প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:০৪
সূচীপাড়ায় প্রবাসী বোনের বাড়ি দখল ও হামলায় ভাই-বোনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ
শাহরাস্তি উপজেলার সূচীপাড়া গ্রামে প্রবাসী বোনের বাড়ি জোর করে দখল করায় আপন বোন তার ভাই ও ভাতিজার বিরুদ্ধে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগে শাহরাস্তি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী প্রবাসী মাজুদা বেগম, স্বামী- খাইরুল কবির বাদল ভূঁইয়া সাং সূচীপাড়া ভূঁইয়া বাড়ি।
|আরো খবর
জানা যায়, মাজুদা বেগম দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার কারণে তার ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন এই বাড়িতে তার পরিবার নিয়ে বসবাস করতো। বিগত এক বছর আগে ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন প্রবাসে চলে যায়। তিন মাস আগে তার স্ত্রীকে সৌদি আরবে ওমরা করতে নিয়ে যায় বাড়িতে তালা দিয়ে। এই সুযোগে আসামিগণ অনধিকার প্রবেশ করে লুটপাট করে। এ ঘটনায় আনোয়ার হোসেনের শাশুড়ি থানায় অভিযোগ করেন।
অভিযোগে জানা যায়, গত শনিবার (১ ফ্রেব্রুয়ারি ২০২৫) সকাল ১০টার সময় নিজ বাড়িতে জোরপূর্বক জমি দখল, বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। অভিযোগের বিবাদীরা হলেন : মো. মেহেরাজ হোসেন ফরহাদ (২২), পিতা আব্দুল আল মামুন ওরফে মনু, ওয়াসিম আহাম্মেদ (৩৫), পিতা আকিত উল্লা, মো. রাশেদ (৪০) পিতা শাহ জাহান, মো. হানিফ সুলতান, পিতা সালেহ আহাম্মদ, আকিত উল্লাহ, পিতা তমিজ উদ্দিন ও শাহজাহান, পিতা সালেহ আহাম্মদ। এদের সবার বাড়ি সূচীপাড়া নাগর বাড়ি। ঘটনার দিনে এরা দলবলসহ মাজুদা বেগমের বসতঘরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা করে। হামলার সময় ঘরের ইটের দেয়াল ভেঙ্গে মাটিতে ফেলে দেয় এবং দরজায় থাকা তালা ভেঙ্গে ঘরের ভেতরে ঢুকে স্বর্ণালঙ্কারসহ নগদ টাকা নিয়ে যায়। এতে প্রায় ৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয় বলে মাজুদা বেগম অভিযোগে উল্লেখ করেন।
আরো জানা যায়, ১৯৯৬ সালে মাজুদা বেগম তার পৈত্রিক সম্পত্তির ৯ শতাংশ জমি নিজের নামে পেয়ে দানপত্র দলিল মূলে মালিক হন। ১৯৯৮ সালে তিনি এখানে ইটের দালান করেন। সে সময় স্বামী সৌদি প্রবাসে থাকেন বলে ২০০০ সালে তিনিও সৌদি আরব চলে যান। যাওয়ার পূর্বে মাজুদা বেগম বোন সাজেদা বেগমকে নিজের বাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্যে দিয়ে গেলে বোন ওই বাড়ির ওপরে বড় চৌচালা একটি টিনের ঘর উত্তোলন করে থাকার জন্যে। এরপরে তিনি জমি দখল করতে বোনের সাথে নানা প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে জবর দখল করে রাখে। পরে ২০১৪ সালে মাজুদা বেগম দেশে ফিরে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করলে চাঁদপুর জেলা পুলিশ সুপার আইনীভাবে মাজুদার বাড়িটি বুঝিয়ে দেন এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সাজেদা বেগমকে তাহার বসতঘরটি ভেঙ্গে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপরে মাজুদা বেগমসহ তার পরিবার বিদেশ চলে যাওয়ার কারণে ছোট ভাই আনোয়ার হোসেনকে ওই বাড়িতে থাকার জন্যে দায়িত্ব দিয়ে চলে যান। আর এরই মাঝে ছোট ভাই আনোয়ার কয়েকবার সাজুদা বেগমকে ঘরটি সরানোর কথা বললে তিনি আজ-কাল বলে বিগত বছর পার করেন। তার ফাঁদ ও পরিকল্পনা ছিলো মাজুদা বেগমের বাড়িটি পুনরায় দখল করা। তাদের পরিকল্পনা মাজুদা বেগমের ৯ শতাংশ জমি দখল করে নিজেই মালিক হবে। এরই মধ্য ছোট ভাই সৌদি চলে গেলে ফাঁকা বাড়ি দখল করতে ১ ফেব্রুয়ারি দখল নিতে হামলা চালায় আপন ভাই-বোন, ও বোন জামাইসহ ভাইয়ের ছেলে ফাহাদ। শুধু তাই নয়, এই ঘটনা যদি কাউকে অবগত করে বা আইনের আশ্রয় নিয়ে মামলা মোকাদ্দমা করে, তাহলে মেয়েসহ তার পরিবারবর্গকে মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয় বলে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার। ফাহাদসহ অভিযুক্তদের এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও এমন হুমকিতে প্রাণনাশের আশঙ্কা করছেন মাজুদা বেগমের পরিবার। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ জেলা পুলিশ সুপারের সহযোগিতা কামনা করেছেন ভুক্তভোগী অভিযোগকারী মাজুদা বেগমের পক্ষে নুরুন নাহার বেগম।