বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

বর্তমান পরিষদ চাঁদপুর পৌরসভাকে শক্তিশালী পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে
বিমল চৌধুরী ॥

চাঁদপুর পৌরসভা ও লালমনিরহাট পৌরসভার জনপ্রতিনিধি ও পৌর কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে উত্তম অর্জন বিষয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময় বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে দুই পৌরসভার মেয়রসহ তাদের পরিষদের জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাগণ পৌরবাসীর জীবনধারার মানোন্নয়নে গৃহীত কার্যক্রমসহ টিএলসিসির মাধ্যমে জনসম্পৃক্ততা, পৌর রাজস্ব বৃদ্ধি, সেবা প্রদানে কম্পিউটারাইজড সিস্টেম, প্রিপেইড মিটারের সাহায্যে বিদুৎবিল পরিশোধ, নিজস্ব ব্যাবস্থাপনায় স্কুল ও মার্কেট পরিচালনা, বস্তিতে সঞ্চয় কার্যক্রম, টেকসই পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, প্রশাসনিক সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ের আলোকে প্রাণবন্ত আলোচনা করেন।

গতকাল ১৯ অক্টোবর বুধবার সকালে তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরন (সেক্টর) প্রকল্পের আয়োজনে ও চাঁদপুর পৌরসভার ব্যবস্থাপনায় শহরস্থ অভিজাত রেস্টুরেন্ট এলিট পার্টি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, পৌরবাসীর অনেকেই মনে করেন পৌরসভা একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। তাদের ধারণা পৌরসভার নির্ধারিত প্রদেয় বিল না দিলেও কোনো সমস্যা হবে না। পৌরসভা যে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান তা পৌরবাসীকে বোঝাতে হবে, যদি তা পারি তাহলে পৌরবাসীর টাকাতেই পৌরসভা পরিচালনা করা সম্ভব হবে এবং মানুষ নিয়মিত তাদের হোল্ডিং ট্যাক্স, পানির বিল, পৌরকর প্রদানসহ পৌরসভার সকল বকেয়া প্রদানে আগ্রহী হবেন। তিনি বলেন, চাঁদপুর পৌরসভার অধিকাংশ কার্যক্রমকে কম্পিউটারাইজড করা হয়েছে। পৌর এলাকায় প্রায় ৩৩ হাজার দরিদ্র পরিবার রয়েছে, এর মধ্যে প্রায় ২২ হাজার অতি দরিদ্র পরিবারের ডাটা আমাদের কাছে রয়েছে। যা পূর্বে সেভাবে সংরক্ষণ করা যায়নি। জনসম্পৃক্ততা সৃষ্টি করা পৌরসভার প্রথম কাজ। সেই লক্ষ্যে চাঁদপুর পৌরসভা যথেষ্ট সচেতন রয়েছে। এ লক্ষ্যে আমরা টিএলসিসির সভায় সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের উপস্থিতিসহ তাদের মতামতকে প্রাধান্য দিচ্ছি। তাদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে তাদের চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধানের লক্ষ্যে আমরা পৌরপরিষদের কর্মকর্তাগণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। কারণ আমরা মনে করি, এলাকার মানুষই চিহ্নিত করতে পারবে সত্যিকারভাবে তাদের সমস্যা কোন্টি। তিনি আরো বলেন, পৌরসভার উন্নয়ন সাধন এবং পৌরবাসীর কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন সফল করতে হলে আমাকে পৌরসভার অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যয় সংকোচন করতে হবে এবং পৌরসভার আয় বাড়াতে হবে। বর্তমান সময় পৌরসভার বাৎসরিক ব্যয়ভার পূর্বের চেয়ে প্রায় ২ কোটি টাকা কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি এবং আয় বাড়াতে গিয়ে পানির বিল, ট্রেড লাইসেন্স, হোল্ডিং ট্যাক্স, পৌরকর বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাকে কিছু বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আমি মনে করি, পৌরবাসীকে যদি আমি তাদের আশানুরূপ সেবা দিতে পারি, তাহলে তারা পৌরসভা গৃহীত সকল ট্যাক্স-খাজনা দিতে অপারগতা প্রকাশ করবেন না। তিনি আরো বলেন, আমরা কখনো বলতে পারি না, আমাদের সকল কাজই নিখুঁত যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের গৃহীত কাজগুলো মানুষের কাছে সমাদৃত না হয়। বর্তমান পরিষদ চাঁদপুর পৌরসভাকে একটি শক্তিশালী পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে আমাদের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা ক্ষমতায় থাকবো কি থাকবো না তা কিন্তু আমাদের বিবেচ্য নয়। আমাদের বিবেচ্য হলো চাঁদপুর পৌরসভাকে একটি আত্মনির্ভর পৌরসভা হিসেবে গড়ে তোলা। তিনি পৌর পরিষদসহ প্রতিনিধিদেরকে প্রশাসনিক কর্মদক্ষতাকে আরো ব্যাপকভাবে কাজে লাগানোর অনুরোধ জানান এবং লালমনিরহাট পৌরসভা থেকে আগত মেয়র, জনপ্রতিনিধি ও পৌর কর্মকর্তাদের মাঝে চাঁদপুর পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন ও গৃহীত কার্যসমূহ সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন।

