প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২১, ২১:৫৩
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সচিবসহ ৫ জনকে বিবাদী করে মামলা
কাশারা কমিউনিটি ক্লিনিকের সম্পত্তিতে স্থিতিতাবস্থা বজায় রাখতে আদালতের নির্দেশ
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের কাশারা কমিউনিটি ক্লিনিকের সম্পত্তির মালিকানা দাবি করে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ৫ জনকে বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালত উক্ত সম্পত্তিতে স্থিতিতাবস্থা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে।
|আরো খবর
জানা যায়, তৃণমূলের সাধারণ জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্যে সরকার গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৭নং পাইকপাড়া ইউনিয়নের কাশারা গ্রামে জনৈক নোয়াব আলী ভূঁইয়ার দানকৃত সম্পত্তিতে কাশারা কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়।
কিন্তু চতুর ও প্রভাবশালী নোয়াব আলী ভূঁইয়া ও মনোয়ারা বেগম সরকারকে যে সম্পত্তি রেজিস্ট্রি দলিলমূলে দান করেন, সেই সম্পত্তি সরজমিনে বুঝিয়ে না দিয়ে বরং অন্য দাগের এবং আরেকজনের সম্পত্তি বুঝিয়ে দেয়ার ফলে ঘটনাটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
আদালতে দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, চতুর ও ভূমিদস্যু নোয়াব আলী ভূঁইয়া এবং মনোয়ারা বেগম দাতা সেজে কাশারা কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের জন্যে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সচিবকে ফরিদগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার অফিসে উপস্থিত হয়ে ৮ শতাংশ ভূমি রেজিস্ট্রি মূলে দান করেন, যার দলিল নং- ৬১৭৭/১৮। তিনি উক্ত দানকৃত দলিলে সিএস-৯৪, আরএস-১৩৩, বিএস চূড়ান্ত ৬৮৪/৬২৬ দাগ নং-সিএস ১৩৮১ ও ১৩৮২ দাগ হয় এবং বিএস ২৫৫৬ দাগে মোট .০৮ শতাংশ জমি উল্লেখ করেন।
পরবর্তীতে সম্পত্তিদাতা মামলার বিবাদী গংয়ের সরজমিনে দলিলে উল্লেখিত দাগ অনুযায়ী সম্পত্তি না বুঝিয়ে বরং মামলার বাদীর ২৬ শতাংশ ভূমির মধ্যে ৮ শতাংশ ভূমি জোরপূর্বক দখল করে তা বুঝিয়ে দেন।
অপরদিকে দাতার দানকৃত সম্পত্তি ও সরজমিনে বুঝিয়ে দেয়া সম্পত্তির দাগ ও খতিয়ান ভিন্ন রয়েছে। অথচ দখলীয় ভূমির সিএস ৯৪, আরএস ১৩৩, বিএস ৪৫৭ চূড়ান্ত খতিয়ান সঠিক থাকলেও সিএস ১৩৮০ এবং বিএস ২৫৬। শুধু তাই নয়, এই উল্লেখিত দাগে ২৬ শতাংশ ভূমি রয়েছে।
মামলার বাদীপক্ষ গরিব ও অসহায়। অপরদিকে সরকারকে সম্পত্তি দান করা হয়েছে এবং দানকৃত সম্পত্তিতে সরকারি প্রতিষ্ঠান হবে এই কথাটিকে প্রতিষ্ঠা করে চতুর ও ভূমিদস্যু নোয়াব আলী ভূঁইয়া স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে ও স্থানীয় প্রশাসনকে মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে জোরপূর্বক উক্ত দাগের মধ্যে ৮ শতাংশ ভূমি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের জন্যে বুঝিয়ে দেন।
এক পর্যায়ে সম্পত্তির মালিক আঃ রহিম ভূঁইয়া বাদী হয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব, জেলা প্রশাসক চাঁদপুর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), চাঁদপুর, সিভিল সার্জন চাঁদপুর ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফরিদগঞ্জসহ ৫ জনকে বিবাদী করে সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, ফরিদগঞ্জ আদালতে দেওয়ানী মামলা নং-৩৮১/২১ইং দায়ের করেন।
আদালত উক্ত মামলা আমলে নিয়ে উল্লেখিত বিবাদীদের এ বিষয়ে জবাব বা শোকজ করে ৭ দিনের মধ্যে জবাব চাইলে নির্ধারিত সময়ে জবাব না দেয়ায় গত ৪ অক্টোবর উক্ত সম্পত্তিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
এদিকে এই অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় একই বাদী আদালতে দেওয়ানী উচ্ছেদ মোকদ্দমা দায়ের করে যার নং-৪৫০/২১ইং, যা চলমান রয়েছে।এমতাবস্থায় স্থানীয় জনগণ ও সচেতন উপজেলাবাসী সম্পত্তি দানের নামে নিরীহ মানুষের সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে সরকারের মহৎ উদ্যোগ বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্ত করা নোয়াব আলী ভূঁইয়া গংয়ের বিচারের দাবি এবং নিরীহ মানুষের সম্পত্তি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদী ভুক্তভোগী পরিবার।