বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি : প্রাক্তন শিক্ষার্থীর মুখোমুখি-১৭

কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি আমার জীবদ্দশায় দেখা পরম সৌভাগ্যের

-----রোটাঃ সুভাষ চন্দ্র রায়

কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি আমার জীবদ্দশায় দেখা পরম সৌভাগ্যের
আলআমিন হোসাইন ॥

রোটাঃ সুভাষ চন্দ্র রায়। ব্যবসায়ী, শিক্ষানুরাগী ও সমাজসেবক। চাঁদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি। নেতৃত্ব দিয়েছেন চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডস্ট্রিজের। দূরদর্শী নেতৃত্বের পাশাপাশি বহু ধর্মীয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতাণ্ডপরিচালক।

রোটাঃ সুভাষ চন্দ্র রায় চাঁদপুর সরকারি কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। ১৯৬২-১৯৬৩ সেশনে তিনি এ কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন। ‘চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি : প্রাক্তন শিক্ষার্থীর মুখোমুখি’ শীর্ষক দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের ধারাবাহিক সাক্ষাৎকার পর্বে সম্প্রতি মুখোমুখি হন তিনি। এ সময় কলেজটি নিয়ে তাঁর স্মৃতিপটে সঞ্চিত কথামালা বর্ণনা করেন। উক্ত কথামালায় যেমন উঠে আসে চাঁদপুর সরকারি কলেজের ছাত্রজীবনের কথা, তেমনি প্রতিবিম্বিত হয় আগামীর প্রত্যাশা ও স্বপ্নের কথা।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কত সালে, কোন্ শ্রেণিতে চাঁদপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হন?

রোটাঃ সুভাষ চন্দ্র রায় : আমি চাঁদপুর সরকারি কলেজের ১৯৬২-১৯৬৩ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির কমার্স বিভাগে ভর্তি হই। সে সময় কলেজে এজিএস হিসেবে নির্বাচন করি। সে নির্বাচনে আমার প্রতিপক্ষ ছিলো বড়স্টেশনের হারুন। তিনি ব্রিগেডিয়ার মাসুদ সাহেবের ভাই। অবশ্য নির্বাচনটি আর হয়নি, বিরোধীপক্ষ তা বানচাল করে দেয়। আমাদের নেতা ছিলেন অ্যাডঃ ফখরুল ভাই। প্রতিপক্ষ ছিলেন রব ভাই ও শেখ মতিউর রহমান ভাই। কলেজে তখন ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্ট ফ্রন্ট (ডিএসএফ) ও আইডিয়াল স্টুডেন্ট ফ্রন্ট (আইএসএফ) নামে সংগঠন ছিলো। আমি আইডিয়াল স্টুডেন্ট ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর সক্রিয় সদস্য ছিলাম।

চাঁদপুর কণ্ঠ : সে সময় কলেজের পরিবেশ কেমন ছিলো?

রোটাঃ সুভাষ চন্দ্র রায় : আমরা খুবই স্বাচ্ছন্দ্যে কলেজে পড়াশোনা করেছি। পরিবেশ ছিলো মনোরম। কলেজটির উন্নয়নে পুরানবাজারের ব্যবসায়ীদের ব্যাপক অবদান আছে। চাঁদপুর উন্নয়ন কমিটি (সিডিএফ) কলেজের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার প্রিয় শিক্ষক এবং সহপাঠী ছিলেন কারা? তাদের সম্পর্কে কিছু বলুন।

রোটাঃ সুভাষ চন্দ্র রায় : আমাদের সময় কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন ক্যাপ্টেন করিম উদ্দীন আহমেদ। আঃ ছাত্তার, সত্যেন ভৌমিক স্যার, এবিএম ওয়ালিউল্লাহ স্যার আমার ভীষণ প্রিয় ছিলেন। শ্রদ্ধেয় স্যারদের ভীষণ মনে পড়ে। স্যাররা খুবই আন্তরিকতার সাথে আমাদের পড়াতেন। যে কোনো সমস্যায় অভিভাবকের ন্যায় পাশে দাঁড়াতেন। মাথায় হাত বুলিয়ে দোয়া করতেন। জীবনে উন্নতির জন্যে পরামর্শ দিতেন।

