প্রকাশ : ১৬ মার্চ ২০২৫, ১১:১৫
খোশ আমদেদ মাহে রমজান
পাহাড়সম পাপ করেও আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হওয়া যাবে না

পরম করুণাময় রাব্বুল আলামিনের নিরানব্বই গুণবাচক নামের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাহমান, রাহীম। অসীম দয়ালু এবং পরম দয়াবান। আল্লাহর দয়ার কোনো সীমাপরিসীমা নাই। বান্দার প্রতি যে মহান আল্লাহ কতটা দয়াবান তা এই পার্থিব জীবনেই বুঝা যায়। সে বান্দা এবার যেমনই হোক, যে ধর্মেরই হোক। মহান স্রষ্টা, মহান প্রতিপালক সকলকে লালন-পালন করেন। তিনি সৃষ্টি জগতের রব।
মানুষ কতই না নাফরমানি করে! স্রষ্টার অবাধ্য হচ্ছে! রবকে ভুলে গিয়ে তাগুতি শক্তির পূজা করে, অনুসরণ করে। সকল ক্ষমতার উৎস রাব্বুল আলামিনকে বাদ দিয়ে মানুষকে ক্ষমতার উৎস ভাবে। মানুষ মনুষ্যত্ব হারিয়ে হায়ওয়ানিয়তে (পশুত্ব) রূপ নেয়। রবের এতো এতো অবাধ্য এবং নাফরমানির পরও প্রভু তাঁর আদর এবং মহব্বতের বান্দাদের সে পরিমাণ শাস্তি দেননা। আলো, বাতাস, বৃষ্টি, গাছপালা, তরুলতা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখছেন। নদী, সাগর, মহাসাগর, পাহাড়-পর্বত, বন, চন্দ্র, সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র আসমান-জমিন যা কিছু সৃষ্টি জগতের মধ্যে, সবই তো রাব্বুল আলামিন মানুষের জন্য সৃষ্টি করেছেন। যা আল্লাহ পাক সূরা আর-রাহমানের মধ্যে উল্লেখ করেছেন- তোমরা তোমাদের রবের কোন্ কোন্ নেয়ামতকে অস্বীকার করবে!?
রাব্বুল আলামিনের পরিচয় এতোভাবে জানার পরও মানুষ তাঁর সাথে নাফরমানি করে, তাঁর অবাধ্য হয়, গুনাহ্-পাপাচারে লিপ্ত হয়। কুপ্রবৃত্তির তাড়নায় পড়ে এবং শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে মানুষ অন্যায় অপরাধ করে। পাহাড়সম অপরাধ করে। এসব অপরাধীকে মহান রাব্বুল আলামিন তাঁর করুণার আঁধার হয়ে বান্দাদের আশ্বাসের বাণী শোনাচ্ছেন, তাঁর রহমতের হাতছানি দিয়ে ডাকছেন- হে আমার মহব্বতের বান্দারা! তোমরা আমার রহমত থেকে নিরাশ হইও না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের সকল গুনাহ্ ক্ষমা করে দিবেন, নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান।
কোরআন শরীফের এই আয়াতের অর্থর মর্মার্থ এটাই- বান্দা তুমি অভিশপ্ত শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে গুনাহ্ করে ফেলেছ, পাহাড়সম গুনাহ্ করেছ! কিন্তু তুমি হতাশ হইও না। তোমার গুনাহ্-পাপের তো একটা সীমা আছে। কিন্তু আমার রহমতের কোনো সীমা নেই, অসীম। তাই তুমি পাহাড়সম গুনাহের কারণে হতাশ-নিরাশ না হয়ে গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হয়ে খালেছ তওবা করে আমার কাছে ক্ষমা চাও। আমি রাহমানুর রাহীম তোমাকে ক্ষমা করে দেবো।
কোরআনের অন্য আয়াতে আল্লাহ পাক বলেছেন- আমার বান্দারা তোমরা যখন নিজের উপর জুলুম করবে অর্থাৎ গুনাহ্ করবে, পাপাচারে লিপ্ত হয়ে যাবে, তখন তোমরা আমার পেয়ারা মাহবুব নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এঁর কাছে চলে আসো, তাঁর উছিলা নিয়ে আমার কাছে ক্ষমা চাও। আর আমার রাসুল যদি তোমাদের জন্য আমার কাছে ক্ষমা চায়, গুনাহ্ মাপের জন্য সুপারিশ করে, তাহলে তোমরা আল্লাহকে তওবা কবুলকারী এবং দয়ালু হিসেবে পাবে।
সুতরাং রাব্বুল আলামিনই ফয়সালা দিয়ে দিয়েছেন- গুনাহ্ পাপ থেকে মুক্তি পেতে হলে আমার নবীর মাধ্যম ছাড়া কোনো উপায় নেই। তাই সকল কিছুতেই আল্লাহর ক্ষমা এবং রহমত পেতে হলে পেয়ারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামার দয়া এবং সুপারিশ লাগবে। এর বিকল্প কিছু নেই।