প্রকাশ : ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৬
কাটাখালী সেতুতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে পারাপার
নতুন সেতুর ডিজাইন হয়েছে, চলতি অর্থ বছরে কাজ শুরুর আশা : উপজেলা প্রকৌশলী
ফরিদগঞ্জের ডাকাতিয়া নদীর ওপর ৩২ বছর আগে নির্মিত একটি সেতুর বেহাল দশায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সেতুটির দুপাড়ের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শত শত শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ। জরাজীর্ণ সেতুটিতে বেশ কয়েক বছর আগে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর এখন নিরূপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হেঁটে পার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
সরেজমিনে জানা যায়, ফরিদগঞ্জ-রামপুর-হাইমচর সড়কের কাটাখালী এলাকায় উপজেলা সদরের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম সড়ক হিসেবে ডাকাতিয়া নদীর ওপর ১৯৯৩ সালে ২৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মিত হয়। তৎকালীন সময়ে শুধুমাত্র হালকা পরিবহন উপযোগী করে নির্মাণ করা এই সেতুটির দুপাড়ে পাকা সড়ক থাকার কারণে ইতোমধ্যে সেতুটি ফরিদগঞ্জ উপজেলার ক'টি ইউনিয়নের বাসিন্দা ও পার্শ্ববর্তী হাইমচর উপজেলার মানুষের যাতায়াতের জন্যেও গুরুপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দুদশক ধরে ভারী যানবাহনও চলাচল করেছিল সেতু দিয়ে। ফলে সেতুটির সিমেন্টের তৈরি পাটাতন ও দুপাশের রেলিং ধসে যায়। এতে এটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়ে যে কোনো মুহূর্তে এটি ধসে বড়ো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুটির অচলাবস্থার কারণে চলাচলের একদম অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের শত শত শিক্ষার্থী ও ডাকাতিয়া নদীর দুপাড়ের কয়েক হাজার পরিবারের সদস্যরা। বিকল্প কোনো যাতায়াতের পথ না থাকায় মরণফাঁদ জেনেও সেতু দিয়ে পার হচ্ছেন গ্রামবাসীসহ শিশু ও বৃদ্ধরা।
স্থানীয় বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন কবির জানান, এক সময় নৌকা দিয়ে ডাকাতিয়া পার হতাম আমরা দুপাড়ের মানুষ। ১৯৯৩ সালে সেতুটি নির্মিত হলে পার্শ্ববর্তী হাইমচর উপজেলার বাসিন্দারা, বেশ ক'টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও আশেপাশের ৪/৫ টি ইউনিয়নের প্রায় হাজার হাজার মানুষ সুবিধা গ্রহণ করে আসছিলো। মানুষের জীবনমান উন্নয়নও হয়েছে। কয়েক বছর আগে সেতুটির পাটাতন ধসে পড়ে ও রেলিং ভেঙ্গে যাওয়ার পর সংস্কারের জন্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টি কামনা করেও আশানুরূপ ফল পাইনি। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ভাঙ্গা সেতুর ওপর দিয়ে কোনোরকমে পার হতে হচ্ছে আমাদের।
সেতু দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী সাইম হোসেন সিয়াম, স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থী ইকবাল হোসেন, হৃদয় আহমেদসহ আরো অনেকে জানান, এক সময় সিএনজি দিয়ে যাতায়াত করে তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতো। বর্তমানে সেতুটি দিয়ে যানবাহন না চলার কারণে তাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাাসিন্দা শাহজাহান বলেন, সেতুটি মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কয়েক বছর ধরে শুনছি সেতুটি মেরামত করা হবে। কিন্তু মেরামত কবে হবে তা কেউই বলতে পারে না।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবরার আহমেদ বলেন, কাটাখালী এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর ওপর ওই সেতুটি পরিদর্শন করেছি। খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি সংস্কার করার মতো কোনো অবস্থা না থাকায় পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই নতুন সেতুর ডিজাইনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রাক্কলন কাজ সম্পন্ন হলেই টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে চলতি অর্থ বছরের মধ্যেই আমরা সেতুটির কাজ শুরু করতে পারবো।