প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২২, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে গোবর-কেঁচো দিয়ে তৈরি হচ্ছে জৈব সার
ধানসহ বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি, অন্যান্য ফসল উৎপাদন ও ফলন বাড়াতে রাসায়নিক সারের ওপর নির্ভরশীলতা ব্যাপক। অনেক সময় প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার বা কীটনাশক পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ে, সঙ্গে বাড়তি দাম তো আছেই। এমতাবস্থায় কৃষকদের কষ্ট লাঘবে এগিয়ে এসেছেন ফরিদগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা আঃ কাদের পাটওয়ারী। উপজেলার এ বাসিন্দা তার নিজ এলাকার পাটওয়ারী বাড়িতে গত সাত মাস আগে ‘মায়ের দোয়া’ নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন জৈব সার তৈরির এ কারখানা। গরুর গোবর ও কেঁচোর মলমূত্র, বিভিন্ন লতাপাতা ও খড় মিশিয়ে এ জৈব সার তৈরি করছেন তিনি। এ সার স্থানীয় কৃষকদের দৈনন্দিন কষ্ট নিরসনে সহায়ক হবে বলে আশাবাদী অন্য উদ্যোক্তারাও।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আঃ কাদের পাটওয়ারীর জৈব সার তৈরির ফার্মটি ধানুয়া পাটওয়ারী বাড়িতে তার জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত। ফার্মটিতে তৈরি হয়েছে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান, যেখানে কাজ করেন ৫ থেকে ৬ জন। সার তৈরির এমন উদ্যোগে আশার সঞ্চার হয়েছে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে।
উপজেলায় প্রথম কোনো জৈব সার উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে ওঠায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারাও। তারা মনে করেন, প্রয়োজনের সময় সার নিয়ে যে সঙ্কট দেখা যেতো, সেটা আর থাকবে না। এখানে কিছু মানুষের কর্মসংস্থানও তৈরি হয়েছে। চাহিদা অনুসারে পরিধি বাড়ালে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এখানে।
মায়ের দোয়া ফার্মের মালিক আঃ কাদির পাটওয়ারী বলেন, জৈব সার ব্যবহার উপযোগী কি না তা পরীক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পুরোদমে সার উৎপাদন করা হবে।
তিনি জানান, নিজেদের জমিতে এবং বাগানে ফার্মের উৎপাদিত সার প্রয়োগ করে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে।
আঃ কাদের আরো বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে স্থানীয় কৃষকরা সার নিয়ে প্রয়োগ করেছেন। আশানুরূপ ফলাফল পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। ফরিদগঞ্জ কৃষি অফিস থেকে এসে সারের নমুনা দেখেছেন এবং সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন। যে কোনো সময়ের মধ্যে তাদের কাছ থেকে ফলাফল পাবো। সরকার সুদৃষ্টি দিলে প্রকল্পটি কৃষক পর্যায়ে ভূমিকা রাখতে পারবে বলেও জানান তিনি।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাজেদুল ইসলাম জানান, কৃষক পর্যায়ে জৈব সারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ‘মায়ের দোয়া’ ফার্ম থেকে সার নিয়ে অনেক কৃষক উপকৃত হতে পারে।
তিনি বলেন, কৃষি কাজের জন্যে রাসায়নিক সার থেকে জৈব সারের উপকারিতা ও গুণাগুণ ভালো। এ সার উৎপাদন করতে খরচ কম। সরকারি অনুমোদন পেলে সার নিয়ে প্রতি বছর যে সঙ্কট দেখা দেয় তা এ জৈব সারের কারণে নিরসন হবে বলে তিনি মনে করেন।