প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২০:৩৩
লক্কড় ঝক্কড় কাঠেরপুলে ভোগান্তিতে গ্রামবাসী
নিজেদের উদ্যোগে প্রথমে বাশের সাঁকো করা হয়। পরে যখন দেখা গেলো মানুষের চলাচল বেড়ে গেছে, তখন গুরুত্ব বিবেচনায় কাঠের পুল নির্মাণ করে গ্রামবাসী। কিন্তু সেই কাঠের পুল দিয়ে দীর্ঘদিন চলাচল করলেও বর্তমানে সেটি লক্কড় ঝক্কড় অবস্থায় রয়েছে। স্কুল ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়েই এই পুল দিয়ে পারাপার হচ্ছে। দুবছর পূর্বে কাঠের পুলের স্থানে পাকা সেতু নির্মাণের আবেদন করা হলেও সেটি এখানো আলোর মুখ দেখেনি। অথচ ওই কাঠেরপুল অন্তত ৪/৫টি গ্রামের লোকজনের যোগাযোগের সহজ মাধ্যম। ঝুঁকিপূর্ণ এই কাঠের পুলটি হলো ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নে।
সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে, পাইকপাড়া উত্তর ইউনিয়নের পূর্ব ভাওয়াল গ্রামের সেচ খালের উপর এই কাঠের পুলটির খুবই দুরবস্থা। এটি দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাই ঝুঁকিপূর্ণ। গত ক'মাস আগে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে সে সময়ে পুলটির দুই পাশ ভেঙ্গে পড়ে। এরপর থেকে রিক্সা, ভ্যানগাড়ি ও মোটরবাইক পার হতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। এই কাঠেরপুল ব্যবহার করে পূর্ব ভাওয়াল, পশ্চিম ভাওয়াল, কাঁশারা গ্রামসহ আশপাশের বাসিন্দারা। ওই গ্রামগুলো থেকে সহজেই শিক্ষার্থীরা স্কুল ও মাদ্রাসায় আসা যাওয়া করতে পারে এই পুল দিয়ে।
পূর্ব ভাওয়াল গ্রামের তালুকদার বাড়ির সৈয়দ আহমদ তালুকদার বলেন, গত ৫ বছর আগেও এটি বাঁশের সাকো ছিলো। এরপর স্থানীয়দের উদ্যোগে এখানে কাঠেরপুল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু গত ক'মাস আগে অতি বৃষ্টিতে এটির দুপাশ ভেঙ্গে পড়ে। এখন চলাচল করতে খুবই কষ্ট হয়।
একই গ্রামের বাসিন্দা দুলাল বলেন, কাঠের পুল দিয়ে চলাচল করতে অনেক কষ্ট হয়। কয়েকবার যানবাহন পানিতে পড়েছে। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। এখানে মসজিদ ও ঈদগাহ আছে। পাঁচ গ্রামের মানুষ এখান দিয়ে যাতায়াত করে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বহুবার জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি। এখানে একটি ব্রিজ কিংবা কালভার্ট নির্মাণ করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।স্থানীয় ইউপি সদস্য রায়হানুল কবির শামীম বলেন, গত প্রায় দুবছর পূর্বে এই কাঠের পুলটির স্থলে ব্রিজ করে দেয়ার জন্যে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছি। এ বছরের শুরুতে একবার পিআইওসহ অন্যান্য লোকজন সরজমিনে পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো বরাদ্দ আসেনি। প্যানেল চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম পাটওয়ারী বলেন, ব্রিজটি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এটি করার সুযোগ নেই। ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে ব্রিজ করা সম্ভব। তাই আমি প্রকল্প বাস্তায়ন কর্মকর্তার দৃষ্টি কামনা করছি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিল্টন দস্তিদার বলেন, স্থানীয়দের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ব্রিজ নির্মাণের স্বার্থে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে এলাকাবাসীর দাবি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।