প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৩, ০০:০০

আমাদের সমাজে জুয়ায় নেশাগ্রস্ত থাকে সমাজের সব স্তরের কিছু বিপথগামী মানুষ। কিছু মানুষ ভাগ্যগুণে জুয়াতে সফল হয়ে জুয়াকেই পেশা হিসেবে নেয়। আবার কিছু লোক খবরদারি করার সকল লোকজনকে ম্যানেজ করে জুয়ার আসরের আয়োজক হয়ে নিজে ভালোই চলে, আর কতো মানুষকে যে পথে বসায় তার হিসাব পাওয়া কঠিন। চাঁদপুর শহর সহ পুরো জেলা জুড়ে হাতে গোণা কিছু কুখ্যাত লোক আছে, যারা বিভিন্ন মেলা-টেলায় কদরও পায়। এতে তারা আশ্রয়-প্রশ্রয় বেশ ভালোই অনুভব করে। এদেরকে যারা চেনার তারা ভালোভাবেই চিনে, কিন্তু শায়েস্তা করার ব্যাপারে থাকে প্রচ্ছন্ন-অপ্রচ্ছন্ন অনীহা। এরা জানে কোথায় জুয়ার আয়োজন করলে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকা যায়। এমন একটি স্থানই হচ্ছে চরমেয়াশা।
বৃহস্পতিবার চাঁদপুর কণ্ঠে ‘জুয়ায় নিরাপদ চরমেয়াশা’ শিরোনামের সংবাদে লিখা হয়েছে, চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের চরমেয়াশা গ্রামে জমজমাট জুয়ার আসর চলে আসছে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এক শ্রেণির পেশাদার জুয়াড়ি এখানে জুয়া খেলে থাকে। এ জুয়ার আসরে প্রতিদিন লাখ টাকার উপরে জুয়া খেলা হয়। কোরবান ও তার সাথে ক’জন মিলে নদীর পাড়ে মন্দিরের নিকটে জুয়ার আসর বসায়। তারা প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলে কথা বলতে সাহস পায় না। কয়েক বছর ধরে এ গ্রামে জুয়ার আসর চলে আসছে। গ্রামের চারপাশে নদী হওয়ায় রাতের বেলায় তো দূরে থাক, দিনের বেলায়ও প্রশাসনের কেউ সেখানে না যাওয়ায় তারা এ জমজমাট জুয়ার আসর বসিয়ে থাকে। এ গ্রামটা এখন জুয়ার জন্য নিরাপদ স্থান। জুয়াড়িরা সন্ধ্যার পর দক্ষিণ মৈশাদী দিয়ে নৌকায় পার হয়ে চরমেয়াশা গ্রামে চলে আসে জুয়া খেলার জন্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে জানান, কয়েক বছর ধরে কোরবানের নেতৃত্বে প্রতিদিন সন্ধ্যার পরে জুয়ার আসর চলে আসছে। বিভিন্ন স্থান থেকে পেশাদার জুয়াড়িরা এখানে জুয়া খেলতে আসে। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয়। এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে কোরবানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি জুয়ার আসর বসাই না।
এটা কোরবানের আত্মপক্ষ সমর্থনমূলক গতানুগতিক কথা। এই কোরবান জুয়ার আসর বসিয়ে কতো মানুষের মানুষ্যত্বকে যে কোরবান করে সংসারবিমুখ করেছে, সেটা সরেজমিনে ঘটনাস্থলে না গেলে আন্দাজ করা কঠিন। চরমেয়াশায় পুলিশের পক্ষে যদি যাওয়াটা এতো কঠিন (!) হয়ে যায়, তাহলে কোরবানকে থানায় ডেকে এনে সতর্ক করে দেয়া উচিত। চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ যদি লোকবল সঙ্কটে চরমেয়াশা যেতে কষ্ট অনুভব করে, তাহলে নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের সহযোগিতা চাইতে পারে। এমন সহযোগিতা নিয়ে হলেও চরমেয়াশাকে করতে হবে জুয়ার জন্যে অনিরাপদ। অন্যথায় চরমেয়াশার জুয়ার আসরে জুয়াড়ির সংখ্যা বাড়তেই থাকবে, যেটা আশেপাশের গ্রামগুলোতে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করবে এবং অপরাধও বাড়িয়ে তুলবে বলে আমরা মনে করি।