প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২৪, ২১:৩৭
হাজীগঞ্জে বসতবাড়ি থেকে ৬২ মণ সরকারি চাল জব্দ, আটক ২
হাজীগঞ্জে পৃথক দুটি বসতবাড়ি থেকে ৬২.২৫ মণ সরকারি চাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ। ২৪ জুন সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার ১০নং গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন থেকে মোট ৮৩ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়। চাল ঘরে রাখার দায়ে দু’জনকে আটক করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত জাহান।
|আরো খবর
স্থানীয় সূত্র ও প্রশাসন সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই ইউনিয়নের দেশগাঁও গ্রামের মাইজের বাড়ি ও আটিয়া বাড়ি থেকে ৮৩ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়েছে। রাতে অভিযানের সময় শত শত উৎসুক জনতা সরকারি চাল জব্দের খবরে মাইজের বাড়ি ও আটিয়া বাড়িতে জড়ো হয়। এ ঘটনায় এলাকায় মানুষের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
সূত্র আরো জানায়, সরকারি চাল বসতবাড়িতে মজুদের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত জাহান, হাজীগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মিন্টু কুমার দত্ত মিঠু ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌঃ মোঃ জাকির হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে মাইজের বাড়ি ও আটিয়া বাড়িতে অভিযান চালান। অভিযানকালে মমিনের বসতঘর থেকে খাদ্য অধিদপ্তরের সিল-সংবলিত ২২ বস্তা ও জাহাঙ্গীর আলমের বসতঘর থেকে ৬১ বস্তা সরকারি চালসহ মোট ৮৩ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করেন। এর মধ্যে প্রতিটি বস্তায় ৩০ কেজি করে মোট ২ হাজার ৪৯০ কেজি চাল রয়েছে। একই সময়ে মমিনের বসতঘর থেকে ৮টি খালি বস্তাও জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে ও মমিনের জামাতাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই চাল প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঈদ উপহারের জিআর প্রকল্পের। তবে ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন বাচ্চু কারসাজি করে এই চাল গোপনে বিক্রি করার চেষ্টা করেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
স্থানীয়রা বলেন, ঈদুল আজহার পূর্বে প্রত্যেক গরিব মানুষকে ১০ কেজি চাল দেয়ার কথা থাকলেও চেয়ারম্যান ট্যাগ অফিসারের যোগসাজসে আমাদেরকে মাত্র ৫-৬ কেজি করে চাল দিয়ে বাকি চাল আত্মসাৎ করেছে। আজ ধরা খাইছে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি) মোঃ আব্দুল হালিম জানান, বিষয়টি দেখার জন্যে হাজীগঞ্জ থানার একজন এসআই ও উপজেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা গোডাউনে চালের বস্তাগুলো মেলাচ্ছেন। তিনি বলেন, গত কদিনে গোডাউন থেকে যতো বস্তা চাল বের হয়েছে, সব বস্তার গায়ে সুনামগঞ্জ লেখা ছিলো। এতে বুঝা যাচ্ছে চালগুলো জিআর এরই হবে। এছাড়া একই লেখা সংবলিত বস্তায় কাবিখার চালও সাপ্লাই দেয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে এ কর্মকর্তা বলেন, কাবিখার চাল বাজারেই বিক্রয় করে দেয়।
এ ব্যাপারে গন্ধর্ব্যপুর দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন বাচ্চু বলেন, এ চালগুলো কাবিখার। স্থানীয় মেম্বার চালগুলো গ্রামের লোকদের কাছে বিক্রয় করেছেন। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, মেম্বার পলাতক কি-না তা আমি বলতে পারবো না।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, চাউল জব্দের বিষয়ে মামলা দায়ের হয়নি।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাপস শীল বলেন, তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হওয়ার পর জানা যাবে চালগুলো জিআর নাকি অন্য কোনো প্রকল্পের। যদি জিআর এর হয়ে থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।