প্রকাশ : ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫:৩৯
ফেনীতে গৃহকর্মীকে গলাকেটে হত্যা, সিসিটিভি ফুটেজে রহস্যময় যুবক
ফেনীর পৌরসভার ফলেশ্বর এলাকায় সাবেক কাউন্সিলর গোলাম ফারুক মজুমদারের ভাই গোলাম কিবরিয়া বকুলের বাসা থেকে গৃহকর্মী মাসুদা বেগমের (৬০) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে অজ্ঞাত এক যুবকের সংশ্লিষ্টতার আভাস পাওয়া গেছে।
|আরো খবর
নিহত মাসুদা বেগম ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের পিঠাপাশারী গ্রামের সিরাজুল ইসলামের স্ত্রী। তার এক মেয়ে ও চার ছেলে রয়েছে। তিনি গত আট বছর ধরে গোলাম ফারুক মজুমদারের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করছিলেন।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) তাকে নতুন কাজের জন্য ফারুকের ভাই গোলাম কিবরিয়া বকুলের বাসায় ডেকে আনা হয়। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে বাসার লোকজন বকুলের ঘরের সোফার নিচে তার গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করেন।
সিসিটিভি ফুটেজে রহস্যময় যুবক:বাসার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, রাত ৯টা ১৩ মিনিটে কালো প্যান্ট ও সাদা চেক শার্ট পরা একজন যুবক ভবনে প্রবেশ করে। মাত্র চার মিনিট পর, ৯টা ১৭ মিনিটে তাকে দ্রুত দৌড়ে ভবন থেকে বের হয়ে যেতে দেখা যায়।
স্থানীয়দের বক্তব্য:গোলাম ফারুক মজুমদার বলেন, "ঘটনার সময় আমি বাসা থেকে আধা কিলোমিটার দূরে চায়ের দোকানে ছিলাম। বাসা থেকে ফোনে খবর পাই, কেউ বাসায় ঢুকেছে। তড়িঘড়ি বাসায় ফিরে রক্ত দেখতে পাই। সিসিটিভি ফুটেজে অজ্ঞাত যুবকের গতিবিধি সন্দেহজনক।"
তার ভাই গোলাম হায়দার মজুমদার ঝন্টু বলেন, "আমার স্ত্রী ফোন করে জানায় বাসায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। দোকান থেকে দ্রুত বাসায় ফিরে দেখি, আমার ভাইয়ের বাসায় একজনকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।"
নিহতের পরিবারের দাবি:মাসুদার মেয়ে শাহেনা আক্তার বলেন, "আমার মাকে খুঁজে পাচ্ছি না বলে রাত সাড়ে ৯টায় ফোন আসে। এরপর খবর পাই, মাকে গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই নৃশংস হত্যার বিচার চাই।"
নিহতের ভাগ্নে কামাল উদ্দিন জানান, "আমার খালাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীকে চিহ্নিত করে ফাঁসি দেওয়া হোক।"
পুলিশের পদক্ষেপ:ফেনী মডেল থানার ওসি মর্ম সিংহ ত্রিপুরা জানান, "মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পিবিআই ও সিআইডি আলামত সংগ্রহ করেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা অজ্ঞাত যুবককে শনাক্তের চেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ খুঁজে বের করতে তদন্ত চলছে।"
পরবর্তী পদক্ষেপ:পুলিশ জানায়, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দ্রুত দোষীদের শনাক্ত করা হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাটি নিয়ে শঙ্কিত এবং দ্রুত সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।