাহলে আমরা মালিকপক্ষ তাদের প্রতি চির কৃতজ্ঞ থাকবে।
ফরিদগঞ্জ ইটভাটা মালিক সমিতির নেতা এবং মেসার্স মুন ব্রিকসের মালিক সুমনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, গত ক’দিন আগের ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ফরিদগঞ্জ উপজেলার ২০টি ইটভাটার প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে রাত-দিন পরিশ্রম করে এবং শ্রমিকদের অধিক পারিশ্রমিক দিয়ে কাঁচা ইট প্রস্তুত করা হয়েছিলো। কিন্তু এখন আবার নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সব স্বপ্ন বিলীন হওয়ার পথে।
ইটভাটার মালিক প্রবাসী মিরন খান জানান, গত ঘূর্ণিঝড়ে তার ১০ লাখ ইট নষ্ট হয়। এখন আবার নতুন করে ঘূর্ণিঝড়। এই ঘূর্ণিঝড়ে কী ক্ষতি হয় সেটা আল্লাহ ভালো জানেন। তিনি বলেন, প্রশাসনের যেসব দপ্তর ইটভাটাগুলো পরিদর্শন করে তারা যদি ইটভাটার মালিকদের প্রতি একটু সহানুভূতিশীল হন তাহলে মালিকপক্ষ তাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকবে।
চাঁদপুর জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান সপু কোম্পানি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মিধিলি ইটভাটার মালিকদের ফকির বানিয়ে গেছে। যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে মালিকরা নতুন করে স্বপ্ন দেখেছিলেন। ব্যাপক হারে কাঁচা ইট প্রস্তুত করা হয়েছিলো। কিন্তু এখন আবার নতুন করে ঘূর্ণিঝড়ের থাবা! আল্লাহ ভালো জানেন। তিনি ইটভাটা মালিকদের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে কর্তৃপক্ষের সহানুভূতি কামনা করেন।