প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
ঐতিহ্যবাহী শিশু-কিশোর সংগঠন মতলব সূর্যমুখী কচি-কাঁচার মেলার ৫৫ বছর পূর্তি ও কচি-কাঁচা দিবস গত ৫ নভেম্বর রোববার বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র্যালি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।
দিবসটির শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা ও কচি-কাঁচার মেলার পতাকা উত্তোলন করেন মেলার সভাপতি মোঃ মাকসুদুল হক বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আইনুন্নাহার কাদ্রী। এরপর সদস্যগণ শপথ গ্রহণ করেন। শপথ পরিচালনা করে শিশু সদস্য মেহজাবিন কাদরী। এ সময় মেলার সদস্য ভাই-বোনদের নিয়ে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি মতলবের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আলোচনা সভায় মেলার সভাপতি মোঃ মাকসুদুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা আইনুন্নাহার কাদরীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মতলব সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রোটাঃ ডাঃ একেএম মাহবুবুর রহমান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শাহ মোঃ মহিবুল্লাহ, মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ রিপন বালা ও মতলব রয়মনেননেছা মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অরুণ চন্দ্র সরকার।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মতলব দক্ষিণ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালেহ আহমেদ, চাঁদপুর অঙ্কুর কঁচি-কাঁচার মেলার প্রবীণ সদস্য ওমর ফারুক, মেলার সহ-সভাপতি দেওয়ান মোঃ রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ এসএম সেলিম, মেলার প্রবীণ সদস্য মুহাম্মদ আবদুল কাইউম খান, কেএম লোকমান হোসেন, জাকির হোসেন, ফারুক বিন জামান, গোলাম মোস্তফা কাদ্রী, কচি-কাঁচা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারুক আহমেদ বাদল, কচি-কাঁচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ ছোবহান, মেলার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াদুল আলম রিয়াদ, মেলার কর্মী সদস্য মেহজাবিন কাদ্রী প্রমুখ।
অতিথিবৃন্দ মেলার কর্মসূচির ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং শিশুদের শিক্ষার পাশাপাশি ভালো মানুষ হবার তাগিদ দেন। তারপর বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণদের মধ্যে প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, অতিথিবৃন্দ ও মেলার কর্মকর্তাবৃন্দ পুরস্কার ও সার্টিফিকেট বিতরণ করেন। এরপর শুরু হয় মেলার শিশু সদস্যদের ও চাঁদপুর থেকে আগত ব্যান্ডদলের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন মেলার তরুণ সদস্য কামরুল হাসান নিপু। সবশেষে হয় আকর্ষণীয় র্যাফেল ড্র। পরিচালনা করেন প্রবীণ সদস্য মোঃ আবদুল কাইউম খান।
দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে মেলার শত শত শিশু ভাই-বোন, শিশু, তরুণ, প্রবীণ সদস্যবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবকবৃন্দ, দর্শক-শ্রোতা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১৮ অক্টোবর বুধবার ছিলো শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ক, খ ও গ বিভাগে চিত্রাঙ্কন ও সুন্দর হাতের লেখা প্রতিযোগিতা এবং ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ঘ ও ঙ বিভাগে ছিলো উপস্থিত রচনা প্রতিযোগিতা। গত ১৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার শিশু শ্রেণি থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত ক, খ, গ, ঘ ও ঙ বিভাগে আবৃত্তি ও দেশাত্মবোধক সঙ্গীতের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিলো চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। এতে ২শ’ ৪২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। ২২টি প্রাথমিক, উচ্চ বিদ্যালয় ও সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করে। বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের উপস্থিতিতে মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে উঠে। বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অধ্যাপক মোঃ কাওছার রসিদ, সাংস্কৃতিক সংগঠক দেওয়ান রেজাউল করিম ও নাজমুল আহসান খোকন, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মজিবুর রহমান ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নাজমুল ইসলাম।
প্রতিযোগিতার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন মেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আইনুন্নাহার কাদরী। ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মেলার প্রবীণ সদস্য ও কচি-কাঁচা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফারুক আহমেদ বাদল। সহযোগিতা করেন মতলব মেলার সহ-সভাপতি ফররুখ আহমেদ চৌধুরী (মিনার), প্রবীণ সদস্য ফারুক-বিন-জামান, মোঃ মোস্তফা কাদ্রী, দেওয়ান মোঃ সুরুজ, মোঃ মোফাজ্জল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারওয়ার সেলিম, রিয়াদুল আলম রিয়াদ, কচি-কাঁচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ শিক্ষকবৃন্দ, কচি-কাঁচা প্রি-ক্যাডেট স্কুলের শিক্ষক ও সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
প্রতিযোগিতা চলাকালীন পরিদর্শনে আসেন মতলব সরকারি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ এবং নায়েমের মহাপরিচালক (অবঃ) অধ্যাপক ড. মোঃ লোকমান হোসেন।