প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

গতকাল বৃহস্পতিবার চাঁদপুর কণ্ঠে ‘মতলবে চিকিৎসকের গাফলতিতে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ ॥ তদন্ত কমিটি গঠনের আশ্বাস’ শিরোনামের সংবাদে রেদওয়ান আহমেদ জাকির লিখেছেন, মতলব দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ রাজীব কিশোর বণিকের গাফলতিতে শিশু মিথিলা (৯)-এর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তিনি অফিস সময়ে প্রাইভেটে রোগী দেখার ফলে এ ঘটনাটি ঘটেছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে সকাল ১১টায় রোগী দেখার পরে রাত সাড়ে ১০টায় মতলব সরকারি হাসপাতালে ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মিথিলা মতলব উত্তর উপজেলার ইসলামাবাদ গ্রামের কামাল শিকদারের মেয়ে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, জ্বর নিয়ে সকাল ১০টায় অ্যাপেলো ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারে মিথিলার স্বজনরা তাকে নিয়ে আসে। সাড়ে ১০টায় অফিস সময় ছেড়ে ডাঃ রাজীব কিশোর বণিক আসেন প্রাইভেট চেম্বারে। ওই সময় রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়ে প্রেসক্রিপশন করে ঔষধ দিয়ে যান তিনি এবং ৭দিন পর দেখা করতে বলেন। রাতে রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন রোগীর স্বজনরা। পরে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রোগীর শরীরে প্রচণ্ড জ্বর থাকার পরও রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কথা বলেন নি ডাঃ রাজীব কিশোর বণিক। ভর্তি হলে হয়তো রোগীর এ অবস্থা হতো না।
জনৈক এলাকাবাসী জানায়, ডাঃ রাজীব কিশোর বণিক অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টারের সাথে শেয়ার হোল্ডার হিসেবে রয়েছেন। অফিস সময়ে তিনি এখানে চেম্বার করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দূর-দূরান্ত থেকে রোগী এসে তাকে অফিসে পায় না। এতে সাধারণ রোগীদের ভোগান্তি হচ্ছে। ডাঃ রাজীব কিশোর বণিক জানান, রোগী আসলে তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয়া হয়েছে। সবকিছু দেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে রোগীর স্বজনরা রাতে আমাকে ফোন দিয়েছেন। আমি তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মুহিবুল্লাহ জানান, এ বিষয়ে জেনেছি। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। দোষী হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরএমও ডাঃ রাজীব কিশোর বণিকই শুধু নয়, বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত কিছু চিকিৎসক তাদের অফিস সময়ে নিকটবর্তী ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা প্রাইভেট ক্লিনিকে এসে তাদের চেম্বারে রোগী দেখেন। খোদ চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সামনে নিউ ঢাকা ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই হাসপাতালের ডাঃ পীযূষ সাহা ও ডাঃ নাসিমা পারভীনসহ ক’জন চিকিৎসক অফিস সময়ে এসে প্রাইভেট চেম্বার করেন। অথচ তাদের সরকারি হাসপাতালের চেম্বারের সামনে ভিড় করা চিকিৎসাপ্রত্যাশী রোগীদের চলে হাহাকার। সেজন্যে বলছি, জেলা/উপজেলা পর্যায়ে সরকারি হাসপাতাল সংলগ্ন ও নিকটবর্তী স্থানে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা প্রাইভেট ক্লিনিক স্থাপনে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক লাইসেন্স প্রদান কি সঠিক, যেখানে সরকারি ডাক্তার ও সরকারি হাসপাতালের রোগীদের বাগিয়ে নেয়া সহজ?