প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০০:০০
লেখালিখি করতে ভালোবাসি আমি। আমি ইঞ্জিনিয়ারিং স্টুডেন্ট তবুও লেখালিখি করি, এটা নতুনত্ব কিছুই নয় কারণ এটা এখন প্রায় সবাই করছে। কিন্তু করার মধ্যে একটা প্রশান্তি আছে। আর আমার মা কবিতা লিখতেন। তাই তার লেখাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমার কর্তব্য, ভালোবাসা। আমি সেটাই করছি।
কেউ নিতে আসেনি
ধাতু হয়ে এসেছি চিরকাল, খুঁজে গেছি প্রত্যয়,
বিভক্তির সাথে সম্পর্ক ভাঙলে, একাই হতে হয়;
সরণ ছাড়া কার্য অচল, বল কেবল সাহায্যমাত্র
আমি জীবন, আমি মৃত্যু, আমি বেদ, আমিই শাস্ত্র।
মনে আছে সে রাত, শ্যাওলা তুলতে গিয়ে জলে
ডুবে গেছিলাম আমি, লোকে বলো হরি বলে,
বুকে নিয়ে বল শত, কেঁটে গেছি সাঁতার একাই
স্রোতের বিরুদ্ধে সাঁতার কাটা যে বড্ড অসহায়।
নিয়ম করেই সব হলো, সবাই কাটিয়ে নিল মায়া
ব্রাহ্মণ বললেন, সাবধানে থেকো, এ কিন্তু বেহায়া;
এবছর ছায়া সাথেই রবে, ভর করতে পারে কাঁধে
কোথাও গেলে, কাউকে নিয়ে যেও সাথে।
সেই বাঁচার সময় থেকেই একা, কেউ শোনেনি
এখনও গাছে আটকে আছি, কেউ নিতে আসেনি।
আমার রবীন্দ্রনাথ
সারাজীবন ধরে মৃত্যুর কথা ভাবা উচিত নয়।
মৃত্যু নিয়ে লেখাও উচিত নয়,
এসব ভেবে ভাবলাম জোড়াসাঁকো থেকে ঘুরে আসি,
বাইশে শ্রাবণের থেকে ভালো দিন হয়না বোধ করি।
কিন্তু সেদিন সকালে ঠাকুরবাড়িতে তুমি এলে না,
এলো একটা সংবাদ।
যে মালার আমাদের বিয়ের সাক্ষী হবার কথা ছিল,
তা এখন তোমার ছবির গায়ে,
তোমার সুন্দর বসে থাকার ছবিটা, দাঁড়িয়ে থাকার ছবিটা,
তোমার হাসি, কাজল কালো চোখ।
কলকাতার ভেতরে ততক্ষণে আরেকটা গঙ্গা বইছে;
সেসব এসে মিশছে আরশিনগরে-
ভাঙা জানালার পাশে রেডিওতে বাজছে
- তখন আমায় নাইবা মনে রাখলে
তুমি যার জন্য সাজতে, কবিতা লিখতে,
যার বাঁ-পাশে শুয়ে থাকার কথা ছিল
তারা প্রত্যেকেই নতুন সংসার করে নিয়েছে।
শুধু যেসব পাহাড়ে যাবার কথা ছিল,
যেসব নদীতে নামার কথা ছিল,
তারা অজস্র গাছ আর শেষের কবিতা দিয়ে পিষে চলে আমাকে।
রবীন্দ্রনাথ আমার বাড়ি খেতেও আসেনি, বসতেও না;
শুধু বাইশে শ্রাবণ দিনটাতে আর একটা আঘাত আনতে এসেছিল।
পাঁচটা মিনিট ধার
আমার তৃতীয় চোখ, পেরিয়ে আসা সারেগামা,
সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসা তার চোখের দিকেই গেলো
তারপর প্রশ্ন করলো : কীরকম আছো মানুষেরা?
বইয়ের পাতার আগুন অথবা বিদেশি কুকুরের
বমির মধ্যে যেখানে চলে চমৎকার মেয়েটির জেরা।
ভাষা নেই তাদের, রক্তে ওরা জড়িয়ে নিয়েছে সময়
যেখানে একা ফুটপাথে হেঁটে যাচ্ছো তুমি
কীভাবে কবিতা হবে? কীভাবে ভাবনা?
বোমা ভেবে যা ছুঁড়ে ফেলি, সব কবিতা হয়
কেনো এই দিনরাত আসে? কেনো প্রেম?
যে বুঝেছে তুমি তার সঙ্গে গিয়ে থাকতে শেখো
কেউ বাইরে যাবে, কেউ বসবে তোমার কোলে
আমার ছায়ারা দিব্যি তোমার চুমু খাওয়া দেখবে
আমার লাভার কাছে পড়ে আছে কার ছবি?
পথ কেটে যাচ্ছি, দু ইঞ্চি বালির উপর সবই
আপনমুগ্ধ মানুষ নিজেই আনন্দ হয়ে আছে
আমার বিকৃত বিক্রিত আত্মা চেয়েছিলে ঘরে
‘কী স্মার্ট হিংস্রতা তোমার’ তবু নেই কণ্ঠস্বরে।
যখনই মৃত্যুকে ভাবি, ধরে ফেলি আরও পাখি
তোমার জীবন থেকে পাঁচটা মিনিট ধার দেবে কি?