সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:৫৭

গৃদকালিন্দিয়ায় আবারো পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি

ফরিদগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ছে অপরাধ

ফরিদগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ছে অপরাধ
প্রবীর চক্রবর্তী

ফরিদগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চল চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ার কারণে এলাকাটি এক সময় অপরাধীদের অভয়ারণ্য ছিলো। ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ, চরদুঃখিয়া পূর্ব ও চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের এলাকাগুলো হচ্ছে ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের জনপদ। এসব এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই চুরি ডাকাতিসহ নানা অপরাধ সংঘটিত হতো। এক দশক পূর্বে এসব অপরাধ রুখতে চাঁদপুরের পুলিশ সুপারের নির্দেশে রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের গৃদকালিন্দিয়া বাজারে পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপন করা হয়। তারপর থেকে এসব এলাকার অপরাধ অনেকটা কমে যায়। তাছাড়া চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কটি ক্রমেই চট্টগ্রাম-খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে রূপান্তরিত হওয়ায় সড়কেও বেড়ে যায় ব্যস্ততা। এ কারণে ফাঁড়ির পুলিশ দিন-রাতে এখানকার সড়কে টহল দিতো। কিন্তু করোনাকালীন সময়ে হঠাৎ করেই পুলিশ ক্যাম্পটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। এর প্রভাব আস্তে আস্তে পড়তে শুরু করে। পুনরায় অপরাধ প্রবণতা বাড়তে থাকে। একই সাথে সড়কে বেড়ে যায় যানজট। এসব থেকে রক্ষা পেতে পুলিশ ক্যাম্পটি পুনরায় চালু করতে এবং গৃদকালিন্দিয়া বাজারের জন্যে একজন ট্রাফিক পুলিশ চেয়ে চাঁদপুর পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন স্থানীয়রা।

গত ৩০ জানুয়ারি এলাকাবাসীর পক্ষে গৃদকালিন্দিয়া বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদুর রহমান খান এই আবেদন করেন। তিনি বলেন, করোনাকালীন সময় পুলিশ ক্যাম্প বন্ধ হওয়ার পর থেকে এই এলাকায় অপরাধ প্রবণতা বেড়ে চলেছে। বর্তমান সময়ে এই সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। এছাড়া গৃদকালিন্দিয়া বাজারের পাশেই আইউব আলী শিক্ষা কমপ্লেক্সে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসাসহ কয়েকটি প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তাছাড়া চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ফলে গৃদকালিন্দিয়া বাজারে যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে গৃদকালিন্দিয়া বাজারের জন্যে একজন ট্রাফিক পুলিশ এবং এখানে পুলিশ ফাঁড়িটি পুনরায় চালু করার জন্যে আবেদন করেছি।

ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাউছার আহমেদ বলেন, রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নসহ আশপাশের ৩টি ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আবারো গৃদকালিন্দিয়া বাজার এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন জরুরি। তাছাড়া যানজট নিরসনে গৃদকালিন্দিয়া আইউব আলী শিক্ষা কমপ্লেক্স এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ প্রয়োজন।

বাজারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী আবুল খায়ের পাটওয়ারী জানান, পুলিশ ক্যাম্প আমাদের জন্যে আশীর্বাদ ছিলো। একদিকে অপরাধ প্রবণতা রোধ হতো, অন্যদিকে প্রয়োজনের সময় সড়কে পুলিশ টহলের কাজ করতো। কিন্তু এখন পুলিশ ক্যাম্প না থাকার সুযোগে অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। অন্যদিকে যানজট এখন নিত্যসঙ্গী।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক মাসে চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক মহাসড়কটির এই অংশে পুলিশ সেজে ছিনতাইসহ বেশ কয়েকটি অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, যা আতঙ্কিত হওয়ার মতো। গত বছর থেকে তা বেড়েছে কয়েক গুণ।

কয়েকজন বাজার ব্যবসায়ী জানান, একদিকে সড়কে প্রতিনিয়ত ছোট বড় অসংখ্য গাড়ি চলছে। অন্যদিকে আইউব আলী শিক্ষা কমপ্লেক্স তথা চৌরাস্তার সামনে সিএনজি অটোরিক্সা ও অটোবাইকের জটলা লেগেই থাকে। ট্রাফিক পুলিশ থাকলে এই যন্ত্রণা থেকে রেহাই মিলতো। তাছাড়া পুলিশ ফাঁড়ি হলে রাত্রিকালীন সময়ে সড়কটিও নিরাপদ হতো।

গৃদকালিন্দিয়া হাজেরা হাসমত ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গৌরি রাণী সাহা বলেন, আমরা যানজটে অতিষ্ঠ। সবচেয়ে ভয়াবহ বিষয় হলো কলেজ এলাকায় প্রবেশ করলেই গাড়িগুলোর উচ্চ হর্ন। এই হর্নের জন্যে আমরা তিনতলায় ঠিকমতো ক্লাস নিতে পারছি না। এর একটা বিহিত করা প্রয়োজন।

এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. শাহ আলম জানান, পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের বিষয়ে একটি আবেদনের কপি পেয়েছি। সীমান্তবর্তী হওয়ায় পুলিশ ফাঁড়ির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পুলিশ সুপার মহোদয় বিষয়টি দেখবেন।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়