প্রকাশ : ০৫ জুলাই ২০২৩, ০০:০০

গতকাল চাঁদপুর কণ্ঠের তৃতীয় পৃষ্ঠায় প্রকাশিত এক সংবাদে মিজানুর রহমান লিখেছেন, রাজধানীর সদরঘাটে ঢাকা-চাঁদপুর রুটের এমভি ময়ূর-৭ লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৩০ জুন) সকাল ১১টায় আগুন লাগার এ ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ফায়ার সার্ভিসের ১৩ ইউনিটের চেষ্টায় দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কেবিনের অংশসহ লঞ্চের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ লঞ্চটি চাঁদপুর-ঢাকা রুটে নিয়মিত চলাচল করে আসছিল। আগুন লাগার সময় লঞ্চটি সদরঘাটে বাঁধা ছিল। ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার লিমা খানম বলেন, সদরঘাটে ময়ূর-৭ নামক লঞ্চে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে ১১টা ৫ মিনিটে প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করে। তারপর মোট ১৩টি ইউনিট কাজ করেছে। নৌ পুলিশের সদরঘাট থানার ডিউটি অফিসার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ধনঞ্জয় বলেন, লঞ্চটি ঘাটে সকাল থেকে ভিড়ানো ছিলো। আগুন লাগার সময় লঞ্চটি যাত্রীশূন্য ছিল। কোনো হতাহতের খবর আমরা পাইনি।
বলা দরকার যে, চাঁদপুর-ঢাকা নৌরুটে এম. ভি. ময়ূর-৭ লঞ্চটি যাত্রীপ্রিয়তায় ঋদ্ধ একটি সুপরিসর নৌযান। এই রুটে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে তথা সর্বোত্তম যাত্রীসেবা প্রদান করে ময়ূর-৭ লঞ্চের মালিক নৌপথে স্বস্তিপূর্ণ ও নিরাপদ ভ্রমণের ব্যাপারে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। অথচ দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে লঞ্চটিতেই ঘটেছে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। এ ঘটনায় লঞ্চের মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন যেমন, তেমনি লঞ্চটিতে দীর্ঘদিন ধরে চলাচলকারী যাত্রীরা হয়েছেন উদ্বিগ্ন। অনেক যাত্রী শোকরিয়া আদায় করে বলেছেন, মহান আল্লাহ কতোটা দয়াময় যে, তিনি ময়ূর-৭ লঞ্চটিকে যাত্রী নিয়ে চলাচলরত অবস্থায় অগ্নিকাণ্ডের শিকার করেন নি। যদি করতেন, তাহলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে কিংবা ভয়ে নদীতে লাফিয়ে পড়ে কতো যাত্রী যে হতাহত হতেন, সেটা ভাবলেও শরীর শিউরে উঠে। আর অভিব্যক্তি হয় এমন-- সত্যিই আল্লাহ কী বাঁচানোটাই না বাঁচিয়েছেন!
আগুনের প্রধান শত্রু পানি। সেই পানিতে চলাচলরত অবস্থায় কোনো নৌযানে আগুন লাগলে সে আগুনে পানি ঢালার এবং বিপন্ন ব্যক্তির বাঁচার সহজ সুযোগ থাকে না। কেউ বাঁচার আশায় কিংবা চেষ্টায় নদীতে/ সাগরে লাফ দেয়ার বিকল্প সাধারণত খুঁজে পায় না। এ সময় লাইফ জ্যাকেট বা বয়া খোঁজার মানসিকতা থাকে না অনেক যাত্রীর। দিনের বেলা লাফিয়ে পড়া যাত্রীকে অন্য নৌযানের মাধ্যমে উদ্ধার সম্ভব হলেও, রাতে সেই উদ্ধার হয়ে যায় অনেকটাই অসম্ভব। যে কারণে এমন যাত্রীর মৃত্যুই হয় নিশ্চিত। এমন চিন্তা বা উদ্বেগের আলোকে বলতে হয়, যাত্রীবাহী নৌযানগুলোতে আগুনের ঝুঁকি এড়াতে কিংবা আগুন থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সকলকে খুবই গুরুত্বের সাথে ভাবতে হবে। কারণ, এটা ভাবার অবকাশ নেই যে, আল্লাহ সবসময়ই অনেক বড়ো বাঁচানোটা বাঁচিয়ে দেবেন।