প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
চতুরঙ্গের ১৫তম জাতীয় ইলিশ উৎসবের সফল সমাপ্তি
ইলিশ সম্পদ রক্ষায় সরকার পরিকল্পনামাফিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করবে
-----পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম
চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের ১৫তম জাতীয় ইলিশ উৎসবের সফল সমাপ্তি হয়েছে। গতকাল ২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় সমাপনী দিবসের গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনা পর্ব। এ পর্বে মুখ্য আলোচক ও প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের কৃতী সন্তান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম।
|আরো খবর
তিনি বলেন, আমি আজ চাঁদপুরে ইলিশের গন্ধে নয়, সংস্কৃতির আকর্ষণে এসেছি। চতুরঙ্গের মাধ্যমে যে ইলিশ উৎসব করা হচ্ছে, সেখানে এসে দেখি চমৎকার আয়োজন। দেশ-বিদেশের শিল্পীদের সমন্বয়ে আপনারা ইলিশকেন্দ্রিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করছেন। আমার জন্যে সৌভাগ্য এমন সুন্দর অনুষ্ঠানে আসতে পারা। সেজন্যে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, ১৯৬৫ সালে আমি হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে বসে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তখন প্রিয় এ শহরটিতে আসি। ঐতিহ্যের শহর চাঁদপুরের ঐতিহ্যের ধারক ইলিশের ভাজা আর সর্ষে ইলিশ আমার প্রিয় খাবার। তিনি সংস্কৃতির বিষয় বলতে গিয়ে বলেন, যিনি সংস্কৃতিবান ব্যক্তি, তিনি আদর্শবান ব্যক্তি। যিনি সংস্কৃতিবান তিনি মাদকসেবী হতে পারেন না। সত্যিকার সংস্কৃতিবান ব্যক্তি কখনো মিথ্যাচারী হতে পারেন না। সংস্কৃতি মানুষকে পরিশুদ্ধ করে।
তিনি ইলিশের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলেন, যখন ইলিশ মাছের দাম বেশি তখন বুঝতে হবে তার চাহিদা প্রচুর। আর এই চাহিদা পূরণ করতে হলে ইলিশের মাতৃমাছকে ডিম ছাড়তে দিতে হবে। ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে হবে। তিনি চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, তারা জেলেদের জেল দিতে চান না, কথাটি ভালো। উপস্থাপক হারুন আল রশীদের প্রস্তাবনা অনুযায়ী আমার প্রস্তাব, অভিযানের পূর্বে জেলেদের জালগুলো তাদের কাছ থেকে নিয়ে প্রশাসনের কাছে রেখে দিলে তারা আর চুরি করে মাছ ধরতে যাবে না। তাহলে ইলিশ সম্পদ রক্ষা পাবে।
তিনি দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলেন, আগে ৩০-৪০ টাকায় ইলিশ মাছ পাওয়া যেতো। তখন স্বর্ণের ভরি ছিলো ১৩০ টাকা। বর্তমানে স্বর্ণের ভরি লাখ টাকা। সে হিসেবে বললে ইলিশের মূল্য তেমন বৃদ্ধি পায়নি। আমি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী, আমার কাজ হলো সরকারের পরিকল্পনায় কাজ করা। অতএব পরিকল্পনামাফিক সরকার ইলিশ সম্পদ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করবে ইনশাআল্লাহ। আসুন, আমরা সবাই মিলে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করে ইলিশ সম্পদ রক্ষা করি।
আলোচনা পর্বে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের কৃতী সন্তান, দৈনিক যুগান্তরের যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকা পোস্টের সম্পাদক মহিউদ্দিন সরকার। আলোচক ছিলেন জেলা কালচারাল অফিসার দিতি সাহা ও মৎস্যজীবী প্রতিনিধি মানিক দেওয়ান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের আজীবন সদস্য সাংবাদিক মির্জা জাকির। ইলিশ উৎসবের রূপকার হারুন আল রশীদের সঞ্চালনায় সভাপ্রধান হিসেবে বক্তব্য রাখেন ১৫ বছর ইলিশ উৎসবের সফল আহ্বায়ক রোটাঃ কাজী শাহাদাত পিএইচএফ।
আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাখাওয়াত জামিল সৈকত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত, সংগঠনের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার ও প্রকৌশলী ফারুক বিন জামান।
বিকেলে ইলিশ বিষয়ক সংসদীয় বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। তাতে অংশগ্রহণ করেন পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজ ও চাঁদপুর সরকারি কলেজের বিতর্ক দল। ঢাকা নৃত্যবৃতির পরিবেশনায় নৃত্যানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সংগীত পরিবেশন করেন সাধনা সরকার, অনিতা কর্মকার, কোলকাতার ড. অর্পণ রক্ষিত, নিগার সুলতানা পপি, রাজীব চৌধুরী, মুন্না ঘোষ ও এমএইচ বাতেন। সবশেষে রাতে নৃত্যের ঝংকারে দর্শক মাতায় কোলকাতার সুমন মণ্ডল, সায়ন্তনী দত্ত, তৃষা দাস মণ্ডল, মৌসুমী মতিলাল, অর্পিতা ও গোস্ট গোপাল দেবনাথ।
উল্লেখ্য, গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত আলোচকবৃন্দকে উৎসবের রূপকার হারুন আল রশীদ বিভিন্ন প্রশ্ন করে তাদের কাছ থেকে উত্তর জানতে চান। যাতে আলোচনা প্রাণবন্ত হয়ে উঠে।