রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইউসুফ গাজী গ্রেফতার

প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

শুধু বাসা-বাড়িতে? সরকারি  হাসপাতালের সামনেও--
অনলাইন ডেস্ক

চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালের সামনে অবস্থিত চাঁদপুর রোটারী ভবন ২০১৪ সালে একতলা থেকে বহুতল করা হলে, এখানে ডেন্টাল ক্লিনিক ও ডাক্তার চেম্বার করার প্রস্তাব আসে। কিন্তু এই ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে যারা ডাক্তার, তারা সরকারি হাসপাতালের সামনে কোনো ক্লিনিক করা নৈতিকতা পরিপন্থী কাজ হবে বলে এই প্রস্তাব বাস্তবায়নে বিরত থাকতে অনুরোধ জানান। এই অনুরোধ রক্ষা করায় ‘গ্র্যান্ড হিলশা’ নামে চাঁদপুরের প্রথম অভিজাত হোটেল প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরই মধ্যে কেটে গেছে ৬-৭ বছর। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারি এই হাসপাতালের সামনে কতো কিছুই না হয়েছে! একের পর এক অত্যাধুনিক প্যাথলজি, ডাক্তারদের চেম্বার ইত্যাদি। যেসবে প্রতিনিয়ত সরকারি হাসপাতালের রোগী ও ডাক্তার এবং মেডিকেল কলেজের শিক্ষক বাগিয়ে নেয়া হয়। কথা হলো, এসব প্যাথলজি, ডাক্তার চেম্বার করার অনুমোদন কারা দেয়, কেন দেয়?

গুঞ্জন রয়েছে, সরকারি এই হাসপাতালটির সামনে হান্নান কমপ্লেক্সে সুপরিসর প্রাইভেট হাসপাতাল করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই গুঞ্জনের মধ্যেই গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠে খবর বেরিয়েছে, চাঁদপুর শহরে বাসা-বাড়িতে গড়ে উঠেছে প্রাইভেট হাসপাতাল।। অধিকাংশ হাসপাতালে ডিপ্লোমা চিকিৎসক দিয়ে দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে। এই খবরে সোহাঈদ খান জিয়া লিখেছেন, চাঁদপুর শহরে বাসা-বাড়িতে গড়ে উঠেছে প্রাইভেট হাসপাতাল। এসব হাসপাতালের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। বাসা-বাড়ির নিচে হাসপাতাল গড়ে তোলার নিয়ম না থাকলেও সে নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে আসছে হাসপাতাল মালিক পক্ষ। এ নিয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জনসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরও কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। চাঁদপুর শহরে ২৩টি প্রাইভেট হাসপাতাল রয়েছে। এর মধ্যে ৮/১০টি হাসপাতাল বাসা-বাড়িতে গড়ে উঠেছে। এমন সব হাসপাতাল আবাসিক এলাকায় হওয়ার নিয়ম না থাকলেও চাঁদপুরে তা নিয়মে পরিণত হয়েছে। তবুও কর্তৃপক্ষ এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। উপর্যুপরি আবাসিক এলাকায় নতুন কিছু হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চাঁদপুর শহরে প্রতিষ্ঠিত ২৩টি প্রাইভেট হাসপাতালের মধ্যে অধিকাংশ হাসপাতালের ডিউটি ডাক্তার ডিপ্লোমা কোর্স করা। প্রতিটি হাসপাতালের ডিউটি ডাক্তার এমবিবিএস পাস হওয়ার নিয়ম থাকলেও, সেখানেও অনিয়ম করে যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে রোগীরা সঠিক ও ভালো সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব হাসপাতালের অধিকাংশ দেখতে সুন্দর হলেও সেবার মানের দিকে পিছিয়ে রয়েছে। এ সকল অনিয়ম হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকার কারণে।

জেলা বিএমএ-এর সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মাহমুদুন নবী মাসুম বলেন, এ ব্যাপারে বিএমএ-এর পক্ষ থেকে সিভিল সার্জন ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হাসপাতালগুলো সরকারের নিয়মণ্ডকানুন মেনে চলবে এটাই স্বাভাবিক। একটা হাসপাতালে এমবিবিএস পাস ডিউটি ডাক্তার থাকার নিয়ম। অনেক হাসপাতালে ডিপ্লোমা পাস করা চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতালের দায়িত্ব পালন করানো হচ্ছে। আর এদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেয় না, যেটা দুঃখজনক। এর মধ্যেই আবাসিক এলাকায় কিছু নতুন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করার বিষয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাহাদাৎ হোসেন নেতিবাচক কিছু না বলে প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে বলেন, প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে এমবিবিএস ডাক্তার থাকা বাধ্যতামূলক এবং ২৪ ঘন্টাই এমবিবিএস ডাক্তার থাকতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের নজরদারি থাকবে।

চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন রোগীর ভিড় হয় অস্বাভাবিক বেশি। এতো রোগী থেকে প্রতিদিন কিছু রোগী বাগিয়ে নিতে পারলে কিংবা অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় রোগী জোগাড় করে কিছু প্রাইভেট হাসপাতাল ও প্যাথলজি ভালো চলতে পারাটা স্বাভাবিক। বস্তুত সে কারণে আগ্রহী ব্যক্তিরা উদ্যোক্তা সেজে প্যাথলজি ও ডাক্তার চেম্বার করছেন। সেটা শহরের বিভিন্ন স্থানে নিয়ম মেনে করলে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। তাই বলে সরকারি হাসপাতালের সামনে? অবশ্য ইচ্ছায়/ অনিচ্ছায়/ চাপের মুখে কিংবা প্রকাশ্য-গোপন সমঝোতায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সরকারি হাসপাতালের সামনে প্যাথলজি ও ডাক্তার চেম্বার করার অনুমতি দিতে পারে। রীতি সম্মত না হলেও বাসা-বাড়ির নিচে প্যাথলজি, ডাক্তার চেম্বার ও হাসপাতাল করার অনুমতিও দিয়ে দিচ্ছে কিংবা অনুমতি ছাড়াই সেগুলো চলছে। এক্ষেত্রে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও প্রতিকার নেই বললেই চলে। তাই বলে শেষ পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালের সামনেও হবে প্রাইভেট হাসপাতাল?

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়