প্রকাশ : ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৪৪
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রীর দুবাই সফরের বক্তব্যে আশার প্রদীপ দেখছে ভুক্তভোগী প্রবাসী বাংলাদেশিরা
১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ কারী মাসুদ আল ইসলামের দুবাইতে বিলাশ বহুল জীবন যাপন
চলতি বছরের গত ২০ই আগস্ট বিনিয়োগের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা এম এল এম কোম্পানি MTFE। এর মূল হোতা কুমিল্লার মাসুদ আল ইসলাম দুবাইয়ে বসে হাতিয়ে নিয়েছেন ১০ হাজার কোটি টাকা। লোভে পড়ে তার ফাঁদে পা দিয়েছেন অন্তত সাত লাখ মানুষ। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন MTFE এর বিনিয়োগ কারীর মধ্যে অন্তত ৯০ শতাংশ বাংলাদেশি।
|আরো খবর
প্রতারণার বিষয় টি জানাজানির পর তদন্ত শুরু করেছিলো পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এন্ড টান্স ন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের সাইবার অপরাধ তদন্ত ইউনিট।সব রকম সাইবার নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ধুলো দিয়ে এক বছরের বেশি সময় ধরে MTFE নামে প্রতারণার জাল বিস্তার করেছিলো মাসুদ আল ইসলাম।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হবার পরও আজ পর্যন্ত মাসদু আল ইসলাম আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ধরা ছোঁয়ার বাহিরেই রয়ে গেছে। ২০ই আগস্ট MTFE বন্ধ হলো।২১ই আগস্ট মাসুদ আল ইসলামের বাড়ী কুমিল্লা থেকে তার পরিবারের লোকজন চিকিৎসার নাম করে পালালো।তারপর বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কিছু-ই করতে পারলো না।
তৎকালীন সময় সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান জোহা বলেছিলেন, শতভাগ না হলেও এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা রয়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৫২ তম ন্যাশনাল ডে উপলক্ষে গত কয়েকদিন আগে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড.হাসান মাহমুদ দুবাই সফর করেন।তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই কাল্টন হোটেলের বলরুমে চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া প্রবাসীদের আয়োজনে এক মত বিনিময় সভায় বলেন,বিদেশে বসে নিজ দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।যারা বিদেশে বসে বাংলাদেশের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে ঐ দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিদের দিয়ে মামলা করা হবে এবং কঠিন বিচারের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা হবে।
তিনি আরও বলেন,সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে অপরাধ করে কেউ পার পেয়ে যাবেন ভাবলে ভুল করবে।বাংলাদেশ সরকার দেশ এবং জাতির সম্মান রক্ষার্থে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এই দিকে দুবাই প্রবাসী বাংলাদেশিরা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড.হাসান মাহমুদের মূখে এরকম বাণী শুনে আবারও আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে।দুবাইতে বসবাস রত হাজার হাজার বাংলাদেশিরা MTFE তে নিজেদের ঘাম ঝরানো ইনকামের হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন।কিন্তু ১৫ই আগস্ট থেকে MTFE এর মাসুদ আল ইসলাম সফটওয়্যার আপডেট এর নামে বিভিন্ন ভাবে পায়তারা শুরু করে এবং ২০ই আগস্ট দুবাই টাইম আনুমানিক রাত ১১ টায় সম্পূর্ণ বিনিয়োগের অর্থ আত্মসাৎ করে।
বর্তমানে ১০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ কারী মাসুদ আল ইসলাম দুবাইয়ে বিলাশ বহুল জীবন যাপন করছে।গত কয়েকদিন আগে শারজায়র ৬ নাম্বার সানাইয়া নামক এলাকায় জয়তুন সুপার মার্কেটে মাসুদ আল ইসলামকে প্রবাসী বাংলাদেশি অনেকই দেখছেন। খবর নিয়ে জানা যায়, ঐ সুপার মার্কেটে মালিকও প্রবাসী বাংলাদেশি। আর মাসুদ আল ইসলাম জয়তুন সুপার মার্কেটের মালিকের সাথেই ওখানে এসেছেন।
জয়তুন সুপার মার্কেটের মালিক মাসুদ আল ইসলামের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।তিনিও দুবাইতে MTFE এর সাথে সংযুক্ত ছিলেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড.হাসান মাহমুদের বক্তব্যে উপর ভিত্তি করে এখন অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি আশার প্রদীপ দেখছেন।
এমতাবস্থায় প্রবাসী বাংলাদেশি সুধী সমাজের ধারনা ,বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এখনো মাসুদ আল ইসলামের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি।দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ কারী মাসুদ আল ইসলাম দুবাইয়ে রয়েছে এটা সবার জানা।তাহলে কি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সাধারণ মানুষের সাথে গোলকধাঁধা খেলছেন।নাকি মাসুদ আল ইসলামের ভেলকিবাজিতে পিছন থেকে কোন বড় শক্তি কাজ করছে।যে শক্তির সামনে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অসহায়।
মাসুদ আল ইসলাম এর এই বিশাল অংকের অর্থ লুট কি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের সামিল নয়?দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর এখনো সাধারণ মানুষের আস্থা রয়েছে।কিন্তু, এখন পর্যন্ত দেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কেন মাসুদ আল ইসলামের বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনি প্রক্রিয়ার অগ্রগতি দেখাতে পারেনি এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে সন্দেহ।এখনি মাসুদ আল ইসলামের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে, এক সময় বাংলাদেশটাকেই লুটপাট করে ফেলবে এই চক্র গুলো।এই দিকে দুবাইতে অবস্থানরত বাংলাদেশ এম্বাসেডরে মাসুদ আল ইসলাম কে নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা দেখা যাচ্ছে না।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড.হাসান মাহমুদ দুবাইতে তার বক্তব্যে দেওয়া কথা গুলোর গুরুত্ব আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তথা সাইবার অপরাধ বিভাগ সহ যাবতীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কতটা গুরুত্ব দিবেন এখন এটা দেখার বাকী।