প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৫, ২০:৫০
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদে পুলিশের চাকরি: ১৩ বছর পর গ্রেফতার সুমন
ভুয়ার যন্ত্রনায় জাতি অস্থির!

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. সুমন (৩৫) ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে ১৩ বছর পর গ্রেফতার হয়েছেন। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরার সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
|আরো খবর
প্রতারণার সূচনা ও চাকরি প্রাপ্তি
২০১২ সালে মো. সুমন পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পাওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি তার প্রতিবেশী মো. হোসেন মিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সনদ দাখিল করেন, যদিও হোসেন মিয়া তার দাদা নন। এই মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে সুমন চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়ে ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ থেকে কনস্টেবল পদে চাকরি শুরু করেন।
অভিযোগ ও তদন্ত প্রক্রিয়া
২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর স্থানীয় যুবক মো. ফরহাদ মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সুমনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। তদন্ত চলাকালেই সুমন ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নেন। পরবর্তীতে, ২১ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
গ্রেফতার ও আইনি প্রক্রিয়া
মামলা হওয়ার পর থেকে সুমন পলাতক ছিলেন। শুক্রবার ভারত থেকে দেশে ফেরার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। শনিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি অনুরূপ ঘটনা
এটি কোনো একক ঘটনা নয়। নোয়াখালীতে বাবার মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ের ভুয়া সনদ দিয়ে পুলিশে চাকরি নেওয়ার দায়ে এক পুলিশ কনস্টেবলকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও, ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ ব্যবহার করে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে ১৯ পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সমাজে প্রতারণার প্রভাব
ভুয়া সনদ ব্যবহার করে সরকারি চাকরি গ্রহণ সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের পরিচায়ক। এ ধরনের প্রতারণা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানহানি করে এবং প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় প্রশ্ন তোলে। এমন অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এ ধরনের প্রতারণার সাহস না পায়।
ডিসিকে/এমজেডএইচ