প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২১, ০০:০০
মতলব উত্তরের জহিরাবাদ ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জহিরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গাজী সেলিম রেজা। গত ২৭ জুলাই মঙ্গলবার সকালে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গাজী সেলিম রেজা বলেন, মেঘনা নদীতে এবং আশেপাশের চর এলাকায় চুরি, ডাকাতি বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তা-ই, নয় নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের রাতের ঘুম হারাম করে চলছে বেশ কিছু নৌ-ডাকাত চক্র। তাদের বিভিন্ন অপকর্মের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে এলাকার যুবসমাজকে নিয়ে একটি টিম গঠন করে মানুষের জানমাল রক্ষায় কাজ করে আসছি।
গত ২৪ জুলাই মেঘনা নদীর জহিরাবাদ নামক স্থানে জেলেদের উপর হামলা ও ডাকাতির প্রস্তুতিকালে বহু মামলার আসামী ডাকাত সর্দার কাজী মতিন ও শামীম বেপারীর নেতৃত্বে ৪টি স্পীডবোটের ১টি স্পীডবোট বিকল হয়ে গেলে, তা রেখেই কাজী মতিন ও শামীম বেপারী গং এলাকার যুবকদের ধাওয়া খেয়ে পালিয়ে যায়। ওই সময় ডাকাতদলের নেতা কাজী মতিন সশস্ত্র অবস্থায় অন্য স্পীডবোট নিয়ে জনরোষের হাত থেকে পালিয়ে যায়। পরে নষ্ট হয়ে যাওয়া স্পীডবোট উদ্ধার করে নাওভাঙ্গা জয়পুর স্কুলের সামনে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে মতলব সার্কেল এএসপি, মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ ও মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত স্পীডবোটের সামনে অবস্থান করেন। উদ্ধারকৃত স্পীডবোট জব্দ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বলি, কিন্তু তা না করে তারা চলে যান। পরদিন সকালে আমি মতলব উত্তর থানা ও মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়িতে জিডি করতে গেলে তারা আমার জিডি গ্রহণ করেনি, বরং পুলিশের সহযোগিতায় গত ২৫ তারিখে নৌ ডাকাত দলের নেতা ও অসংখ্য মামলার পলাতক আসামী মতিন কাজী, মতলব উত্তর থানায় আমাকেসহ এলাকার যুবকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমুলক মামলা দায়ের করে। আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এর বিরুদ্ধে তীব্র্র নিন্দা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চাই অসংখ্য মামলার পলাতক একজন আসামী কিভাবে থানায় গিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে? আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে ডাকাতির প্রস্তুতির সময় প্রতিরোধ করা তা কি আমার অন্যায় ছিল? স্পীডবোটের বিষয়ে জিডি করতে চাইলেও করতে পারব না-এটা কোন্ ধরনের আইন? স্পীডবোট উদ্ধার করার পরপরই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসে উদ্ধারকৃত স্পীডবোট থানায় না নিয়ে উল্টো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চাই, মানুষের জানমাল নিরাপত্তার জন্য ডাকাত চক্রের মোকাবিলা করা কি অন্যায়? পুলিশ বাহিনীর কাছে আহ্বান করবো, আপনারা উদ্ধার হওয়ার পরপর ঘটনাস্থলে এসে সব দেখে গেছেন। সঠিক ও সত্যতা খুঁজে বের করেন, নতুবা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হবে এবং নৌ ডাকাতি বৃদ্ধি পাবে। আমি আপনাদের মাধ্যমে আরো জানাতে চাই, একজন লোকের কয়টা স্পীডবোট থাকতে পারে?
তিনি আরো বলেন, আপনাদের মাধ্যমে আরো একটা বিষয় মতলববাসীকে অবহিত করতে চাই, একটি মহল দীর্ঘদিন থেকে মেঘনা নদীতে বালি উত্তোলন করে না বলে বেড়ায়, অথচ আমার বিরুদ্ধে তাদেরই মিথ্যা মামলায় অভিযোগপত্রে বালু উত্তোলন কাজে টহল দেয়ার সময় স্পীডবোট চুরি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এবার আপনারা বিচার করুন, নদীতে বালু উত্তোলন করা হয় কিনা? আমি আজকের সংবাদ সম্মেলনে আপনাদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রশাসনের কাছে জানাতে চাই, নৌ ডাকাত চক্রকে প্রতিহত করতে গিয়ে আমার অপরাধ কোথায়? কেনো সবকিছু জেনেও মিথ্যা মামলা নিলো মতলব উত্তর থানা পুলিশ? আমি এর বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে অসংখ্য মামলার পলাতক আসামী মতিন কাজীকে গ্রেফতারের অনুরোধ করছি। এতে পুলিশ বাহিনীর প্রতি সাধারণ জনগণের আস্থা ফিরে পাবে।