প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:৩৫
অ্যাম্বুলেন্সের ঝাঁকুনিতে ফিরল প্রাণ: মহারাষ্ট্রের বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কাহিনি
মৃত্যুর কোলে থেকে ফিরে এলেন!
কোলহাপুর, মহারাষ্ট্র: একটি স্পিডব্রেকার বদলে দিল এক পরিবারের শোকের দিনকে জীবনের জয়ে। ৬৫ বছর বয়সী পানদুরাং উল্পের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এমনই এক অভাবনীয় ঘটনার সাক্ষী হল ভারতের কোলহাপুর। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত ঘোষণা করা এই বৃদ্ধ রীতিমতো মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন, তাও একটি অ্যাম্বুলেন্সের ঝাঁকুনির সৌজন্যে।
অসুস্থতা থেকে ‘মৃত্যু’
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পানদুরাং উল্পে প্রতিদিনের মতো হাঁটতে বেরিয়ে ফিরে এসে চা খাচ্ছিলেন। হঠাৎই তিনি বমি করতে শুরু করেন এবং কিছুক্ষণের মধ্যে জ্ঞান হারান। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শেষযাত্রার আয়োজন ও অলৌকিক ঘটনা
মৃতদেহটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্যও প্রস্তুতি চলছিল। এমনকি আত্মীয়স্বজন শেষযাত্রার আয়োজনেও হাত লাগিয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম খেলা! রাস্তায় একটি স্পিডব্রেকার পার হওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্সটি হঠাৎ ঝাঁকুনি খায়।
এই ঝাঁকুনির পর পরিবারের সদস্যরা লক্ষ্য করেন, মৃত ঘোষিত বৃদ্ধের হাতের আঙুল নড়ছে! সবাই হতবাক হয়ে দ্রুত তাকে আরেক হাসপাতালে নিয়ে যান।
প্রাণ ফিরে পাওয়া ও চিকিৎসা
নতুন হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, তিনি বেঁচে আছেন। হার্টের সমস্যা নিরাময়ে তাকে দুই সপ্তাহ ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয় এবং একটি সফল অস্ত্রোপচারও করা হয়। সবশেষে সুস্থ হয়ে নিজেই হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি ফেরেন পানদুরাং।
প্রশ্নবিদ্ধ চিকিৎসা ও নীরব হাসপাতাল
যে হাসপাতাল থেকে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল, তাদের পক্ষ থেকে এখনও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ এবং প্রশ্ন দানা বেঁধেছে। চিকিৎসার গাফিলতির কারণে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, সেই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর দাবি উঠেছে।
পানদুরাং উল্পের এই ঘটনা শুধুই এক অলৌকিক কাহিনি নয়, এটি চিকিৎসা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা ও গাফিলতির এক গভীর উদাহরণ। তবে, তার বেঁচে ফেরাটা যেন জীবনের প্রতি নতুন করে বিশ্বাস এনে দেয় সবার মনে।