প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২২, ০০:০০
সরকারি বহু দপ্তর আছে। সব দপ্তরের সব কর্তারা অফিস করেন দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের পাশে সব অফিসারকে তেমন একটা দেখা যায় না। নির্দিষ্ট দাপ্তরিক কাজের বাইরে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন বা সময়-অসময় সাধারণ মানুষের ফোন কিংবা সরাসরি অভিযোগের ভিত্তিতে সব কর্তা ছুটে চলেন না।
উপজেলা পর্যায়ের সরকারি শীর্ষ কর্মকর্তা হচ্ছেন ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা)। তিনি দাপ্তরিক কাজের বাইরে উপজেলার সকল মানুষের সকল সমস্যায় ঘটনাস্থলে পৌঁছা সম্ভব না বলে অনেকে মনে করেন। কিন্তু হাজীগঞ্জে সম্প্রতি যোগদানকারী ইউএনও রাশেদুল ইসলাম নিজের দপ্তরের হাজারো কাজের বাইরে প্রতিদিন গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ছুটে চলতে দেখা যায়। প্রতিদিন তিনি গ্রামের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা নিয়ে নিজের ফেসবুকে এ সংক্রান্ত বিষয়ে পোস্ট দিয়ে থাকেন। গত শনিবার এ রকম একটি পোস্ট নিয়ে উপজেলার সর্বত্র বাহবা পেতে দেখা গেছে। গ্রামীণ অবকাঠামোয় নির্মিত একটি রাস্তায় নিম্নমানের ইট বিছিয়ে বালি দিয়ে ঢেকে দেয়ার পরে তিনি নিজে উপস্থিত হয়ে সেই ইট সরিয়ে নতুন ইট দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে। এর আগে এই কর্মকর্তা মার্কেটের সামনের মাটি কেটে পানি নামার ড্রেন করেছেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতে গিয়ে জনতাকে লিচু কিনে খাইয়েছেন, সরকার দলীয় এক শীর্ষ নেতার হাসপাতাল সিলগালা করেছেন, হাজীগঞ্জ বাজারের প্রধান প্রধান রেস্টুরেন্টে অভিযান পরিচালনা করেছেন সাহসের সাথে, স্থানীয়দের ফোনে অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিদ্যালয়ের বাউন্ডারির নিম্নমানের কাজ ভেঙ্গে নতুন করে কাজ করতে বাধ্য করেছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে। এই ইউএনও’র কাজ নিয়ে হাজীগঞ্জের বহুজনে তাদের পেজে বাহবা দিতে আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে দেখা যায়। সর্বশেষ ইউএনও রাশেদুল ইসলাম গত শনিবার বিকেলে তাঁর নিজের ফেজবুক পেজে লিখেন এমন একটি ঘটনা, যা হবহু নিচে ছবিসহ তুলে ধরা হলো।
‘এ যেন ইঁদুর দৌড় খেলা..। ছুটির দুপুরে খবর এলো নিম্নমানের ভাঙা ইট দিয়ে রাস্তার কাজ হচ্ছে। সাথে সাথেই রওনা হলাম স্পটে। উপরে সুন্দর করে বালি বিছিয়ে রাখা, বুঝার কোনো উপায়ই নেই। বালি সরাতেই বের হয়ে এল আসল চিত্র..। তৎক্ষণাৎ পুরো রাস্তার সব ইট সরিয়ে নতুন করে আবার ইট বিছানোর নির্দেশ দেয়া হলো..। আমরা মানুষ হবো কবে!! (৮নং হাটিলা ইউনিয়ন; ২ জুলাই, ২০২২)’