প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১৮:১১
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে
চাঁদপুরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও সরকার বিরোধী শ্লোগান
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে চাঁদপুরেও উত্তেজনা ও উত্তপ্ত পরিস্থিতি থামছে না। এমন অবস্থায় শনিবার ৩ আগস্ট সকালে চাঁদপুর শহর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
|আরো খবর
এদিন বেলা এগারোটার দিকে তাঁরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
‘সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ ও নয় দফা’ দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ডাকা হয় এই বিক্ষোভ কর্মসূচি।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে লাঠি সোটা হাতে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে তারা। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কয়েকশত শিক্ষার্থী শহরের বাসস্ট্যান্ড থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে স্টেডিয়াম রোড, মিশন রোড, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, হাজী মহসীন রোড ও আব্দুল করিম পাটওয়ারী সড়ক হয়ে পুন:রায় একই স্থানে এসে কর্মসূচি শেষ করেন।
এ সময় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সতর্ক ও তৎপর ছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলের সামনে ও পিছনে নিরাপত্তা দিয়ে শান্তিপূর্ন কর্মসূচি পালনে সহযোগিতায় রাজপথে তৎপর ছিলেন অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী ও সদর সার্কেল ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বে
চাঁদপুর সদর মডেল থানা, স্পেশাল পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।বিক্ষোভ মিছিলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখে স্লোগান ছিল জেগেছে রে জেগেছে ছাত্র জনতা জেগেছে। আমার ভাই মরলো কেন,জবাব চাই জবাব চাই,একাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’,রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়। ‘জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো’–সহ সরকার বিরোধী নানা স্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে অনেক শিক্ষার্থীদের হাতে নাকি ছোট ছিল আর
মেয়েদের হাতে রুটি বানানো বেলুন, ডাল, গুটনি, খুনতি ও গুলাই ব্যাগ থেকে বের করতে দেখা যায়।শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকারি বিভিন্ন বাহিনী, ছাত্রলীগ-যুবলীগ গুলি করে ছাত্র ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে। আর পুলিশ নিরীহ শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। চাঁদপুরেও আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে একাধিকবার যুবলীগ ও ছাত্রলীগ হামলা করেছে। আমরা আমাদের দাবী পূরণ না হওয়া পর্যন্ত মাঠে আছি। ইনশাল্লাহ আমাদের বিজয় হবেই হবে।কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কয়েকবার যুবলীগ ও ছাত্রলীগ হামলা করেছে। গত বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) তারা আমাদের শান্তিপূর্ণ ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে বোনদের চুল ধরে টানাটনি করেছে এবং গায়েও হাত দিয়েছে। তারা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আমাদের পিটিয়ে আহত করে। তাই নিজেদের নিরাপত্তায় আমরা লাঠি, বাঁশ ও পাইপ হাতে নিয়ে বিক্ষোভে নেমেছি।এদিকে একই কর্মসূচি পালনে জেলার হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। সেখানেও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ সার্কেল) পঙ্কজ কুমার দাস, হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ ও হাজীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আ স ম মাহবুবুল আলম লিপন শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে শান্তিপূর্ন কর্মসূচি পালন করার জন্য নিরাপত্তা দেন এবং সহযোগিতা করেন।চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইয়াসির আরাফাত, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুহসীন আলম ও ডিবি ওসি এনামুল হক চৌধুরীসহ পুলিশ কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন, শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে আমাদের সহায়তা ছিলো। যে কারণে তারা শহরে শান্তিপূর্ন কমূসচি পালন করতে পেরেছে। সার্বিক পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকায় কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।