বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জে সংবাদকর্মীর কন্যাকে অপহরণ চেষ্টায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠনের
  •   লক্ষ্মীপুরে মাদকসহ বাবা ও দুই ছেলে আটক
  •   চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ৮ আসামী আটক
  •   ফরিদগঞ্জ পাকহানাদার মুক্ত দিবস পালন
  •   যৌথ অভিযানে কচুয়া থানার লুণ্ঠিত পিস্তলের ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার

প্রকাশ : ০৪ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০

এসো বৃষ্টির গল্প শোনাই
সাহেদ বিন তাহের

এক সময় বৃষ্টি আমার খুব প্রিয় ছিলো।

বৃষ্টিতে ভিজে খেলাধুলা করা, এদিক-সেদিক ঘুরে বেড়ানো

কিংবা স্কুল থেকে ভেজা শরীর নিয়ে বাড়ি ফেরা ছিলো নিত্যনতুন ঘটনা।

কিন্তু হঠাৎ করেই বৃষ্টি যেন আমার জীবনে অভিশপ্ত একটা অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে

ভালোলাগার পরিবর্তে খারাপ লাগতে শুরু করেছে বৃষ্টিস্নান!

মনের মধ্যে এক অজানা ভয়-ভীতি কাজ করতে শুরু করেছে।

বৃষ্টি এখন আর ঠিক সহ্য করতে পারি না!

জানতে চাও কী কারণে?

এই বৃষ্টির দিনে আমি আমার অনেক প্রিয়জনকে হারিয়েছিলাম।

দুই হাজার ষোল সালের ত্রিশ জুলাই, শনিবারের কথা

ভোর পাঁচটায় খবর এলো বাবা আর নেই

বাবার নিথর দেহ ঢাকা থেকে নিয়ে আসা হয় বাড়িতে ।

সেদিন আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হারিয়েছি।

চিরতরে হারিয়ে গেছে আমার আশ্রয়স্থল,

বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো সকল আশা-ভরশার দরজা।

বাবা আর কোনোদিন জানতে চাইবে না কী করছি, কেমন আছি।

কোনো আবদার নিয়ে আর কখনো যাওয়া হবে না তার কাছে।

ভাবতেই সারা শরীর শিওরে ওঠে

ডিসেম্বর, দুই হাজার সতেরো সাল

সেদিন রক্তিম আকাশে জ্বলমলে সূর্য উদয় হয়ে আবার

নিবে যেতে মোটেও সময় নেয়নি।

তখনও বৃষ্টি!

এক বৃষ্টি ভেজা বিকেলে

বড় বোনের প্রথম যময দুই কন্যা সন্তানের লাশ মাটি চাপা দিয়ে এসেছি

ফেব্রুয়ারি, দুই হাজার ঊনিশ

পরিবারের বয়োবৃদ্ধা মানুষটিকে হারিয়ে অভিভাবকশূন্য

হয়ে পড়েছিলো পুরো পরিবার।

আশ্চর্যজনকভাবে সেদিনও বৃষ্টি ছিলো

দাদাকে দেখিনি দাদির মধ্যে উনার চাপ দেখতে পেয়েছিলাম

তারপর থেকে এই দিনটিকে পালন করা হয়

দাদি হারানোর শোক দিবস হিসেবে।

চৌদ্দ জুলাই, রবিবার, ঊনিশ সালের কথা

প্রাণোজ্জল দুপুরে সবাইকে কাঁদিয়ে

না-ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন বড় ভাই।

তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মেঘের কান্না শুরু হয়।

বাবার পর যার সাথে ছিলো শত আভেগ অনুভূতি মাখা সুখকর স্মৃতি।

সেই থেকে আমি একা, বড্ড একা হয়েই আমার বেড়ে চলা

এই মৃত্যুগুলো আমাকে বৃষ্টি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।

চাইলেই যেতে পারি না, বৃষ্টিস্নান করতে পারি না।

কোনো অজানা এক ভয়ে!

তবে আশ্চর্যজনক ভাবে সবার মৃত্যু বৃষ্টি ভেজা দিনে হলেও

কারো লাশ দাফনেই কোনো রকম সমস্যা পেতে হয়নি।

আমৃত্যু বৃষ্টি আমার জীবনে না ভূলতে পারা স্মৃতি হয়ে থাকবে।

তাই সবার থেকে আমার গল্পটা একটু আলাদা।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়