বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ২২ জুন ২০২৩, ০০:০০

চালু হচ্ছে চাঁদপুর পৌর অডিটোরিয়াম ?

চালু হচ্ছে চাঁদপুর পৌর অডিটোরিয়াম ?
সংস্কৃতি অঙ্গন প্রতিবেদক ॥

চাঁদপুরের সংস্কৃতি কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী চাঁদপুর শহরের কদমতলা এলাকায় নির্মাণাধীন ৫শ’ অসন বিশিষ্ট পৌর অডিটোরিয়াম চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে চাঁদপুর পৌরসভা। যদিও অনেক আগ থেকে এটি সচল করার নানা উদ্যোগ নিয়েও শেষ পর্যন্ত নানা জটিলতার কারণে চালু করা সম্ভব হয়নি।

২০০৩ সালের ৪ জুলাই তৎকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী এ মিলনায়তনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। দৃষ্টিনন্দন এই ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০১০ সালে। অথচ প্রায় দেড় যুগেও নির্মাণাধীন এই অডিটোরিয়ামটি ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে পারেনি পৌর কর্তৃপক্ষ। ফলে সাংস্কৃতি কর্মীদের আন্দোলনের ফসলটি নেশাখোর, তরুণ ও যুবকদের আড্ডাখানা, রিক্সার গ্যারেজসহ পান-সিগারেটের দোকানিদের দখলে রয়েছে। এটি নিয়ে চাঁদপুরের সংস্কৃতি কর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

চাঁদপুর পৌরসভা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা ভবনটি নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় গণপূর্ত বিভাগ। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে প্রায় ৫০ শতাংশ জমির ওপর অডিটরিয়াম ভবনের জন্যে অর্ধ কোটি টাকার টেন্ডার করা হয়। এ টাকায় গণপূর্ত বিভাগ শুধু ফাউন্ডেশনের কাজ করলেও টাকার অভাবে বাকি কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এক পর্যায়ে তৎকালীন মেয়র হিসেবে নাছির উদ্দীন আহমেদ দায়িত্ব নেয়ার পর প্রায় সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব নেয় পৌরসভা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুরো কাজ না করায় তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করে পৌরসভা। এরপর নিজ উদ্যোগে ভবনের বাকি কাজ সম্পন্ন করে পৌর কর্তৃপক্ষ।

সূত্র থেকে আরো জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৩ সালের দিকে ভেতরের কাজের জন্যে তিন কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু বিদেশ থেকে জিনিসপত্র আনতে গিয়ে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ না করে কর্তৃপক্ষের কাছে সারেন্ডার করে। কর্তৃপক্ষ তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করে। এরপর থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে। অডিটরিয়ামের আসন, সাউন্ড সিস্টেম, স্টেজ, লাইটিং, কার্পেটিং, পর্দা, বিদ্যুৎ, পানি এবং পুরো ভবনটি রং করাসহ অনেক কাজ এখনও বাকি রয়েছে।

বর্তমান মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল পৌর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর কয়েক বার পৌর অডিটোরিয়াম চালুর বিষয়ে চেষ্টা করেন। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে বার বার উদ্যোগ নিয়েও এ বিষয়টির সুরাহা করতে পারেননি। এ বিষয়ে মেয়রের মুঠোফোনে কল করা হলেও অসুস্থতার জন্যে তাঁর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সামছুদ্দোহার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, চাঁদপুর পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্যে বর্তমানে বেশ ক’টি প্রজেক্ট আসছে। আশা করছি, যে কোনো একটি প্রজেক্টে পৌর অডিটোরিয়াম সচল করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এর বাইরে তিনি আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের সংস্কৃতি কর্মীদের তৎকালীন দাবি বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অজয় ভৌমিকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, চাঁদপুরের সংস্কৃতি কর্মীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিলো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার জন্য একটি আধুনিক অডিটোরিয়াম নির্মাণ করার। এক পর্যায়ে এই অডিটোরিয়াম নির্মাণের জন্য চাঁদপুর শহরের মুক্তিযোদ্ধা সড়কস্থ বর্তমান শহীদ মিনারের স্থানটি পছন্দ করা হলে তৎকালীন সরকারের শীর্ষ মহল থেকে এই স্থানের পরিবর্তে বর্তমান জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সম্মুখের স্থানে নির্মাণ করার জন্যে বলা হয়। কিন্তু সংস্কৃতি কর্মীরা তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে সংস্কৃতি কর্মীরা পুনরায় একটি সভা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নতুন স্থান খুঁজতে থাকে। এক পর্যায়ে সংস্কৃতি কর্মীরা হরদয়াল নাগের পুকুরটি পছন্দ করে এখানে অডিটোরিয়াম নির্মাণ করার দাবি জানান। এ দাবির প্রতি চাঁদপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসনসহ সকল কর্তৃপক্ষ সমর্থন জানায়।

পরে কদমতলাস্থ হরদয়াল নাগের পুকুর ভরাট করে কাজ শুরু করা হয়। শুরুর প্রথমে সাংস্কৃতিক কর্মীদের ফান্ড ব্যয় করা হয়। পরবর্তীতে কাজটি গণপূর্ত শুরু করে। এরপর এক পর্যায়ে চাঁদপুর পৌরসভা সিদ্ধান্ত নেয় এটি পৌর কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে নির্মিত হবে।

অজয় ভৌমিক বলেন, এই সিদ্ধান্তের পর এটির নামকরণ করা হয় পৌর অডিটোরিয়াম। আমরা এই সিদ্ধান্তে যারপরনাই আনন্দিত হয়েছি। আমরা ভেবেছি, হয়তো সংস্কৃতি কর্মীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল আমরা ঘরে তুলতে পারবো। কিন্তু দীর্ঘ দেড় যুগেও যখন দেখি, আজো আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেলো, তখন নিজেকে অসহায় লাগে।

তিনি বলেন, তারপরও আশা করছি মেয়র অ্যাডঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল সংস্কৃতিক কর্মীদের এই দাবি অর্থাৎ পৌর অডিটোরিয়াম পূর্ণাঙ্গ সচল করার কাজে সফল হবেন। অবশ্য তিনি আন্তরিক রয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আশা করছি তিনি খুব শীঘ্রই তাঁর চেষ্টায় সফল হবেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়