প্রকাশ : ১৩ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০
মানিক চন্দ্র ভৌমিক। কচুয়া প্রেসক্লাবের সদ্য বিদায়ী সভাপতি। তিনি ২০০৬ সালে ‘শিকড়’ নামে একটি পাক্ষিক পত্রিকা সম্পাদনার মাধ্যমে সংবাদমাধ্যমে যাত্রা শুরু করেন। ২০০৮ সালে কচুয়া প্রেসক্লাবের সদস্যপদ লাভ করেন। পরে তিনি পর্যায়ক্রমে সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম-সম্পাদক, সাধারণ সম্পাদক ও সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন শেষে ২০২০-২২ মেয়াদে কচুয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্ত চিন্তার অধিকারী সাংবাদিক মানিক চন্দ্র ভৌমিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে মাস্টার্স করেছেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি শিক্ষকতা করছেন। ‘দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠ’ পত্রিকার ‘সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের ভাবনা’ শীর্ষক সাক্ষাৎকারে চাঁদপুর কণ্ঠের এ প্রতিনিধির মুখোমুখি হন।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার উপজেলায় সাংবাদিকতা অতীতের সকল সময়ের চেয়ে কি গতিশীলতা পেয়েছে? গতিশীলতা পেলেও কি মান রক্ষা হচ্ছে?
মানিক চন্দ্র ভৌমিক : কচুয়া উপজেলায় অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বর্তমানে সাংবাদিকতা অনেক গতিশীলতা পেয়েছে। কচুয়ায় বর্তমানে অনেক শিক্ষিত ও প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ সাংবাদিকতায় এসেছে। তরুণদের মাঝে গুণগত মানের কিছুটা ঘাটতি লক্ষ্য করা গেলেও সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে এরা ভবিষ্যতে ভালো করবে বলে বিশ্বাস করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : পত্রিকাগুলোর প্রিন্টিং সংস্করণের পাঠক এবং টিভি সংবাদের শ্রোতাণ্ডদর্শক দিনদিন কমছে। কারণ কী? এমনটি রোধের উপায় কী?
মানিক চন্দ্র ভৌমিক : অনলাইন নিউজ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক তথ্য তাৎক্ষণিক প্রকাশ পাওয়ায় প্রিন্ট মিডিয়ার চাহিদা দিন দিন কমছে। সহসা এটা রোধ হবে বলে মনে হয় না। উন্নত দেশগুলোতে সংবাদপত্র পড়ার জন্য ফ্রি বিতরণ করা হয়। প্রিন্ট মিডিয়ার চাহিদা বাড়াতে হলে বেশি বেশি ফিচার নিউজের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশাজীবীদের পেশাভিত্তিক মানোন্নয়নের নিউজ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করলে মানুষ পত্রিকামুখী হবে বলে মনে করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : আজকাল গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন মহল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ব্যবহার করতে চাইছে। অনেকে ইচ্ছা-অনিচ্ছায় ব্যবহৃতও হচ্ছে। সাংবাদিকদের মধ্যে অনৈক্য/বিভাজন থেকে এমনটি হচ্ছে। আপনার অভিমত কী?
মানিক চন্দ্র ভৌমিক : এটা ধ্রুব সত্য অনৈক্য ও বিভেদের কারণে বিভিন্ন মহল বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের অনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে এবং করছে। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ঐক্যের পাশাপাশি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ থাকা বাঞ্ছনীয়। আমি মনে করি একটি নির্দিষ্ট গঠনতন্ত্রের মাধ্যমে সারাদেশের প্রেসক্লাবগুলো পরিচালিত হওয়া দরকার এবং সকল প্রেসক্লাব কেন্দ্রীয় প্রেসক্লাবের নিয়ন্ত্রণভুক্ত হওয়া দরকার। যত্রতত্র ইচ্ছামত প্রেসক্লাব গঠন রোধ করা দরকার। পাশাপাশি সাংবাদিক নিয়োগে মান নিয়ন্ত্রণ করা দরকার।
চাঁদপুর কণ্ঠ : সংবাদ পরিবেশনে তাৎক্ষণিকতাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে অনলাইন সাংবাদিকতার জোয়ার। এতে কেউ কেউ অপসাংবাদিকতার সুযোগ বা আশ্রয় নিচ্ছে। সকল সংবাদের ক্ষেত্রে কি তাৎক্ষণিকতা জরুরি? আপনার মতামত জানতে চাই।
মানিক চন্দ্র ভৌমিক : বড় বড় দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় বড় বড় নিউজ চ্যানেলসহ সাধারণ পথচারীও লাইভ দেয়া শুরু করে। এতে অনেকেই ভুল তথ্য পরিবেশন করে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে আমাদের দেশে দাঙ্গা সংঘটিত করার অনেক উদাহরণ রয়েছে। উন্নত দেশে এসব ক্ষেত্রে লাইভ টেলিকাস্ট নিষিদ্ধ। অপসাংবাদিকতা রোধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ তাৎক্ষণিক সংবাদ পরিবেশনায় সরকারের হস্তক্ষেপ দরকার বলে মনে করি।
চাঁদপুর কণ্ঠ : উপরোক্ত প্রশ্ন সমূহের বাইরেও আপনার কোনো বক্তব্য থাকলে প্রদান করতে পারেন।
মানিক চন্দ্র ভৌমিক : আমি মনে করি মফস্বলে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে নেয়া যায় না। বেতন বিহীন এ কাজটিকে যারা পেশা হিসেবে নেন, তারা অনেক ক্ষেত্রে অর্থের বিনিময়ে অনৈতিক সংবাদ পরিবেশন করেন। তাই মফস্বলে তরুণদের হাতে সাংবাদিকতার কার্ড ধরিয়ে দেয়ার আগে সম্পাদক মহোদয়গণকে ভাবা দরকার বলে মনে করি। ধন্যবাদ চাঁদপুর কণ্ঠকে।