শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০

আনিস ফারদীন

অনলাইন ডেস্ক
আনিস ফারদীন

কবিতা হলো মানবজীবনের স্বতঃস্ফূর্ত প্রবাহের এক অনিন্দ্য প্রতিচ্ছবি। কবিতার মধ্য দিয়ে একজন কবি ফুটিয়ে তোলেন জীবনের আরাধ্য এক রূপ। কালের কথক হয়ে সামনে দাঁড়ায় কবির লিখা কবিতাগুলো। তাই কবিতায় ওঠে আসে আমাদের মানসপটে অঙ্কিত যাপিতজীবনের এক নিখুঁত চিত্র। মনুষ্যজীবনের চাওয়া-পাওয়া, ভাবাবেগ এবং অনুরক্ত আর অনাসক্তের অবরুদ্ধ স্লোগানের নিদারুণ বার্তায় সাজে কবির লিখা কবিতাগুলো। কবিতাগুলো স্বল্প কথায় হৃদয়ের অব্যক্ত হাজারো বার্তা বয়ে বেড়ায় যুগযুগান্তর। হৃদয়ের অনুভূতিকে প্রকাশের জন্য তাই আমি কবিতা লিখি। কবিতা হলো আমার ভালোলাগা এবং ভালোবাসা, আমার নিজের অনুভূতিকে প্রকাশের অন্যতম এক সুদৃঢ় মাধ্যম। তাই কবিতা পড়া এবং লিখা হলো আমার নেশা। কবিতার মধ্যে দিয়ে অনাড়ম্বরভাবে বেঁচে থাকতে চাই কবিতার মতো যুগযুগান্তর।

অদ্ভুত নির্জনতা

না বলা কত কথা, জমে আছে বুকে

লিখছি ক্রমশ শূন্যতার খাতায়;

কতশত স্মৃতি, হৃদয়ের এ ক্যানভাসে

সব জমা হিসেবের স্থির পাতায়।

আনমন আলাপনে, সময়ের প্রলেপন

যাপনের হিসেব সামনে দাঁড়ায়;

সুস্থির চাওয়াতে, কল্পলোকের গল্পে

স্মৃতি এসে বারে বারে কাঁদায়।

নৈশব্দের মালাতে, ব্যঞ্জনার কবিতায়

অদ্ভুত এক নির্জনতা নাড়ায়;

না বলা সব কথা, স্মৃতির লিপিমালায়

উদাসী আহত এ বুক পা

বুক পকেটে জমা চিঠি

ঈশ্বর জানেন কী ভালো, কী মন্দ

মানুষ থাকে শুধু প্রত্যাশায়;

কত সহস্র বছরের প্রতীক্ষা আজন্ম

জীবনে মানুষ কত কী হারায়!

প্রতীক্ষার সলতে পুড়তে থাকে রোজ

উপরের তারকাও যে খসে যায়;

কী নিদারুণ ব্যথা জমে আছে এ বুকে

স্মৃতিরা সামনে দাঁড়িয়ে কাঁদায়!

স্মৃতির অনলে ক্রমশ পুড়তে থাকি

অনুভূতিরা পুড়ে হয়ে যায় ছাই;

বুক পকেটে জমা কত সহস্র চিঠি

শুধু প্রাপকের ঠিকানাটা নাই!

তবু আজন্ম প্রতীক্ষায় পড়ে আছি

বাঁধা পড়ে আছি যে মায়ায়;

স্বপ্নের বীজ বুনেছি শূন্য এ বুকে

জেগে আছি রোজ প্রত্যাশায়!

অবেলার শুকনো ফুল

একগুচ্ছ অনাদর, অবহেলা

রোজ মেরে ফেলে এই আমায়;

অনায়াসে ঝরে পড়ি অনিচ্ছার নাটাইয়ে

অবেলার শুকনো ফুলের মতো ক্রমশ মিইয়ে যাই।

কথার তীক্ষè ফলায় রোজ পুড়ি

পুড়ে পুড়ে অঙ্গার হয় হৃদয় বাতায়ন;

কয়লার দহন ক্ষত-বিক্ষত করে যায় রোজ

আয়ু ফুরিয়ে আসে হাতে হাত রেখে চলা মসৃণ পথের।

নষ্ট হয়ে ভ্রষ্ট পথে পা বাড়াই

অবহেলার তীক্ষè ফলায় বিদ্ধ হই;

