প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০২:০৯
ফরিদ উদ্দিন: 'গণহত্যার পাহারাদার' থেকে হত্যা মামলার আসামি
নিখোঁজ ফরিদ উদ্দিন, কোথায় গেলেন তিনি?

ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে র্যাব-১০-এর সাবেক অধিনায়ক ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমানের আদালতে দায়েরকৃত মামলায় ফরিদ উদ্দিনসহ ২৮৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
|আরো খবর
মামলার পটভূমি: কী ঘটেছিল যাত্রাবাড়ীতে?
বাদী রুমা বেগমের অভিযোগ, তার ভাগিনা রিয়াজ মোর্শেদ অপু (২৪) আন্দোলনের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ফরিদ উদ্দিনসহ ৪৫ জন ঘটনাস্থলের চারপাশ পাহারা দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালান, যাতে কেউ ভিকটিমকে রক্ষা করতে না পারে।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
পদোন্নতি নাকি পুরস্কার?
গত ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর ফরিদ উদ্দিনকে র্যাব-১০-এর অধিনায়ক পদ থেকে সরিয়ে পার্বত্য জেলাগুলোর এপিবিএনের ডিআইজি হিসেবে পদায়ন করা হয়। এ নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, "ফরিদ উদ্দিন আন্দোলন দমনে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছিলেন, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। অথচ সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি, বরং তাকে পুরস্কৃত করেছে।"
সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ: ফরিদের পদোন্নতিতে বিতর্ক
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ফরিদ উদ্দিনের পদোন্নতি নিয়ে সমালোচনা চলছে। ঢাকা আইনজীবী সমিতির (এডহক) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ফেসবুকে লেখেন, "যাত্রাবাড়ীতে জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যার মহানায়ক ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বরং তাকে সিইও পদে পদায়ন করা হয়েছে।"
ফরিদের গোপন নিখোঁজ হওয়া?
মামলার পর থেকে ফরিদ উদ্দিন তার কার্যালয়ে অনুপস্থিত বলে জানা গেছে। তবে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আরও মামলা
এদিকে, আন্দোলনের সময় গাউছিয়া মার্কেটের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে গ্রেপ্তারের দাবিও উঠেছে। ছাত্রনেতারা বলছেন, তিনি রিয়াজ মোর্শেদ অপু হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী।
অন্যদিকে, ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের সময় ফরিদ শেখ নামে এক ব্যক্তি গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানা ও সায়মা ওয়াজেদসহ ২১ জনকে আসামি করে আরও একটি মামলা করা হয়েছে।
বিচার হবে নাকি ধামাচাপা?
এই মামলাগুলো তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় কীভাবে এগিয়ে যাবে, তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ছাত্রনেতারা বলছেন, এই মামলাগুলোর সুষ্ঠু বিচার না হলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনে নামবেন।
ডিসিকে/এমজেডএইচ
[আপডেটের জন্য চোখ রাখুন]