প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
হাজীগঞ্জে পচা গন্ধে মিললো নিখোঁজ কিশোরের গলিত লাশ
নতুন ফেলা বালির স্তূপ। সকাল থেকেই চারদিকে উৎকট গন্ধ। দুপুরের পর থেকে সেই গন্ধ প্রকট হয়ে উঠে। স্থানীয়রা নিশ্চিত হয় বালির নিচ থেকে উৎকট পচা গন্ধ বের হচ্ছে। খবর দেয়া হয় পুলিশকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে বালির নিচে বিকৃত মানবদেহের কিছুটা অংশের সন্ধান পায়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন পুলিশের সার্কেল কর্মকর্তাসহ অন্যরা। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে হাজার হাজার উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায়। শেষ বিকেলে বালি সরিয়ে বের করে আনা হয় কোনো এক পুরুষের গলিত লাশ। কিছুক্ষণ পরেই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পাশের মকিমাবাদ গ্রামের এক দম্পতি। তারা এসে তাদের নিখোঁজ সন্তালের লাশ নিশ্চিত করেন। ঘটনাটি ৬ নভেম্বর সোমবার হাজীগঞ্জের ৫নং সদর ইউনিয়নের দোয়ালিয়া পূর্বপাড়া আমগাছতলা এলাকার।
|আরো খবর
পুলিশ ও মৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ অক্টোবর সোমবার মিশুক (অটোবাইক) নিয়ে নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন আরমান হোসেন (১৫)। সে হাজীগঞ্জ পৌরসভাধীন ৪নং ওয়ার্ড মকিমাবাদ গ্রামের মেস্তুরি বাড়ির মোঃ আব্দুল মোতালেবের দ্বিতীয় ঘরের বড় ছেলে। সে অটোরিকশা চালিয়ে বাবা-মা ও ছোট দুই ভাইয়ের জীবিকা নির্বাহ করতো।
গত সোমবার রাতে আরমান নিখোঁজ হয়। এরপর আশপাশের সম্ভাব্য সকল স্থানে খোঁজ করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে বুধবার হাজীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি (নং-৪৫) করেন তার বাবা। অবশেষে গতকাল (সোমবার) বিকেলে ইউনিয়নের দোয়ালিয়া গ্রামের হাজীগঞ্জ-ফিরোজপুর সড়কের পাশে বালুর স্তূপে মিলে আরমানের মরদেহ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোস্তফা আহমেদ জানান, স্থানীয়দের কাছে দুর্গন্ধের খবর পেয়ে আমি পুলিশে খবর দেই।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ সার্কেল) পংকজ কুমার দে ও হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বালুর স্তূপের নিচ থেকে গলিত মরদেহটি উদ্ধার করেন।
আরমানের বাবা আব্দুল মোতালেব ও মা পাখি বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে জুতা ও পরনের প্যান্ট দেখে আরমানের লাশ শনাক্ত করেন। পুলিশ তাৎক্ষণিক সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়না তদন্তের জন্যে মরদেহ চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়।
নিহতের বাবা জানান, আরমানকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা লাশটি বালুর নিচে চাপা দিয়ে তার অটোবাইকটি নিয়ে যায়। আমার নিরীহ ছেলেকে কে বা কারা হত্যা করেছে তা পুলিশ তদন্ত করে বের করুক। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, পারিবারিকভাবে কারো সঙ্গে আমাদের কোনো শত্রুতা নেই। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা আমরা জানি না। ঘটনা তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের বিচার চাই।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ চাঁদপুর কণ্ঠকে বলেন, এ বিষয়ে নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, কিশোর আরমানকে হত্যা করা হয়েছে। তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।