বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫  |   ২৬ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৭:০৪

চৌদ্দগ্রামে জুতা ব্যবসায়ী টিপুকে গুলি করে হত্যা : দু জনকে যাবজ্জীবন এবং ছয়জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক।।
চৌদ্দগ্রামে জুতা ব্যবসায়ী টিপুকে গুলি করে হত্যা : দু জনকে যাবজ্জীবন এবং ছয়জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে জুতা ব্যবসায়ী মো. ইউছুপ ভূঁঞা প্রঃ টিপু (২৮) কে গুলি করে হত্যার অভিযোগে দু জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কুমিল্লার আদালত। মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) দুপুরবেলা কুমিল্লার বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক সাব্বির মাহমুদ চৌধুরী এ রায় দেন। এছাড়াও আরো ৬জনের প্রত্যেককে ১০ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন : ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার মরকোটা গ্রামের মৃত ডা. আবুল হাসেমের ছেলে মেহেদী হাসান @ জামশেদ (২১) ও একই উপজেলার দক্ষিণ চর চান্দিয়া গ্রামের মৃত ফজলুল হক পালক পিতা মনির আহাম্মদ ডিলারের ছেলে শহীদুল ইসলাম @ মাসুদ @ মাসুম (৩২)।

এছাড়াও ১০ বছর করে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন : ফেনী সোনাগাজী উপজেলার চান্দলা পাটোয়ারী বাড়ির মৃত আবুল কালামের ছেলে মো. জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী (৩২), কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গাংরা (ধানছা) গ্রামের মৃত আ. হালিমের ছেলে মো. জামাল হোসেন মানিক (৩১) ও ধোরকড়া গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে মো. একরামুল হক মিলন (৪১), নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ মঙ্গলকান্দি গ্রামের রুহুল আমিন @ রুহুইল্যা চোরার ছেলে ইব্রাহিম প্রঃ বড় মিয়া (৪৫), ফেনী সোনা গাজী উপজেলার সহদিয়া গ্রামের মৃত রবিউল হক পালক পিতা মোঃ দুলাল মিয়ার ছেলে মোঃ আলাউদ্দিন @ তোতা (২৮) ও চট্টগ্রাম মীরশ্বরাই উপজেলার পশ্চিম সোনাই গ্রামের মৃত মুজাফফর হোসেন এর ছেলে মো. শাহাবুদ্দিন (৩৮)। উল্লেখ্য যে, দণ্ডপ্রাপ্ত সকল আসামিই পলাতক রয়েছেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১৬ মে দিবাগত রাত ২টার সময় মো. ইউছুপ ভূঁঞা প্রঃ টিপু (২৮) প্রস্রাব করতে ঘরের বাইরে গেলে পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা ডাকাতদল তাকে ঝাপটিয়ে ধরে ফেলে এবং গুলি করে খুন করে পালিয়ে যায়। এরপর টিপুর শোরচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে টিপুকে উদ্ধার করে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ব্যাপারে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার তারাশাইল গ্রামের মৃত যৌবন আলীর ছেলে নিহতের পিতা মোহাম্মদ আলী (৭৫) বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে চৌদ্দগ্রাম থানায় দণ্ড বিধির ৩০২/৩৪ ধারার বিধানমতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. মহিউদ্দিন ও এসআই মো. মোবারক হোসেন এবং সিআইডি কুমিল্লা মো. তাজুল ইসলাম তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে হাজির করলে ৪জন আসামি ১৬৪ ধারার বিধানমতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করে। ঘটনার তথ্য উদ্ঘাটনক্রমে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ডবিধির ৩৯৬ ধারার বিধানমতে ২০১১ সালের ১ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তৎপর মামলাটি বিচারের আসলে ২০১৩ সালের ১৮ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় অভিযোগ গঠনক্রমে রাষ্ট্রপক্ষে ১৬জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানি অন্তে আসামিদের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত। এছাড়াও অত্র মামলার ৬ জন আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ০৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।

উল্লেখ যে, এ মামলায় মোট ১৭ আসামির মধ্যে মামলা চলাকালীন সময়ে আসামি ইব্রাহিম, তাজু ও আবদুর রাজ্জাক মৃত্যু বরণ করেন এবং আসামি আবুল হাসেম ভূইয়া @ ভুটু, মো. দুলাল, ফারুক হোসেন, ইলিয়াস ভূইয়া, আবুল কাশেম ও সাইফুল-এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. ইফতেখার হোসেন ও অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. ইকরাম হোসেন এবং অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দীন আহমেদ টিপু।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়