আমার সহপাঠী ছিলেন আব্দুল কাদের মাস্টার, আলহাজ্ব মোঃ জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম, রণজিত সাহা, গোপাল সাহা (প্রয়াত), সুবোধ সাহা (প্রয়াত)। আমার একনিষ্ঠ অনেক বন্ধুই প্রয়াত হয়েছেন। অনেকে দেশের বাইরে বসবাস করছেন। বন্ধুদের সাথে এখনো যোগাযোগ অব্যাহত। নানা সুখণ্ডদুঃখের সঙ্গী বন্ধুরা।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজের ৭৫ বছরপূর্তিতে আপনার অনুভূতি জানতে চাই।

রোটাঃ সুভাষ চন্দ্র রায় : চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি আমার জীবদ্দশায় দেখা পরম সৌভাগ্যের। এ সময়ে শারীরিক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্যে দেশের বাইরে যাওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু এ অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্যে যাইনি। জীবনের শেষ পর্যায়ে এ অনুষ্ঠান চোখে দেখতে পারবো তা কখনোই ভাবিনি। মহান সৃষ্টিকর্তা সে সুযোগ করে দিয়েছেন।

চাঁদপুর কণ্ঠ : কলেজটি নিয়ে আপনার প্রত্যাশা/স্বপ্ন কী?

রোটাঃ সুভাষ চন্দ্র রায় : চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছরপূর্তি একটি মাইলফলক। এই মাইলফলকে দাঁড়িয়ে আমার প্রত্যাশা- কলেজটিকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার ঘোষণা দেয়া হোক। কেননা বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী চাঁদপুর-৩ (সদর ও হাইমচর) আসনের মাটি ও মানুষের প্রিয় নেত্রী ডাঃ দীপু মনি শিক্ষার মানোন্নয়নে নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আমার বিশ্বাস, আমাদের প্রাণের চাঁদপুর সরকারি কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করবেন। কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরে আরেক মাইলফলকের হাতছানি এখন দেখছি।

চাঁদপুর কণ্ঠ : উল্লেখিত প্রশ্নের বাইরে আপনার কোনো কথা থাকলে বলুন।

রোটাঃ সুভাষ চন্দ্র রায় : চাঁদপুর সরকারি কলেজ আমাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথকে সুগম করে দিয়েছে। এ কলেজে পড়ার সুবাদে আমি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সমাজসেবামূলক কাজে আত্মনিয়োগের সুযোগ পাই। কলেজে পড়াবস্থায় রোটারী আন্দোলনের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করি। উক্ত ক্লাবের হয়ে জাপান, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, হংকং, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডসহ বহু দেশ আমি ভ্রমণ করেছি। আমি চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সে সভাপতি হিসেবে নেতৃত্বে দিয়েছি। ক্রীড়াঙ্গনের সাথে যুক্ত আছি। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে ইতালী, সুইজারল্যান্ডসহ আশপাশের বিভিন্ন দেশ ঘোরার সৌভাগ্য হয়েছে। যা আমার জীবনের স্মরণীয় ঘটনা।

চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষাসহ আনুষঙ্গিক নানা দিকের উন্নতি হচ্ছে। এটি সম্ভব হয়েছে একমাত্র মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর বদৌলতে, আমাদেরকে তা স্বীকার করতেই হবে। এজন্যে শিক্ষামন্ত্রীর প্রতি আমরা চাঁদপুরবাসী বিন¤্রচিত্রে কৃতজ্ঞ। একই সাথে কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাশের কথা বলতেই হয়। তিনিও এ কলেজের ছাত্র। চাঁদপুরের কৃতী সন্তান। তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, শিক্ষকদের সাথে সমন্বয় করে পাঠদান ও নিরলসভাবে পরিশ্রমের ফসল হিসেবে চাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার মান অন্য যে কোনো কলেজকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতেও যাবে এ বিশ্বাস আমার আছে। কলেজের ধারাবাহিক সাফল্য কামনা করি। শিক্ষকবৃন্দকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দেশের সুনাগরিক হিসেবে তৈরি করতে তাঁদের আপ্রাণ প্রচেষ্টার জন্যে। কেননা এ শিক্ষার্থীরা আগামীর বাংলাদেশের কর্ণধার।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়