প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৮:২০
কলেজের বিতর্কিত অধ্যক্ষ ইস্যুতে দুগ্রুপের সংঘর্ষ : আহত ৭
ফরিদগঞ্জের গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের বিতর্কিত অধ্যক্ষ ইস্যুতে দু গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৭/৮ জন আহত হয়েছে। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সকালে ওই কলেজ ক্যাম্পাসে শ্রেণি শিক্ষা ও পরীক্ষা চলাকালীন এই ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
|আরো খবর
জানা গেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হরিপদ দাসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে কলেজে মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। এতে করে তিনি দীর্ঘ ৩ মাস কলেজে অনুপস্থিত ছিলেন। সম্প্রতি রাজনৈতিক সমীকরণে তিনি কলেজে যোগদান করেন। এ নিয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে একটি পক্ষ। এরই জের ধরে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) ফরিদগঞ্জ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচয় দিয়ে একদল ছাত্র কলেজে প্রবেশ করে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মিছিলের এক পর্যায়ে কলেজ ভবনে তালা মেরে দেয়। অপরদিকে অধ্যক্ষের পক্ষে কলেজের শিক্ষার্থীদের একাংশ এবং স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদলের একটি অংশ ঘটনা শুনে কলেজ ক্যাম্পাসে আসে। এতে দু পক্ষ মুখোমুখি হলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এতে অন্তত ৭/৮জন আহত হয় বলে স্থানীয়রা জানায়। আহতদের মধ্যে কামরুল হাসান (১৮), শাহরিয়ার নাফিস (১৭) ও ফাহিম (১৯) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে।
কলেজ শিক্ষার্থী সানজানা মনির ইভা, মেহেদী হাসান, রাকিবসহ কয়েকজন জানান, ক্লাস চলাকালীন বহিরাগতরা কলেজে এসে আমাদের কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করেছে। তারা আমাদের কলেজে তালা মেরে দিয়ে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে আমাদের ক্লাস ও পরীক্ষার ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। পরে আমরা তাদের প্রতিহত করেছি।
অন্যদিকে স্থানীয় লোকজন জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে অধ্যক্ষ হরিপদ দাস কলেজে অনুপস্থিত থাকায় কলেজ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার পদত্যাগ দাবি করে একাধিকবার মিছিল- সমাবেশ করেছে। একই সাথে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা হরিপদ দাসের পদত্যাগ চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ইতিপূর্বে। এরই মধ্যে তিনি রাজনৈতিক সমঝোতায় কলেজে যোগদান করেছেন।
কলেজ অধ্যক্ষ হরিপদ দাস জানান, কলেজ শিক্ষার্থী ও এলাকার লোকজন আমাকে কলেজ পরিচালনায় সহযোগিতা করছেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে কয়েকজন যুবক এসে আমাকে নানাভাবে প্রশ্ন করার এক পর্যায়ে হেনস্তার চেষ্টা করে। এ সময় কলেজ শিক্ষার্থীরা তাদের রুখে দাঁড়ায়। অন্যদিকে ছাত্রদের এক অংশ বলছে, শিক্ষক হরিপদ দাসের পক্ষে আজ যে ছাত্ররা অংশগ্রহণ করেছে এরা মূলত ছাত্রলীগ করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এরা বিপক্ষে ছিলো। এরা ৫ আগস্টের পরে কলেজে আসলেও এতোদিন চুপচাপ ছিল। কিন্তু আজ হঠাৎ এরা অধ্যক্ষ হরিপদ দাসের পক্ষ নিয়ে মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের বিপক্ষে অবস্থান নেয়।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি হানিফ সরকার জানান, অধ্যক্ষের পদত্যাগ চেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা সেখানে অবস্থান নেয়--এমন সংবাদে পুলিশ সেখানে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।