প্রকাশ : ০৩ জুন ২০২৩, ০০:০০
নব্বইর দশকে যে ক’জন ছাত্র নেতা চাঁদপুরের রাজপথ কাঁপিয়েছেন তার মধ্যে হাসান ইমাম বাদশা অন্যতম। এই নামটি শহরবাসীর কাছে বেশ পরিচিত। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী এবং চাঁদপুর চেম্বারের পরিচালক।
চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক হাসান ইমাম বাদশা ইতিপূর্বে জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি, জেলা যুবলীগের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন নিয়ে চাঁদপুর কণ্ঠের পক্ষ থেকে তাঁর মুখোমুখি হয়। তিনি এ বিষয়ে স্পষ্ট বলেছেন কেন্দ্র ঘোষিত তারিখেই সম্মেলন হোক এটা চাই। সময়মতো সম্মেলন না হওয়াতে ছাত্রলীগ, যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে যারা ছিলেন তারা জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি এবং শীর্ষ পদে আসতে পারছেন না। অতএব ঘোষিত তারিখে সম্মেলন হওয়াটা যৌক্তিক।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে আগামী ১৭ জুন। আপনি কী উক্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হোক-এটা চান? চাইলে কেনো চান। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
হাসান ইমাম বাদশা : প্রথমে আমি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানাই। কারণ আরো আগে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু নানা প্রতিকূলতার কারণে হয়তো সম্মেলন হতে পারেনি। অন্যদিকে সম্মেলন না হওয়ায় নতুন নেতৃত্বের সৃষ্টি হয়নি। অপরদিকে সম্মেলন হলে দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মী থেকে শুরু সকল স্তরের নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত থাকে।
আমি আশা করছি, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক নির্দিষ্ট তারিখে সম্মেলন হবে। সম্মেলনের আগাম সফলতা কামনা করছি। আর একটা বিষয় হচ্ছে, আপনি বললেন, আপনি কী চান, সম্মেলন হোক এবং কেনো চাই।
এ প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য সুস্পষ্ট, দেখুন আমরা যারা রাজনীতি করি, আমাদের সকলের একটি ইচ্ছে থাকে আমি যে ইউনিটের রাজনীতি করছি, সেই ইউনিটের শীর্ষ নেতৃত্ব দেয়ার ইচ্ছে থাকে। সে আলোকে সম্মেলন হলে নতুন নেতৃত্বের সৃষ্টি হবে। দল সুসংগঠিত হবে এটা সকলের প্রত্যাশা। আবার দেখুন বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের বেশ ক’টি পদ শূন্য রয়েছে। এ শূন্য পদগুলো হয়েছে আমাদের অনেক নেতা চিরবিদায় নিয়েছেন। রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর গঠনতন্ত্র মোতাবেক নিয়ম রয়েছে পদ শূন্য হলে একটি নিয়মণ্ডনীতি অনুসরণ করে সে শূন্য পদগুলো পূরণ করার। কিন্তু আমাদের বর্তমান কমিটি অজ্ঞাত কারণে সেগুলো পূরণ করেনি। অথচ আমাদের এই জেলায় আমাদের প্রিয় সংগঠন জেলা ছাত্রলীগের অনেক শীর্ষ নেতৃত্ব রয়েছে, যারা ছাত্র রাজনীতি শেষে আজো আওয়ামী লীগ বা অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের আর কোনো পদে অধিষ্ঠিত হতে পারেনি।
সবকিছু মিলে আমার মতে, একদিকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অন্যদিকে দলকে সুসংগঠিত করতে এবং তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন জরুরি। তাই আমি এই সম্মেলনটি হোক সেটাই চাই।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : এই সম্মেলনে বর্তমান নেতৃত্বের বহাল চান, না কোনো পরিবর্তন?
হাসান ইমাম বাদশা : সম্মেলন হলে নেতৃত্বের পরিবর্তন সকলেই চায়। তবে সে ক্ষেত্রে সম্মেলনের নিয়ম অনুযায়ী কাউন্সিলরদের গোপন মতামতের ভিত্তিতে আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচন করার দাবি জানাচ্ছি।
আমার এই দাবিটি একান্তই আমার ব্যক্তিগত অভিমত। তারপরও সংগঠনের স্বার্থে আমাদের নেত্রী এবং বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
সম্মেলনের মাধ্যমে এমন একটি নেতৃত্ব আসুক যে নেতৃত্ব কে কার লোক, সেটা না দেখে দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের নিজের বা দলের মনে করে ঐক্যবদ্ধ সকলকে নিয়ে দলের জন্য করবে--এমন নেতৃত্ব চাই। অতএব সে ধরনের নেতৃত্ব আনতে গিয়ে এবং দলের বৃহৎ স্বার্থে আমি মনে করি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ প্রয়োজনে তা অবশ্যই করা উচিত।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনি নিজে কি জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ ২টি পদের কোনো পদে আসতে চান? সেটা কেনো?
হাসান ইমাম বাদশা : আমি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে রাজনীতি শুরু করছি। যেহেতু রাজনীতি করছি, সেই কারণে অবশ্যই জেলা শাখার শীর্ষ নেতৃত্ব দেয়ার ইচ্ছে আমার রয়েছে। কিন্তু দলের বৃহৎ স্বার্থে যে কোনো সিদ্ধান্ত আমি মেনে নেবো। কিন্তু দলের সম্মেলন হোক এবং সকলকে নিয়ে সমন্বয়ের মাধ্যমে একটা নতুন কমিটি হোক--সেটি আমার বড় প্রত্যাশা। কারণ আওয়ামী লীগ এক ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কার বিজয়কে সুনিশ্চিত করতে হবে।
দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্ন সমূহের বাইরে আপনার কোনো বক্তব্য থাকলে তুলে ধরুন।
হাসান ইমাম বাদশা : দেখুন, আমরা যারা রাজনীতি করছি আমরা সকলে চাই, শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত হতে। তাই একটি পদে একাধিক প্রার্থী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এই পদ থেকে আমাদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা হবে, কিন্তু কোনো প্রতিহিংসা যেনো না থাকে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের আদর্শকে লালন করে একই দলের রাজনীতি করছি।
আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। এই নির্বাচনে আমাদের বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের বিকল্প নেই। তাই আসুন ব্যক্তিস্বার্থকে পরিহার করে জনস্বার্থে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে সুসংগঠিত করি এবং তৃণমূল পর্যায়ে সাধারণ জনগণকে বিগত ২০০৮ থেকে এ পর্যন্ত আমাদের দলীয় সরকারের উন্নয়নের কথাগুলো এবং মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির উন্নয়নের চিত্র ঘরে ঘরে পৌঁছে দেই, আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করি।