প্রকাশ : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০
মতলবে আলু চাষে হাবিবুর রহমানের ভাগ্য বদল, সাফল্যের রহস্য কেঁচো সার
এ বছর জাপানি মিষ্টি আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা
বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ। কিন্তু প্রতিনিয়ত রাসায়নিক সারের ব্যাপক প্রয়োগের ফলে একদিকে যেমন বাড়ছে ফসল উৎপাদন খরচ, অপরদিকে কমছে মাটির উর্বরতা শক্তি। অতিমাত্রায় রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে ফসলে বিষক্রিয়া হচ্ছে, যা মানবদেহের জন্যে মারাত্মক ক্ষতিকর। সেজন্যেই জৈব কৃষি এখন সময়ের দাবি।
|আরো খবর
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার ৪নং নারায়ণপুর ইউনিয়নের বাড়ৈগাঁও গ্রামে ভার্মিকম্পোস্ট (কেঁচো সার) ব্যবহার করে চাষ হচ্ছে গোল আলু বারি-৪০ এবং জাপানি মিষ্টি আলু ওয়াকিনাওয়া জাপান। এ উদ্যোগ নিয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা মোঃ হাবিবুর রহমান। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ¯œাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরে চাকরির পেছনে না ঘুরে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে ২০১৫ সাল থেকে কৃষিকাজ শুরু করেন। তিনি ভার্মিকম্পোস্ট (কেঁচো সার) উৎপাদন, ব্যবহার, বিপণন, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে হাবিবুর রহমান ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে খুলনার বাঘেরহাটে কেঁচো সার সরবরাহ, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ ও উদ্যোক্তাদের কেঁচো খামার তৈরি করে দিচ্ছেন। তার প্রতিষ্ঠানের নাম এইসএস বন্ধু ভার্মি কম্পোস্ট। তার উদ্যোগে নিজ বাড়িতে খামার-১ এবং সাভারে খামার-২ পরিচালিত হয়। বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে তিনি পূর্বের চেয়ে সচ্ছল। তিনি বলেন, আমরা সাফল্যের রহস্য কেঁচো সার। কেঁচো সার ব্যবহার করলে ফসলের উৎপাদন বেশি হয়।
জানা যায়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের চাঁদপুর যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ২০২০ সালে তিন মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ (গবাদিপশু পালন, হাঁস-মুরগি পালন, মৎস্য চাষ, কৃষি ও প্রাথমিক চিকিৎসা) সম্পন্ন করে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে নিজেই কৃষি কাজে মাঠে নেমে পড়েন। সে বছরই তিনি ভার্মিকম্পোস্ট প্রয়োগ করে মালচিং পদ্ধতিতে টমেটো, গোল আলু ও মিষ্টি আলু চাষ করেন। এ প্রক্রিয়ায় ফসলের ফলন হয়েছে সুপার বাম্পার। গোল আলু প্রতি শতকে পেয়েছেন ৩.৫ মণ অর্থাৎ হেক্টর প্রতি ৩৫ টন, যা এই অঞ্চলের জন্যে অসাধারণ ফলন।
কৃষি উদ্যোক্তা মোঃ হাবিবুর রহমান ২০২১ সালের রবি মৌসুমে (বর্তমান) নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে ভার্মিকম্পোস্ট (কেঁচো সার) ব্যবহার করে গোল আলু ‘বারি-৪০’ এবং জাপানি মিষ্টি আলু ‘ওয়াকিনাওয়া জাপান’ চাষ করছেন। এগুলো কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মতলব দক্ষিণ হতে প্রাপ্ত কন্দাল ফসল প্রদর্শনী।
এসব বিষয়ে কৃষক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, আমি আধুনিক কৃষি নিয়েই কাজ করতে চাই। এতে একদিকে যেমন নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন হবে, অপরদিকে কমে যাবে উৎপাদন খরচ। কোনো না কোনোভাবে আমি দেশের কৃষিতে অবদান রাখতে চাই। এ বছর কন্দাল ফসল আলু ‘বারি-৪০’ এবং জাপানি মিষ্টি আলু ‘ওয়াকিনাওয়া জাপান’ চাষ করতে কন্দাল ফসলের প্রকল্প পরিচারক জনাব ড. মোখলেছুর রহমান স্যার আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
এ বছর ফসলের বাম্পার ফলন হবে বলে মনে করেন হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, বর্তমানের গাছের বাহ্যিক গঠন, রঙ দেখে মনে হচ্ছে এবারও সুপার বাম্পার ফলন হবে।