প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৩, ০০:০০
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মিলন মাহমুদ, বিপিএম (বার) ও তাঁর সহধর্মিণী ডাঃ আফসানা শর্মী ২৪ জুন বিকেলে সরকারি শিশু পরিবার, চাঁদপুরে যান এবং শিশুদের মাঝে নতুন পোশাক উপহার দেন। এ সময় সরকারি শিশু পরিবারের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান এবং জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রজত শুভ্র সরকার উপস্থিত ছিলেন। এটি চাঁদপুর কণ্ঠে গতকাল প্রকাশিত ছোট্ট একটি সংবাদ। এই শিশু পরিবারকে নিয়ে প্রায়শই বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশিত হয়। ক'দিন আগে জেলা প্রশাসক মহোদয় শিশু পরিবারে গিয়ে এককালীন অনুদান ও বৃত্তির অর্থ প্রদান করেছেন এবং বিদ্যমান কমিটির সভা করে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গেলো সপ্তাহে চাঁদপুর কণ্ঠের ‘সংস্কৃতি অঙ্গন’ পাতায় শিশু পরিবারে সংস্কৃতি চর্চার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। এখানকার নিবাসী এতিম শিশুরা নাচণ্ডগান করতে পারছে জেলা শিল্পকলা একাডেমীর প্রশিক্ষকের কারণে। তাদেরকে শেখানো হচ্ছে কবিতাবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কনও। চাঁদপুর কণ্ঠের ‘ক্রীড়াকণ্ঠে’ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহযোগিতায় বাবুরহাট শিশু পরিবারে ফুটবল প্রশিক্ষক দিচ্ছে ফুটবল প্রশিক্ষণ। যার ফলে চাঁদপুর জেলার নির্দিষ্ট বয়সভিত্তিক বালিকা ফুটবল দলে এখানকার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নিবাসী নিজেদের যোগ্যতা ও কৃতিত্বনির্ভর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করেছে।
গেলো রমজানে স্থানীয় সাংসদ, শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি গিয়েছিলেন শিশু পরিবারে। তিনি এক শিশুর গজল শুনে নিজের আবেগ ও অশ্রু সংবরণ করতে পারেন নি। তিনি সবসময় এতিম শিশুদের পাশে বিভিন্নভাবে রয়েছেন তাঁর সংবেদনশীল মনের তাগিদে। গেলো ঈদুল ফিতরে জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটোয়ারী দুলাল শিশু পরিবারের নিবাসীদের দিয়েছেন ঈদ-সালামি। তার মতো অন্য কেউ অন্যভাবেও করেছেন সহায়তা। নানা উপলক্ষে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণও ছুটে যান শিশু পরিবারে। যার ফলে শিশু পরিবার এখন গণমাধ্যমে ছোট-বড় সংবাদের উপজীব্যে পরিণত হয়েছে।
একসময়ের বাবুরহাট এতিমখানার আদুরে নাম এখন সরকারি শিশু পরিবার। নাম পরিবর্তনের সাথে সাথে এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টিয়েছে বলে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে। চাঁদপুরে পাঁচ বছর আগে এই প্রতিষ্ঠানটির শিশু নিবাসীদের প্রতি দরদী আচরণের নানরূপী প্রকাশ ঘটান চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওচমান গনি পাটোয়ারী। তারপর গণমাধ্যমের কল্যাণে শিশু পরিবার চলে আসে আলোচনার টেবিলে।
সাবেক বাবুরহাট এতিমখানা ও বর্তমান সরকারি শিশু পরিবার একসময় ছিলো যতো খারাপ সংবাদের উৎস। এখানকার জনবল সঙ্কট সহ নানা সমস্যা, নিবাসীদের খাবারের নিম্নমান, শিশুদের প্রতি কর্তৃপক্ষীয় নানা নিপীড়ন, অবহেলার কতো সংবাদ যে চাঁদপুর কণ্ঠ সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কতোবার ছাপা হয়েছে তার তালিকা বা ফিরিস্তি তুলে ধরা কষ্টকরই বটে। আজ একই প্রতিষ্ঠান নিয়ে ভালো ভালো অনেক সংবাদ প্রায়শই চোখে পড়ছে, যেটা শুধু ইতিবাচক নয়, আশাব্যঞ্জকও। এখানকার নিবাসী এতিমদের প্রতি নানাজনের পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি দরদমাখা দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণে সরকারের সমাজসেবা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ দায়িত্বপালনে নিশ্চিতভাবে পূর্বের চেয়ে অনেক বেশি হাল্কা ও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন বলে আমাদের ধারণা। আমরা বাবুরহাট শিশু পরিবারের নিবাসীদের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ এবং প্রতিষ্ঠানটির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।