প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৩, ০০:০০
করোনাভাইরাস মহামারি আর ইউক্রেন যুদ্ধের গ্যাঁড়াকলে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে খারাপ থেকে খারাপের দিকে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ‘খুবই ভঙ্গুর’ বলে হতাশার কথা শোনালেন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) শীর্ষ এক কর্মকর্তা।
রোববার আরবিআইয়ের মনিটরি পলিসি কমিটির সদস্য জয়ন্ত আর ভার্মা বলেছেন, ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধি বেশ ভঙ্গুর। আমাদের যে পরিমাণ প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন সেটা ২০২২-২৩ অর্থবছরে অর্জন করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন না তিনি।
ভারতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে মুদ্রাস্ফীতির হার উচ্চ থাকবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জয়ন্ত আর ভার্মা। তবে তার ধারণা, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের মুদ্রাস্ফীতির হার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাবে।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি অত্যন্ত ভঙ্গুর বলে মনে হচ্ছে। আর্থিক কঠিন পরিস্থিতির কারণে মানুষের চাহিদা সংকুচিত হচ্ছে। বিষয়টির ব্যাখ্যায় জয়ন্ত আর ভার্মা বলেন, ক্রমবর্ধমান ইএমআইয়ের চাপে সাধারণ মানুষের পরিবারের বাজেটের ওপর চাপ বৃদ্ধি এবং ব্যয় হ্রাস করছে। এছাড়া বৈশ্বিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে রপ্তানিও নানামুখী প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছে। ফলে বাজারে চাহিদা কমছে।
সুদের উচ্চ হার বেসরকারি বিনিয়োগকে আরও কঠিন করে তুলছে উল্লেখ করে ভার্মা বলেন, সরকার বেসরকারি খাতে আর্থিক একত্রীকরণ ধারায় রয়েছে। যে কারণে এই উৎস থেকেও অর্থনীতিতে সহায়তা হ্রাস পাচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব কারণে আমাদের জনসংখ্যা ও আয়ের স্তরের পরিপ্রেক্ষিতে ক্রমবর্ধমান কর্মশক্তির আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য যা প্রয়োজন, তা থেকে প্রবৃদ্ধি কম হতে পারে বলে আমি আশঙ্কা করছি।
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। অন্যদিকে, দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের (এনএসও) পূর্বাভাসে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হার ৭ শতাংশ হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে।
আহমেদাবাদের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক জয়ন্ত আর ভার্মা বলেন, মহামারি এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সরবরাহ বিশৃঙ্খলা ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে বিশ্ব। যে কারণে বৈশ্বিক মুদ্রাস্ফীতির চাপও ক্রমান্বয়ে কমছে। তবে আশার কথা হলো ‘যুদ্ধকে সঙ্গী করে বাঁচতে শিখছে বিশ্ব,’ বলেন তিনি। সূত্র : পিটিআই।