বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০২২, ০০:০০

ফরিদগঞ্জে বিএনপির গৃহদাহ
প্রবীর চক্রবর্তী ॥

নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের মধ্যে গৃহদাহের সৃষ্টি হয়েছে। এতদিন উপজেলায় সাবেক এমপি লায়ন হারুনুর রশিদ ও উপজেলা বিএনপির সমন্বয়ক এম এ হান্নানের অনুসারীদের মধ্যে দুটি ধারা বিদ্যমান থাকলেও সম্প্রতি এম এ হান্নানের অনুসারীদের মধ্যেই উপধারার সৃষ্টি হয়েছে। এরই জের হিসেবে উপজেলা বিএনপির সভাপতির আহ্বানকৃত মিলাদ মাহফিলে অংশ না নিয়ে অপর গ্রুপের মিলাদে অংশ নেয়ায় ইউনিয়ন বিএনপির এক সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়ার ঘটনায় গৃহদাহের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে।

সাবেক মেয়র ভিপি মঞ্জিল হোসেনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের পর থেকে নেতৃত্ব নিয়ে দলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল দেখা দেয়। প্রথমে প্রকাশ্যে না এলেও ১ সেপ্টেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন আওয়ামীলীগের কর্মীদের হাতে বিএনপির অফিস ভাংচুরের শিকার হয়। উপজেলা বিএনপি প্রকাশ্যে না বললেও এই ঘটনার জন্যে সাবেক মেয়রের ইন্ধন রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। শুরু হয় মনকষাকষি।

সপ্তাহখানেক পূর্বে উপজেলা বিএনপির সমন্বয়কারীর বাড়িতে প্রকাশ্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতির অনুসারী উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আঃ মতিনের ওপর হামলার ঘটনায় কোন্দল প্রকাশ্য রূপ পায়। বিষয়টি সমাধানের জন্য এম এ হান্নানের অনুরোধ সত্ত্বেও হামলার ঘটনার বিষয়ে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ হয়। সর্বশেষ পাল্টাপাল্টি মিলাদ মাহফিল আয়োজন এবং শোকজ নোটিসের ঘটনায় আগুনে ঘি ঢেলে দেয়ার মতো অবস্থা হয়েছে।

জানা গেছে, গত ৮ অক্টোবর ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপি ও পৌর বিএনপির ব্যানারে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ও উপজেলা বিএনপির সমন্বয়কারী এম এ হান্নানের সুস্থতা ও রোগমুক্তি কামনা করে এম এ হান্নানের অনুসারীরা মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা সদরের দুটি স্থানে।

গত ৩০ আগস্ট ১১ বছর পর বহিষ্কারাদেশ থেকে মুক্তি পাওয়া সাবেক পৌর মেয়র ও পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক ভিপি মঞ্জিল হোসেনের ভাইয়ের মালিকানাধীন একটি রেস্টুরেন্টে উপজেলা ও পৌর বিএনপির ব্যানারে একটি এবং উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আহ্বানে একই সময়ে আরেকটি মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু দলীয় সভাপতির ফোন পাওয়া সত্ত্বেও সাবেক মেয়রের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার কারণে সোমবার (১০ অক্টোবর) চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বাছির আহমেদকে কারণ দর্শানোর নোটিস করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

কারণ দর্শানোর নোটিসের ব্যাপারে বাছির আহমেদ জানান, তিনি এখন কোনো কথা বলবেন না।

সাবেক মেয়র মঞ্জিল হোসেনকে মুঠো ফোনে না পেলেও তার ভাই পৌর যুবদলের আহ্বায়ক ও সর্বশেষ পৌর নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইমাম হোসেন বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ও উপজেলা বিএনপির সমন্বয়কারী এম এ হান্নানের সুস্থতা ও রোগমুক্তি কামনা করে আমরা মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করি। অনুষ্ঠানের দুদিন পূর্বে আমরা কর্মসূচি নির্ধারণ করে উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সকলকে দাওয়াত দেই। তারা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা নিশ্চিত করেন। কিন্তু শনিবার (৮ অক্টোবর) হঠাৎ করেই উপজেলা বিএনপির সভাপতি শরীফ মোহাম্মদ ইউনুছ ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান একই সময়ে দলীয় কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেন। তাৎক্ষণিক আমরা উপজেলা বিএনপির সমন্বয়কারী এম এ হান্নানসহ নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বললে তারা জানান, যেহেতু আমাদের অনুষ্ঠানটি আগের নির্ধারিত, তাই এখানেই দাওয়াতপ্রাপ্তরা অংশগ্রহণ করবেন। সেই হিসেবে বাছির আহমেদসহ দলের গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা-কর্মী মিলাদে অংশ গ্রহণ করেন। কিন্তু আমাদের মিলাদে অংশগ্রহণ করায় বাছির আহমেদকে শোকজ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা বসবো।

অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শরীফ মোহাম্মদ ইউনুছকে মুঠোফোনে না পাওয়া গেলেও দলের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মুঠোফোনে জানান, বাছির আহমেদকে সভাপতি নিজে মুঠোফোনে দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু তিনি তা অগ্রাহ্য করে অন্য একটি মিলাদে অংশগ্রহণ করেন, যা অসাংগঠনিক কার্যক্রম। তাই তাকে শোকজ করা হয়েছে।

এদিকে বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, দলের নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে ক্রমশ দ্বন্দ্ব বাড়ছে বিএনপিতে। এমনিতেই সাবেক এমপির একটি আলাদা গ্রুপ রয়েছে। এখন এম এ হান্নানের অনুসারীদের মধ্যেও ফাটল দেখা দিয়েছে, যা বিএনপির জন্য অশনি সংকেত। এই গৃহদাহ ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

উল্লেখ্য, গত ২ অক্টোবর উপজেলা বিএনপির সভাপতি স্থানীয় পত্রিকার মাধ্যমে চরদুখিয়া পূর্ব ও বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়ন বিএনপির পুনর্গঠিত কমিটির ঘোষণা দেন। যা নিয়েও অপ্রকাশ্য ক্ষোভ রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়