মজ্জা মগজ ছেয়ে যায় বেদনার তীব্র বিষে

আমার আমিকে শেষ করে দেয়ার এ যেন সুবর্ণ মধ্যক।

কদমগুচ্ছ

কদম ফুল ভীষণ প্রিয় তোমার

কদমগুচ্ছ আমারও প্রিয়

তারচেয়েও বেশি প্রিয় তুমি

কদমফুল পেলে তুমি ভীষণ খুশি হও

আর আমি খুশি শুধু তুমিতে।

মায়াবী বর্ষায় তুমি কদম হাতে দাঁড়িয়ে

কী ভীষণ সুন্দর, অনিন্দ্য প্রতিচ্ছবি

কদম হাতে ব্যাকুল, দিশেহারা তুমি

কদমের স্পর্শে দেহে শীতলতার পরশ

তোমার ভাবুক মনে একরাশ প্রশান্তি।

আর আমার প্রশান্তি শুধু তুমিতে

কদমের চেয়েও তুমি আরও বেশি স্নিগ্ধ

লাবণ্যময়ী কদমগুচ্ছ যেন তুমি নিজেই

বর্ষার সমস্ত কদমগুচ্ছ হার মানে তোমাতে

তুমিই তো আমার সারা বছরের কদম ফুল।

মৌনতার প্রতিচ্ছবি

ক্ষয়হীন তামার অচল পথে অযুত নিযুত স্বপ্ন

নিঃশ্বাসের অজস্র সবুজ পাহাড় জমে এ বুকে

হৃদয়ের ব্যালকুনিতে দাঁড়ায় ব্যঞ্জনার কবিতারা ।

বাহারি ফুলের স্নিগ্ধতায় আচ্ছন্ন রঙিন প্রজাপতিরা

তৃষ্ণার্ত ইশারায় অভ্যর্থনার পেয়ালায় ঠোঁটের চুমুক

প্রেমাসক্ত শিশিরের মুগ্ধতায় অবাধ্য যাযাবর প্রেমিক।

নির্মল কুয়াশায় পা ভিজিয়ে নেয় স্বপ্নের পথিক

তরঙ্গের সুস্থির নৌকায় ভর করে এগোয় যতসব স্বপ্ন

সময়ের প্রতিচ্ছবি ধরা দেয় জীবনের পরতে পরতে।

নিয়ন আলোয় স্বপ্নের প্রতিচ্ছবি, জীবনের স্নিগ্ধ গল্প

অলিন্দ নিলয়ের উন্মাদ প্রশ্বাসে, ডাকবাক্সের হলুদ খামে

আঙ্গুলের কারসাজিতে একাকার যেন মৌনতার প্রতিচ্ছবি।

বয়ে চলা নদী

কত বছর যাবৎ বয়ে চলছে এ নদী

শত সহস্র বছর!

না আরো বেশি সময়?

কেউ জানে না, জানে না এ নদীও!

জানে না নদীতে ভাসমান নৌকা,

পানিতে সাঁতার কাটা মাছ, পানকৌড়ি

কিংবা আকাশের শঙ্খচিল।

জানে না মাঝি-মাল্লা, জেলে

নদী পাড়ের মানুষ

কেউ জানে না কবে থেকে ছুটছে এ নদী।

অনন্ত যৌবনা হয়ে বয়ে চলছে নিরবধি

বেলা কিংবা অবেলায়

সুদিনে কিংবা দুর্দিনে!

যেন;

এ হৃদয়ের মতো-

যেখানে অগ্ন্যুৎপাতে ক্রমাগত দহন হয়

চৌচির হয় সমস্ত ভাবাবেগ, কল্পনা

ঝড় বয়ে যায় তীব্র গতিতে।

প্রতিশ্রুতির নামতা

কী অদ্ভুত, নিষ্ঠুর

হিসেবের সব মায়াজাল

অবেলার হিসেবে সব ভুল ঠেকে

আদুরে ভালোবাসা, স্নেহ-বন্ধন

যাপিত জীবনে বিস্তর কায় ক্লেশ।

নিমিষে পর হয়ে যায় সব

উদ্ভাসিত পদ্মপাতা ঝলসে যায়

হৃদয় পোড়া বারুদের গন্ধ মেলে

আঙ্গিনায় বিভেদের প্রখর তাপ!

ক্লান্ত আর বিমর্ষ যেন চেনা পথ

বিবর্ণ ঠেকে নিয়ন আলোর সন্ধ্যা

অপলক প্রতীক্ষায় প্রতিশ্রুতির নামতা

তবু অসম্পন্ন থেকে যায় বিস্তর হিসেব।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার চুম্বন

অসহিষ্ণু কণ্ঠে ভালোবাসার দ্রোহ

যাপনের অনলে পুড়ে শরীর

কালাকালের লিখনে অমোঘ নিয়তি!

অবরুদ্ধ প্রতিধ্বনিতে সুস্থির স্লোগান

গদগদ ভেজা কণ্ঠে সুভাষণ, আরক্তি

ভাবনার আস্তরনে স্বপ্নের বিচ্ছুরণ।

দীর্ঘ প্রতীক্ষার চুম্বনে ঝরে স্বস্তির বৃষ্টি

পূজারী মনে বয় প্রশান্তির ঝড়ো নিদ্রা

কাঁক-ভেজা শিশিরে জমে মায়ার মেদ!

কালের চাহনীতে ভাসে সুস্থির প্রতিচ্ছবি

অনাবিল কণ্ঠে বাজে গোপন আলাপন

ভালোবাসার দ্রোহে কাটে বেলা-অবেলা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়