শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৩, ০০:০০

লোডশেডিং আর দাবদাহে অতিষ্ঠ ফরিদগঞ্জের জনজীবন
ফরিদগঞ্জ ব্যুরো ॥

রূপসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মশিউর রহমান। তীব্র গরমের সাথে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে নিজের রাতের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে জানান, শুক্রবার রাতে গরমের তীব্রতার সাথে লোডশেডিংয়ের কারণে ঘর থেকে বের হয়ে রাস্তার পাশের একটি চৌকিতে মশার কয়েল নিয়ে সারারাত বসেছিলাম। এভাবে আর কতোদিন চলবে জানি না। বিদ্যুতের ভেলকিবাজির সাথে তীব্র দাবদাহ আমাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। হয়ত বৃষ্টিই পারে আমাদেরকে এই ভোগান্তি থেকে বাঁচাতে। বিদ্যুতের কথা বলে লাভ নেই।

এভাবেই তীব্র গরমের সাথে ফরিদগঞ্জে ঘন্টায় ঘন্টায় পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এরই মধ্যে দিন-রাতে প্রায় অর্ধেক সময়ের বেশি ধরে থাকছে না বিদ্যুৎ। দিন-রাত মিলিয়ে ১২ হতে ১৪ বার লোডশেডিং করা হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তুলনামূলক পৌর শহরে বিদ্যুৎ একটু ভালো থাকলেও গ্রামে ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং করা হচ্ছে। ফলে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের হাজার হাজার গ্রাহক।

স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা লোডশেডিংয়ের কথা স্বীকার করে জানান, ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিস ও একই উপজেলার আওতাধীন কামতা জোনাল অফিস মিলিয়ে ১ লাখ ৪১ হাজার গ্রাহক রয়েছে। বিদ্যুতের ৩৪ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে আমরা মাত্র ১৭ বা কোনো কোনো সময় ১৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাচ্ছি। ফলে বার বার লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এদিকে প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ ঘন্টা লোডশেডিংয়ের নামে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। আগে বিদ্যুৎ কিছুটা ভালো থাকলেও গত প্রায় ২ সপ্তাহ নাগাদ পুরো উপজেলা জুড়ে পল্লী বিদ্যুতের লোডশেডিং বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় ঘন্টায় ২ বারও লোডশেডিং করা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় থাকছে না বিদ্যুৎ। অনেকেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিদ্যুতের দুর্ভোগ লাঘবে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। তীব্র এ গরমে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে শিশু-বৃদ্ধসহ অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক শরীফ হোসেন বলেন, গ্রামে একবার বিদ্যুৎ চলে গেলে যেন আসার কোনো সময় থাকে না। এক-দেড় ঘন্টা পর এলেও আধা ঘন্টাও থাকে না, আবার চলে যায়। তিনি আরও বলেন, ফলে বিদ্যুৎ না থাকায় এবং অসহ্য গরমে মানুষ রাতে শান্তিমত ঘুমাতেও পারছে না।

বিদ্যুতের গ্রাহক বেলাল হোসেন (৪০), শাহজাহান (৬০), করিম উদ্দিন (৪৫)সহ আরো বেশ ক’জন গ্রাহক চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার শুধু বলে বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়ন হয়েছে। এতো উন্নয়ন হলে এখন বিদ্যুৎ গেল কই? ঘন ঘন বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারে না। আমরা ঠিকমত ঘুমাতে পারি না। ফলে আমরা পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা চরম দুর্ভোগে পড়েছি।

ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম প্রকৌশলী মোঃ কামাল হোসেন বলেন, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ কম পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত লোডশেডিংয়ের সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, মানুষ বিভিন্ন স্থানে আলোকসজ্জা করছে। আমরা তাদের অনুরোধ করছি, অপ্রয়োজনে বিদ্যুৎ ব্যবহার থেকে বিরত থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে সহযোগিতা করার জন্য।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়