রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ২৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   প্রাইভেটকারের ধাক্কায় বুয়েট শিক্ষার্থী নিহত: ডোপ টেস্টে ধরা পড়ল মাদকাসক্তি
  •   সাতক্ষীরায় ব্যবসায়ীর ২৩ লাখ টাকা ছিনতাই: স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ
  •   চাকা পাংচার হওয়ায় এনজিও কর্মকর্তার মৃত্যু
  •   বরগুনায় টিকটক নিয়ে পারিবারিক কলহ: স্ত্রীকে হত্যা, স্বামী আত্মহত্যার চেষ্টা
  •   মানব পাচারের চক্রের বিরুদ্ধে বিজিবির সফল অভিযান: কিশোরী উদ্ধার, তিন আটক

প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০১

আমরা যে উদ্দেশ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি, তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি

চাঁদপুর মুক্ত দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ মাস্টারের স্মৃতিচারণ

অনলাইন ডেস্ক
চাঁদপুর মুক্ত দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধা  আব্দুল হামিদ মাস্টারের স্মৃতিচারণ

১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর পাক হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে মুক্ত হয়েছিল। কিন্তু এর আগ থেকেই সশস্ত্র পাকবাহিনীকে নানা বুদ্ধিমত্তা ও কৌশলে পরাস্ত করতে শুরু করে মিত্রবাহিনী। যার ফলে পাকবাহিনী মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। ওই সময়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার দক্ষিণে মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্ব দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ মাস্টার। শনিবার (৭ ডিসেম্বর ২০২৪) সকালে চাঁদপুর মুক্ত দিবস নিয়ে কথা হয় এই বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথে। তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত। এক সময় রাজনীতিতে ছিলেন সক্রিয়। এখন শুধুমাত্র ইবাদত করেই সময় কাটান। বললেন, আগের মতো স্মরণ শক্তি নেই। কিছু সময় পূর্বে বলা কথাও ভুলে যান। তিনি ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর মুক্ত দিবস সম্পর্কে বলেন, ওই দিন সকালে আমি এবং আমার সহযোদ্ধা শহীদুল্লাহ ভুঁইয়া, হোসেন বেপারী বহরিয়া বাজারে ছিলাম। ঠিক ওই সময় পাকিস্তানি সেনাদের একটি জাহাজ মেঘনা নদী দিয়ে চাঁদপুরের দিকে যাচ্ছিল। তখন মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান জানান দিতে আমার হাতে থাকা গ্রেনেড ছুড়ি। তখন আওয়াজ হলে পাকবাহিনী পাল্টা গুলি ছুড়ে। তখন ওয়াপদা সংলগ্ন ওই স্থানে একটি গবাদি পশু এবং একটি কিশোর ছেলের মৃত্যু হয়। এরপর পাকিস্তানি বাহিনী তিন নদীর মোহনায় আসার পরে মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসর্মণ করে। এভাবেই ৮ ডিসেম্বর চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল মুক্ত হয়। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে আমি সাথে একটি গ্রেনেড রাখতাম। যদিও হানাদার বাহিনীর সাথে যুদ্ধ করার জন্যে এই গ্রেনেড কিছুই নয়। তারপরেও মনের মধ্যে সাহস যোগানোর জন্যে সাথে রাখতাম। ৯ মাসের এই যুদ্ধে অনেক ঘটনাই মনে দাগ কাটে। তবে আমাদের নিজ পরিবারের সাথে বড়ো একটি ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, ডিসেম্বর মাসেই বহরিয়া বাজারে আমার বড়ো ভাইয়ের ডাক্তারি চেম্বার ও আমাদের বাড়ির বসতঘর চাঁদপুর থেকে পাকবাহিনী গিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয়। আমার এই ভাইয়ের চেম্বারে অনেক গুণী লোকজন গিয়ে ওই সময়ে বসতেন এবং সময় কাটাতেন। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, আমরা যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে নিয়ে এই দেশ স্বাধীন করেছি, তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। মানুষের মধ্যে দেশপ্রেমের অভাব রয়েছে। বিগত ৫ আগস্টের পরে চাঁদপুরে অনেক ঘটনা ঘটেছে, যা আমি ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন করি না। আমি বহুদিন রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিলাম। নানাভাবে নিজ এলাকাসহ অসহায় মানুষের জন্যে কাজ করার চেষ্টা করেছি। প্রশাসন আহ্বান করলে এখনো দেশের স্বার্থে নানা কাজে গিয়ে সহযোগিতা করি। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ মাস্টার বর্তমানে চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার নিজ বাড়িতে বসবাস করেন। পুরাণবাজারে তাঁর নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। গ্রামের বাড়ি সাখুয়া অর্থাৎ বর্তমান লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের বহরিয়া। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর ওই ইউনিয়নে প্রশাসন কর্তৃক মনোনীত চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি চাঁদপুর জেলা শাখার উপদেষ্টা। এর পূর্বে তিনি সদর উপজেলা ও জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়