পৌর মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল ও নগর পরিকল্পনাবিদ সাজ্জাত ইসলাম উত্থাপিত প্রেজেন্টেশনের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র মোঃ রেজাউল করিম স্বপন বলেন, চাঁদপুর পৌরসভার অনেক অর্জন রয়েছে যা গর্ব করার মত। একটি সুচিন্তিত পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে চাঁদপুর পৌরসভা এগিয়ে যাচ্ছে, আমি এ পৌরসভার সফলতা কামনা করছি। লালমনিরহাট পৌরসভার উন্নয়নে চাঁদপুর পৌরসভার অনেক ভালো পদক্ষেপকে আমরা অনুসরণ করতে পারি। তিনি বলেন, হাজারো রকম কাজের মধ্যে থেকেও আমরা পৌরবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে চেষ্টা করি। আজকে আমাদের উভয়ের আলোচনাক্রমে যে অভিজ্ঞতা সৃষ্টি হয়েছে তা আমরা পৌরবাসীর কল্যাণে কাজে লাগাতে পারবো। তিনি বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া একটি পৌরসভা পরিচালিত করা সম্ভব নয়। এজন্যে পৌর নাগরিক, জনপ্রতিনিধি তথা পৌর পরিষদের আন্তরিকতা ও প্রশাসনিক সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। শুধু মেয়রের আন্তরিকতা থাকলেই হবে না, প্রয়োজন টিমওয়ার্কের। তিনি আরো বলেন, সবসময় উন্নয়ন প্রকল্প থাকবে না, নিজস্ব আয় থেকেই পৌরসভাকে পরিচালিত করতে হবে। এজন্যে এখন থেকেই পৌরসভাকে নিজস্ব আয়ের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি চাঁদপুর পৌরসভার আতিথেয়েতায় সন্তোষ প্রকাশ করে তাদেরকে লালমনিরহাট পৌরসভা পরিদর্শনের জন্য আমন্ত্রণ জানান এবং লালমনিরহাট পৌরসভার ভৌগোলিক অবস্থানসহ বিবিধ কার্যক্রম তুলে ধরেন। সভায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন টিএলসিসি সদস্য চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক রোটারিয়ান কাজী শাহাদাত ও চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের সহ-সভাপতি তমাল কুমার ঘোষ। সভা সঞ্চালনা করেন পৌর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মফিজ হালদার।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন চাঁদপুর পৌরসভার কর্মচারী হাফেজ মোঃ জাকির হোসেন এবং শ্রীমদ্ভাগবত গীতা থেকে পাঠ করেন চন্দ্রনাথ ঘোষ চন্দন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর পৌরসভার সচিব আবুল কালাম ভূঁঞা, নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শামছুদ্দোহা, প্যানেল মেয়র ফরিদা ইলিয়াস, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডঃ মজিবুর রহমান ভূঁঞা, চাঁদপুর কণ্ঠের বার্তা সম্পাদক এএইচএম আহসানউল্লাহ, লালমনিরহাট পৌরসভার সচিব হাসানুজ্জামান বসুনিয়া, প্রকৌশলী আইউব আলী, অ্যাকাউন্টস্ অফিসার সফিকুল ইসলাম বাবু, প্যানেল মেয়র মোঃ নুরুল ইসলাম, ইউজিপের কর্মকর্তা অখিল রঞ্জন বিশ্বাস প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ১৮ অক্টোবর লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র মোঃ রেজাউল করিম স্বপনের নেতৃত্বে ২১ সদস্যবিশিষ্ট একটি টিম চাঁদপুর পৌরসভার কার্যক্রম স্বচক্ষে দেখাসহ তার অভিজ্ঞতা অর্জনে চাঁদপুর আসেন। আগত টিমটি আজ ২০ অক্টোবর বিকেলে চাঁদপুর ত্যাগ করবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়