প্রকাশ : ২০ জুন ২০২৪, ০৯:২৩
১৫ লাখ টাকার সেই ছাগল নিয়ে যা বললেন সেই ইফাত
এবার কুরবানির বাজারে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আসে এক কোটি টাকার গরু এবং ১৫ লাখ টাকা দামের ছাগল। দুটি পশুই দেশের সবচেয়ে বড় এগ্রো ফার্ম হিসেবে পরিচিত সাদিক এগ্রোর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গণ্ডি পেরিয়ে এই দুই পশু জায়গা করে নেয় গণমাধ্যমে। ঈদের আগে আলোচনায় ওঠা ১৫ লাখ টাকা দামের সেই ছাগল রয়ে গেছে সাদিক এগ্রোতে। আলোচিত তরুণ ইফাত ছাগলটির জন্য অগ্রিম কিছু অর্থ দিলেও তা নেননি তিনি। এমনকি ক্রেতাকে ফোনেও পাচ্ছে না ছাগল বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান।
এক কোটি টাকার গরু বিক্রি করে প্রথমেই সমালোচনার মুখে পড়ে সাদিক এগ্রো। ‘কোরবানিকে লোক দেখানো এবং বিলাসিতা বানানো হয়েছে’ - এমন অভিযোগ ওঠে সাদিক এগ্রোর বিরুদ্ধে। এরপর সামনে আসে ১৫ লাখ টাকার ছাগলটি। প্রায় ৬ ফিট উচ্চতার ছাগলটির ওজন বলা হয় ১৭৫ কেজি। দেশে এ যাবত পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ছাগল হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এটিকে। এরপর তথ্য আসে একজন তরুণ ছাগলটি কিনে নিয়েছেন। ক্রেতা রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকার বাসিন্দা। একটি ভিডিওতে তিনি ছাগলটি কেনার বিষয়টি নিশ্চিতও করেন। পরে জানা যায়, ওই ক্রেতার নাম মুশফিকুর রহমান ইফাত।
প্রচারিত ভিডিওতে তিনি বলেছিলেন, ‘স্বপ্ন ছিল এ রকম একটা খাসির। এ রকম খাসি আগে কখনো দেখি নাই। এই প্রথম দেখা। এটা আমার হবে জানা ছিল না। আল্লাহ নসিবে রাখছে তাই হইছে।’ ঈদের পর জানা যায়, মুশফিকুর রহমান ইফাত ছাগলটি গত ১২ জুন নিতে আসার কথা থাকলেও তিনি তা নিতে আসেননি। যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোনে ইফাত জানান, সাদিক এগ্রোতে কর্ণধার ইমরানের অনুরোধে ছবি তুলেছেন তিনি খাসিটি কেনার জন্য না।
তিনি বলেন, ‘সাদিক এগ্রোর যিনি মালিক ইমরান ভাই। তার কথা অনুযায়ী আমি ছবি তুলি। পরে সবাইকে বলি খাসিটি কিনেছি। আসলে খাসিটি কেনা হয়নি, সেটা বাসায়ও আনা হয়নি। সেটি কুরবানিও দেয়া হয়নি। উনি আমাকে বলেছে দেখে আমি করতে বাধ্য হয়েছি। বাট তার কারণে আজকে আমাকে এদিন দেখতে হবে তা আমি কোনো দিনও বুঝিনি’
বুধবার (১৯ জুন) বিকালে সাদিক এগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেন জানান, ক্রেতা এক লাখ টাকা বুকিং দিয়ে ছাগলটি কিনলেও পরে তা নিয়ে যায়নি। বুকিং দিয়েও ছাগল না নেওয়া লোকসানের মুখে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘উনি (ক্রেতা) আসলেন, এক লাখ টাকা অ্যাডভান্স করলেন। এক লাখ টাকা একটা হ্যান্ডসাম অ্যামাউন্ট। তিনি ১২ তারিখ নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি আসেননি।’ সাদিক এগ্রো ওই ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১১ তারিখ থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাকে ফোনে পাইনি।’
এতে সাদিক এগ্রোর কোনো লোকসান হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান হোসেন বলেন, ‘লোকসান তো হয়েছেই। তিনি বুকিং দেওয়ার পরে অনেক কাস্টমার এসেছিল। আমরা এটা বিক্রি করতে পারতাম।’ তিনি জানান, ছাগলটি এখনো সাদিক এগ্রোর সাত মসজিদ হাউজিং এলাকার এক নং সড়কের খামারে রাখা আছে। বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে বুধবার (১৯ জুন) রাত ৯ টায় খামারটিতে যান এই প্রতিবেদক। এসময় খামার মালিক বা দায়িত্বশীল কাউকে পাওয়া যায়নি। খামারে রাখাল হিসেবে কাজ করেন, এমন কয়েকজনকে দেখা যায়।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৫ লাখ টাকার সেই ছাগলটি এখনো খামারেই আছে। ছাগলটি দেখতে চাইলে তারা দায়িত্বশীলদের উপস্থিতিতে আসতে বলেন। এসময় দায়িত্বশীল কাউকে মুঠোফোনেও পাওয়া না গেলেও শেষমেশ তারা ছাগলটি দেখাতে রাজি হন। খামারের অফিস কক্ষের পাশের খাঁচায় দেখা যায় বিশালদেহী খাসিটি। ঈদের আগে প্রচার হওয়া ছবির সঙ্গে হুবহু মিলও পাওয়া গেছে খাঁচায় থাকা ছাগলটির।