প্রকাশ : ১০ জুন ২০২২, ০০:০০
টানা ক’দিনের ভ্যাপসা গরমের পর দেখা মিলেছে স্বস্তির বৃষ্টির। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন চাঁদপুরবাসী। বৃহস্পতিবার ৯ জুন বেলা ১টা নাগাদ হঠাৎ আকাশে দেখা যায় কালো মেঘ। এরপর শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি। চাঁদপুর শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে টানা দেড় ঘণ্টার বৃষ্টি, সঙ্গে ছিলো মেঘের গর্জনও। মুহূর্তের মধ্যে বৃষ্টির পানিতে তপ্ত রাজপথ ভিজে একাকার হয়। তবে বৃষ্টির কারণে প্রস্তুতি ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়া স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী, চাকুরিজীবীসহ নানা শ্রেণী-পেশার লোকজনকে কিছুটা বিপাকে পড়তে হয়েছে। ভিজে ভিজে কাউকে কাউকে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরতে দেখা গেছে। আকস্মিক এই বৃষ্টিতে শহরের লোকজন আটকা পড়ে, যার জন্যে অবস্থান নিতে হয়েছে আশেপাশের দোকানপাট, মার্কেট, বিপণী বিতান ও রেল স্টেশনে। অনেকে আবার ভিজতে ভিজতে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। ভারী বৃষ্টিপাতের দরুণ শহরে প্রধান প্রধান সড়কে পানি জমে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বাইতুল আমিন রেলওয়ে জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ, চিত্রলেখার মোড়, চাঁদপুর সরকারি কলেজ গেইট, ওয়ান মিনিটের পর প্রেসক্লাব সড়ক, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভেতরের সড়ক, শপথ চত্বর, মাদ্রাসা রোডসহ অন্য সড়কগুলোতে হাঁটু পানি জমে যায়। দুপুর আড়াইটার সময় বৃষ্টি কমে আসলে আটকা পড়া মানুষ আবার সড়কে বের হয়। এ সময় রাস্তার প্রতিটি মোড়ে তীব্র যানজট লেগে যায়। বৃষ্টি কমার সঙ্গে সঙ্গে স্কুল-কলেজ ছুটি হওয়ায় রাস্তায় শিক্ষার্থীদেরও ঢল নামে। বৃষ্টির পানিতে এবং শহরের একমাত্র লেকটিতে নেমে ছাত্ররা আনন্দের গোসলে মেতে উঠে।
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ু এখন সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। এর প্রভাবে চাঁদপুরসহ দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও হালকা আবার কোথাও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। ঝড়ো হাওয়ার কারণে নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, মৌসুমী বায়ু এখন সারা দেশের ওপরে অবস্থান করছে। তাই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কমণ্ডবেশি বৃষ্টি হচ্ছে। এই বায়ুর কারণে নদীবন্দরসহ উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এজন্যে নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বিহার থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং বরিশাল ও খুলনা বিভাগের দু’-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাধারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
তাপপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়, সাতক্ষীরা, যশোর ও পাবনা জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়, সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এদিকে আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।