প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
প্রয়াত শিক্ষক ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেলকে নিয়ে প্রিয় শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ
আমরা আমাদের এক প্রিয় শিক্ষককে হারিয়ে ফেললাম। আমাদের ছেড়ে তিনি চলে গেলেন। ঠিক এমন ভাবেই শিক্ষক হারানোর কথা বলছিলেন চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
|আরো খবর
ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেল স্যার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ২ সেপ্টেম্বর শনিবার বিকেল ৩টায় চাঁদপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
প্রিয় শিক্ষক ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেল স্যারকে হারিয়ে শোকাহত চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীরা। ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ইরাম ইয়ামিন খান বলেন, স্যার আমাদের প্রিয় শিক্ষক ছিলেন। তিনি আমাদের সবসময় পড়ালেখায় উৎসাহ দিতেন। নিজের ছাত্রজীবন থেকে নেয়া উপদেশমূলক কথা বলতেন। আমরা ছিলাম চাঁদপুর মেডিকেল কলেজে স্যারের প্রথম ব্যাচ। তিনি শুধু আমাদের শিক্ষক ছিলেন না, তিনি ছিলেন আমাদের একজন অভিভাবক। স্যারকে হারিয়ে আমার শোকাহত।
আরেক শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন বলেন, জীবন কতটা অনিশ্চিত। ক্লাসে আসলেই স্যার জিজ্ঞেসা করতো, কিরে রিয়াদ আজকে পইড়া আসছোস? আর জিজ্ঞেসা করবে না। চলে গেলেন আমাদের ছেড়ে। গত ১ সপ্তাহ আগে আফিমের বিষক্রিয়া নিয়ে পড়ালো। আজ দুনিয়াতে তিনি নেই।
শিক্ষার্থী সুরাইয়া জাহান সুহিতা বলেন, নিতে পারতেসি না, একদমি নিতে পারতেসি না, স্যারের মতো এত হাসিখুশি এত ভালো মানুষের চলে যাওয়া মানা যায় না, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা স্যারকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক, আমিন।
আফরোজা আক্তার জুথী বলেন, আজকে সকালেও (২ সেপ্টেম্বর) ক্লাসে বলছিলাম স্যার আমাদের খাওয়াবেন, সেটা কবে হবে! দুপুর না গড়াতেই মৃত্যুর সংবাদ। এত হাসিখুশি একজন মানুষ ছিলেন। হঠাৎ করেই এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন কোনোদিন ভাবিনি। মেনে নিতেও কষ্ট হচ্ছে। আল্লাহ স্যারকে জান্নাতবাসী করুক। আমিন।
জান্নাতুল নাঈম সুমী বলেন, এটা কেমনে হতে পারে! এই শেষ ক্লাসেও কত হাসি-ঠাট্টা করলাম আমরা। আপনার ক্লাস ছাড়া চলবে কীভাবে আমাদের স্যার। এমনটা কেনো হতে হলো। আমার ৩য় বর্ষ বৃথা মনে হচ্ছে এখন। আনন্দের সাথেও যে ক্লাস করা যায় আপনাকে দেখে শিখেছিলাম স্যার। আমাদের জীবনে আপনার এই ছোট্ট সময়সীমা মেনে নিতে পারছি না। আল্লাহ স্যারকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করুক। আমিন!
ইসমাঈল কাজী বলেন, গত পরশুই তো সিঁড়িতে দেখা, হাসিমুখে সালামের উত্তর নিলেন। যদিও স্যারের ক্লাস এখনো পাইনি, অনেক ভালো মানুষ ছিলেন স্যার। আল্লাহ স্যারের ভুলত্রুটি ক্ষমা করে জান্নাতবাসী হিসেবে কবুল করুক এবং স্যারের পরিবারকে ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করুক।
শ্রেয়সী দেবী অন্তরা বলেন, এই তো সেদিন মাত্র স্যার আমাদের ক্লাস নিলেন.. বরাবরের মতোই ক্লাসটাকে হাসি, মজায় মাতিয়ে রাখছিলেন! এখনো চোখের সামনে ভাসছে! এতো ভালো একজন মানুষ! হুট করেই নাকী চলে গেলো! হসপিটালে গিয়ে স্টাফ, নার্স উনাদের সাথেও নাকী দুষ্টামী করতেছিলো! অথচ কেউ বুঝতেও পারেনি স্যার আর মাত্র অল্প সময়ের অতিথি এই পৃথিবীতে! সৃষ্টিকর্তা উনাকে জান্নাত নসিব করুন!
এভাবেই ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেল স্যারকে নিয়ে নিজেদের কথাব্যক্ত করেন শিক্ষার্থীরা।
রবিউল হাসান : শিক্ষার্থী, ৩য় বর্ষ,
চাঁদপুর মেডিকেল কলেজ।