প্রকাশ : ১৭ মে ২০২৫, ২১:৩০
যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড়
মতলব উত্তরে পালস্-এইড হাসপাতালের নরমাল ডেলিভারিতে সার্জন ফি ৬ হাজার টাকা!

মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজারে পালস্-এইড জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা নিতে আসা এক প্রসূতির বিল ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। আর সচেতন মহল ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ভাইরাল হওয়া বিল অনুযায়ী, তানজিলা নামে এক রোগী শুক্রবার (১৬ মে ২০২৫) হাসপাতালে ভর্তি হন।
|আরো খবর
বিলের বিবরণে উল্লেখ রয়েছে, ভর্তি ফি ৫ শ' টাকা, কেবিন ভাড়া ১ হাজার টাকা, হাসপাতাল এনভিডি চার্জ ৭ হাজার টাকা, ওষুধ বাবদ ৫ শ' টাকা এবং সার্জন ফি ৬ হাজার টাকা। সর্বমোট বিল দাঁড়ায় ১৫ হাজার টাকা। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ‘সার্জন ফি’, যেটা সাধারণত সিজারিয়ান অপারেশনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও এই রোগীর ক্ষেত্রে নরমাল ডেলিভারি হয়েছে বলে দাবি করেন রোগীর পরিবার।
চিকিৎসা নীতিমালা অনুযায়ী, রোগীর চিকিৎসা ও সার্ভিস সংক্রান্ত প্রতিটি খরচ স্বচ্ছভাবে উপস্থাপন এবং নির্দিষ্ট খাত অনুযায়ী ব্যাখ্যা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এমন ঘটনা একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে অনীহা সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর প্রতি আস্থা হারাচ্ছে জনগণ। এলাকাবাসীর দাবি, পালস্-এইড হাসপাতালের এ ধরনের বিলিং প্রক্রিয়ার তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে কেউ হয়রানির শিকার না হয়। তবে রোগীর পরিবারসহ অনেকেই এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন। তাদের দাবি, যদি জটিলতা থেকে থাকে, তাহলে সেটা আলাদা খাতে উল্লেখ করা উচিত ছিলো। ‘সার্জন ফি’ নামে চার্জ করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
প্রসূতির আত্মীয় মো. মোজাম্মেল কাজী বলেন, আমার আত্মীয় তানজিলার প্রসব বেদনা উঠলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই নরমাল ডেলিভারি হয়ে যায়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১৫ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দেয়। এতো বেশি বিলের কারণ জানতে চাইলে তারা খারাপ ব্যবহার করে। এছাড়া মোহনপুর থেকে আসা রোগী মো. সুমন অভিযোগ করেন, আমার স্ত্রীর ডেলিভারির জন্যে গেলে কর্তৃপক্ষ সরাসরি বলে সিজার করতে হবে। উপায়ন্তর না পেয়ে রাজি হয়ে যাই। পরে ২৫ হাজার টাকা বিল নেয়া হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের ম্যানেজার মো. লিমন বলেন, আমরা সাধারণত নরমাল ডেলিভারির জন্যে রোগীদের কাছ থেকে ১২ হাজার টাকা নেই। তবে এই রোগীর ক্ষেত্রে কিছুটা জটিলতা ছিলো, তাই অতিরিক্ত সার্ভিস বাবদ ১৫ হাজার টাকা রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছি। আমি চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণে আছি। সাধারণত নরমাল ডেলিভারিতে এতো টাকা তো বিল নেয়ার কথা না। যদি অনিয়ম হয়ে থাকে, তাহলে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ ম্যাসেজ দিয়ে জানানো হয়, ওরা একদল চাঁদাবাজ নিয়ে এসে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। চাঁদাবাজ কারা জানতে চাইলে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায় নি।