প্রকাশ : ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
আওলাদে রাসুল, মুজাদ্দেদে জামান, গাউসে জামান, কুতুবে জামান আল্লামা সাইয়্যেদ আবেদ শাহ মুজাদ্দেদী আল-মাদানী (রাঃ)-এর নসবনামায় দেখা যায় যে, তাঁর পূর্বপুরুষগণের মধ্যে কত জবরদস্ত আল্লাহ তা’আলার ওয়ালীগণ আছেন। উদাহরণসস্বরূপ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাঃ), সাইয়্যেদ শেখ ইব্রাহিম (তাবে’য়ী), সাইয়্যেদ শেখ ইসহাক (তাবে তাবে’ইন), শেখ সাইয়্যেদ সোলাইমান, শেখ সাইয়্যেদ নাছীর উদ্দিন, শেখ সাইয়্যেদ ইমাম রফি উদ্দিন, শেখ সাইয়্যেদ মাখদুম আব্দুল আহাদ এবং জগৎ বিখ্যাত সুফি শেখ সাইয়্যেদ আহমাদ মুজাদ্দেদণ্ডই আলফেসানী আল-হাসানী, আল-ফারুকী, আল-কুরাইশী (রাঃ)। যিনি সহস্র অর্থাৎ হাজার বছরের একজন মুজাদ্দেদ এবং ‘তারিকায়ে মুজাদ্দেদিয়া’-এর ইমাম ও প্রবর্তক। এই মহান ওয়ালীগণ ছাড়াও হুজুর সাইয়্যেদ আবেদ শাহ আল-মাদানী (রাঃ)-এর বাবা ওয়ালী কামেল আল্লামা মুহাম্মাদ সাইয়্যেদ শাহ (রাঃ) সহ আরো বহু আল্লাহর ওয়ালীগণ আছেন।
শুধু নসবনামা নয়, সাইয়্যেদ আবেদ শাহ (রাঃ) বহু কামেল পীরে তরিকত থেকে বাই'আতে রাসুল (সাঃ) এর খেলাফাত পান।
উল্লেখ্য, তিনি প্রধান চার তরিকতসহ বহু তরিকত থেকে খেলাফতপ্রাপ্ত একজন পীর ছিলেন। সুতরাং তাঁর শাজারা শরীফে দেখা যায় শত শত কামেল আল্লাহর ওয়ালীগণকে।
এই শত শত আল্লাহর ওয়ালীগণের মধ্য থেকে কারো নামে এমনকি তাঁর পরদাদাজান মুজাদ্দেদণ্ডই আলফেসানী (রাঃ) এর নামে কিংবা তাঁর বাবাজান (রাঃ)-এর নামেও তিনি উরুস পালন করেননি। তিনি উরুস পালন করেছেন আমাদের আক্বা ও মাওলা দোজাহানের সারকার হাযরাত মুহাম্মদ মুজতাবা আহমাদ মুস্তাফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)-এর নামে। হয়তো এই খেয়াল নিয়ে যে, সেইদিন যত বরকতময় আমল হবে তা যেন নবীজি (দঃ)-এর নামেই হয়। হুজুরের (রাঃ) চিন্তা, কথা বলা এবং কাজে শুধুই ছিল নবীপ্রেম।
তিনি তীব্রভাবে এই স্লোগানে বিশ্বাস করতেন, ‘রাসুল (দঃ) প্রেমই খোদাপ্রাপ্তির পূর্বশর্ত।
তিনিই তো সেই মোজাদ্দেদ, যিনি প্রায় ১২শ’ বছর ধরে চলা বিলুপ্তপ্রায় ‘বাইয়া’তে রাসুল (দঃ)-কে বহু পরিশ্রমের বিনিময়ে পুনরায় জিন্দা করেছেন। হুজুরের (রাঃ) নবিপ্রেম যে কতো ছিল, তা শুধু হুজুরের মনিব (দঃ)ই জানেন।
উল্লেখ্য, আজ থেকে প্রায় ৫৯ বছর পূর্বে বাংলাদেশে কেও নবিজি (দঃ)-এর নামে ওরস পালন করেন নি। হ্যাঁ এটি সত্য যে, নবিজি (দঃ)-এর নামে বহু মাহফিল আগে থেকেই পালন হতো। তবে সাইয়্যেদ আবেদ শাহ মুজাদ্দেদি (রাঃ)-এর পূর্বে কেউ নবীজী (দঃ)-এর নামে উরুস পালন করেনি। তিনি বাংলাদেশে ‘উরুসে নববী (দঃ)’ সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠা করেন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, হুজুর সাইয়্যেদ আবেদ শাহ মুজাদ্দেদি (দঃ) এই উরুসে নববী (সাঃ) পালনরত অবস্থায় বহুবার বলেছেন (উর্দুতে), ‘দয়াল নবি (দঃ) এখন উপস্থিত আছেন, যাঁর কলবের চক্ষু খোলা আছে দেখ দয়াল নবীজী (সাঃ) মুচকি হাসি দিতেছেন।’ এই কথার পর বহু বুজুর্গ আশেকে রাসুল (সাঃ), (যাঁদের কলবের চক্ষু খোলা ছিল সমর্থন জানান যে, তাঁরা দয়াল নবীজী (দঃ)কে দেখেছেন (সুবহানাল্লাহ)।
সুতরাং এই উরুস শরিফ একটি অতি বরকতময় উরুস আর এই উরুস মুবারক প্রতি বছরের ন্যায় এবারো বাংলা সনের পৌষ মাসের শেষ শনিবার, আজ ১৪ জানুয়ারি-২০২৩ ইমামে রাব্বানি (রাঃ) দরবার শরিফ, হাজিগঞ্জ, চাঁদপুরে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে (ইনশা আল্লাহ)।
আল্লাহ তা’আলা যেন, সকল আশেকানে রাসুল (সাঃ)কে এই উরুস মুবারাকে হাজিরির মাধ্যমে রাসুলে কারীম (দঃ)-এর রিসালাতের ফয়েজ এবং অলী আল্লাহর বেলায়াতের ফয়েজ লাভ করার তওফিক দান করেন, ওয়াসিলাতে আক্বা ওয়া আলে আক্বা (আমিন)।
লেখক : সাইয়্যেদ মাঞ্জুর শাহ মোজাদ্দেদী (Sayed Maûur Shah muzaddedi)