প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৫
আলুর বাম্পার ফলন নিয়ে শঙ্কায় কৃষকরা
নদী তীরবর্তী জেলা চাঁদপুর আলুসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে অন্যতম। এর মধ্যে প্রতি বছর কৃষকদের একটি বড়ো অংশ আলুর আবাদ করে আসছেন। তবে এ বছর বৃষ্টি হওয়ার কারণে বীজ রোপণের নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হয়ে যায়। একই সঙ্গে গত কয়েক সপ্তাহ ঘনকুয়াশার কারণে আলুর জমিতে ছত্রাক জাতীয় রোগ দেখা দিয়েছে। যেজন্যে আলুর ফলন কম এবং আলু সবশেষে বাজারে ওঠা নিয়ে শঙ্কা কৃষকদের।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে আলু উৎপাদনে চাঁদপুর শীর্ষ পাঁচটি জেলার মধ্যে একটি। এ জেলায় এ বছর আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০ হাজার ৯০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৩১০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চাইতে ৩৯০ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ কম হয়েছে। এর মধ্যে আলুর আবাদ বেশি হয় চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায়।
চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের নিজগাছতলা গ্রামের কৃষক কামাল ঢালী জানান, বৃষ্টির কারণে এ বছর জমিতে আলু আবাদ হয়েছে দেরিতে। এরপর এখন কুয়াশার কারণে আলু গাছের পাতায় রোগ দেখা দিয়েছে। গাছের পাতা সাদা হয়ে ধীরে ধীরে গাছ নুয়ে পড়ছে। কীটনাশক ব্যবহার করে অনেকের লাভ হয়নি।
তিনি আরো জানান, এ বছর আলুর দাম বেশি হওয়ার কারণে নিজগাছতলা মাঠে আলু আবাদী কৃষকের সংখ্যা বেড়েছে। তবে সার, বীজ ও কীটনাশক খরচ দিয়ে ভাল দাম না পাওয়া গেলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
আলু গাছে একই ধরনের রোগের কথা জানালেন সদর উপজেলার আশিকাটি ইউনিয়নের চাঁদখাঁর দোকান এলাকার কৃষক করিম মাতাব্বর। তিনি বলেন, এ বছর তাদের ৫০ শতাংশ জমিতে আলু রোপণ করা হয়। কিন্তু কুয়াশার কারণে আলুর গাছগুলো বড়ো হচ্ছে কম। আলুর ভাল ফলন নিয়ে এই কৃষক শঙ্কায় রয়েছেন। এরপর দেরিতে আলু উত্তোলন করলে দামও কম পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
চাঁদপুর জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান রুপম জানান, প্রতিবারের মতো এবারও জেলায় ১৩টি হিমাগারে ৮২ হাজার মেট্রিক টন আলু সংরক্ষণের ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়াও আমাদের ক'টি মডেল ঘর আছে, সেগুলোর মধ্যে কৃষকরা আলু সংরক্ষণ করতে পারবে।
চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সাইফুল হাসান আল-আমিন বলেন, দুটি ঘূর্ণিঝড় ও অতি বৃষ্টির কারণে সঠিক সময়ে কৃষকরা জমিতে আলু রোপণ করতে পারেনি। তাই আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। কৃষকদেরকে মাঠ পর্যায়ে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছি। এরপরও আমরা আকাঙ্ক্ষিত ফলন আশা করছি। এছাড়া বিগত বছরের মত আমরা জেলার চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলায় সরবরাহের প্রত্যাশা করছি।