বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ২১ মে ২০২২, ০০:০০

ফ্রিফায়ারে আসক্তি এবং আত্মহত্যা উদ্বেগজনক
অনলাইন ডেস্ক

চাঁদপুর জেলা তো বটেই, বলা যায় বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোর অন্যতম হচ্ছে হাইমচরের চরভৈরবী ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের একটি গ্রাম হচ্ছে হাইমচরের পাড়াবগুলা। এ গ্রামের পেশাদার জেলে দেলোয়ার গাজীর ৮ম শ্রেণিপড়ুয়া কিশোর পুত্র জনি গাজী (১৫) মোবাইলের ফ্রিফায়ার গেমে আসক্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার ভোরে আত্মহত্যা করেছে বলে চাঁদপুর কণ্ঠসহ বিভিন্ন পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে। এ খবরে লিখা হয়, জনি গাজী মোবাইল ফোনে আসক্ত ছিলো। ফ্রিফায়ার গেম খেলতে খেলতে তার মাথা নষ্ট হয়ে যায়। গেম খেলার নেশায় সে ঠিকমত স্কুলে যেতো না। তার বাবা তাকে এই গেম খেলতে নিষেধ করেন। সেজন্যে হয়তো রাগে-ক্ষোভে সে আত্মহত্যা করেছে বলে স্থানীয়দের ধারণা। হাইমচর থানা পুলিশ কিশোরটির লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে চাঁদপুর মর্গে পাঠিয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ান্তরে ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা যাবে, সে কী কারণে আত্মহত্যা করেছে, না তাকে হত্যা করে কেউ গাছের ডালে ঝুলিয়ে রেখেছে। তবে তার মা জানিয়েছে, সে খুব রাগী ছিলো। কোনো কিছু বললেই রেগে যেতো। কথা একেবারে কম বলতো। মাথায়ও ছিলো সমস্যা। সেজন্যে সে আত্মহত্যা করতে পারে। পুলিশও প্রাথমিকভাবে এমন ধারণা করছে।

হাইমচরের জনি গাজীর মতো এ রকম কতো কিশোর যে সারাদেশে ফ্রিফায়ার গেমে আসক্ত সে সম্পর্কে ধারণা করাটা খুব কঠিন কাজ নয়। এই গেমে জনি গাজীর আসক্তিহেতু আত্মহত্যার ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এই ছড়িয়ে পড়াটা স্বাভাবিক। কেননা চারপাশে এমন আসক্তি সচরাচর নজরে পড়ছে।

ফ্রিফায়ার গেম সম্পর্কে জানা যায়, এটি একটি ব্যাটল রয়্যাল গেম। অর্থাৎ যুদ্ধক্ষেত্র গেম। যুদ্ধক্ষেত্রে যেমন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত যে টিকে থাকে, সে-ই জয়ী হয়। তেমনি এ গেমেও। সেজন্যে ঘন্টার পর ঘন্টা এ গেমে থেকে অনেকের আসক্তি তৈরি হয়। বিজ্ঞানীদের দ্বারা এটি এখন প্রমাণিত সত্যও। তারা বলেছেন, মাদকদ্রব্যেই কেবল মানুষ আসক্ত হয় না, অনলাইন গেমেও হতে পারে। যেখান থেকে ফিরে আসাটা অনেক কষ্টকর। ফ্রিফায়ার খেলার কারণে মস্তিষ্কে বিরূপ প্রভাব পড়ে। এছাড়া চোখে সমস্যা, হাতের কবজিতে ব্যথা, পিঠের পেছন দিকের হাড়ে ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা স্থায়ী রূপ নিতে পারে। অনেকে এ গেম খেলতে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বাবা/মা’র অবাধ্যই শুধু হয় না, তাদেরকে মেরে ফেলতেও উদ্ধত হয়।

ফ্রিফায়ার গেমটি আনুষ্ঠানিক প্রবর্তনের তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৭। চীনা বংশোদ্ভুত বর্তমান সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা ফরেস্ট লি ফ্রিফায়ারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং গ্যারিনা কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ পাস করা চল্লিশোর্ধ্ব এ ব্যক্তির বাজারজাত করা এ গেমটি গত সাড়ে চার বছর ধরে সারাবিশে^র কোটি কোটি কিশোর-তরুণ-যুবকের জীবনের অযুত সম্ভাবনাই শুধু ধ্বংস করছে না, পারিবারিক বিশৃঙ্খলা বৃদ্ধি, অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধিসহ আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটাচ্ছে। অতএব এ গেমের বিস্তর প্রতিরোধের বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে ভাবতে হবে সকলকে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়