রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ২৭ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

ইতিহাসে তাঁর ঠাঁই হোক যথার্থ মর্যাদায়

অনলাইন ডেস্ক
ইতিহাসে তাঁর ঠাঁই হোক যথার্থ মর্যাদায়

মতলব প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক আবুল কাশেম পাটোয়ারী (৫৭) ২৭ ডিসেম্বর সকাল পৌনে ১১টায় ঢাকার ক্যান্সার ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে স্ত্রী, ছেলে-মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন। মরহুমের লাশ ঢাকার মালিবাগে জানাজা শেষে সেখানেই দাফন করা হয়। তার নিজ গ্রামের বাড়ি মতলব উত্তর উপজেলার সুলতানাবাদ ইউনিয়নের টরকি গ্রামে। তিনি কর্মজীবনে দৈনিক বাংলার বাণীসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন।

আবুল কাশেম পাটোয়ারী ১৯৬৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর তৎকালীন মতলব উত্তর উপজেলার টরকি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এককালে তিনি ছিলেন তুখোড় ছাত্রনেতা। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালের ২৩ এপ্রিল থেকে সাংবাদিকতাকে বেছে নেন পেশা ও নেশা হিসেবে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকা, আঞ্চলিক পত্রিকা, সাহিত্য সাময়িকী সব ক্ষেত্রেই ছিল অবাধ বিচরণ, রেখেছেন কৃতিত্বের স্বাক্ষরও। গুণী এই সাংবাদিক স্বপ্ন দেখতেন মতলবে একটি প্রেসক্লাব গঠন করার। তিনি স্বপ্নবাজ তরুণদের পাশে দাঁড়িয়ে, পত্রিকায় সংবাদকর্মী হিসেবে আবেদন থেকে শুরু করে, সংবাদ সংগ্রহ, হাতে-কলমে সংবাদ লিখা, পোস্ট/ফ্যাক্স এ সকল কাজে বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে পাশে থেকে সবাইকে কার্ডধারী সাংবাদিক হতে সার্বিক সহযোগিতা করেন। ফলে তৈরি হয় একটি নিবেদিতপ্রাণ সংবাদকর্মী/লেখক গ্রুপ। পাশাপাশি এই গ্রুপকে কাজে লাগিয়ে তিনি মতলব থেকে অনিয়মিত সাময়িকী প্রকাশে ছিলেন অগ্রণী। পরবর্তীতে সভাপতি হিসেবেও নেতৃত্ব দেন মতলব প্রেসক্লাবের। তাঁর আন্তরিক চেষ্টায় আজকের প্রেসক্লাব কার্যালয়টি জেলা পরিষদ থেকে লীজ পায় (যদিও আবেদিত হয়েছিল আমির খসরুর স্বাক্ষরে)। এক সময় ঢাকায় পাড়ি জমান তিনি। সাংবাদিকতার পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষা বিস্তারের কাজকে পেশা হিসেবে বেছে নেন। জীবন সায়াহ্নে তিনি কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই বরেণ্য, গুণী ও প্রথিতযশা সাংবাদিকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছে মতলব প্রেসক্লাব ও নারায়ণপুর প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ। চাঁদপুর কণ্ঠ পরিবারও তাঁর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।

চোখের আড়াল তো মনের আড়াল। আর মৃত্যু তো অনেক বড় আড়াল। গানের কথা হচ্ছে, আজকে মরলে কালকে দুইদিন, পরের দিন কেউ কাঁদবে না। কুলখানি/শ্রাদ্ধের পর তো মৃত ব্যক্তি জীবিত মানুষগুলোর স্মৃতি থেকে ক্রমশ বিলীন হতে থাকে। আত্মজ-আত্মজা, স্বামী/স্ত্রীসহ রক্তের সম্পর্কীয় লোকজনও ক্রমশ ভুলে যায়। সেজন্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ মৃত ব্যক্তির স্মরণ হয় না বললেই চলে। স্মরণের আভরণে মরণকে যত্নে ঢেকে রাখতে চায় না অনেকে। খুবই নগণ্য সংখ্যক মৃত মানুষের স্মৃতি চর্চিত হয়। এই নগণ্যদের একজন হোক মতলব প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম পাটোয়ারী। কারণ, তিনি বৃহত্তর মতলবে প্রথম প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠায় এবং এটিকে টেকসই করতে আন্তরিক দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তাঁকে সে কারণে যথাযথভাবে ঠাঁই দিতে হবে ইতিহাসের পাতায়। তাঁকে নিয়ে মতলব প্রেসক্লাব বের করতে পারে কোনো স্মরণিকা, আয়োজন করতে পারে শোকসভা। এছাড়া তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মতলব প্রেসক্লাব কিংবা বৃহত্তর মতলবের আরো তিনটি প্রেসক্লাবও কিছু না কিছু করতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়