প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০
শুদ্ধ মন না হলে ভগবানের কাছে যেতে প্রবৃত্তি হয় না এবং শুদ্ধ মনে অশুদ্ধ আজে-বাজে জাগতিক বাসনা উঠে না। তাই ঠাকুর বলেছেন, ঈশ্বর চিন্তা যত করবে, ততই সংসারে সামান্য ভোগের জিনিস আসক্তি কমবে। ঈশ্বর লাউ, কুমড়ো ফল দেন না। তিনি অমৃত ফল দেন-জ্ঞান প্রেম, বিবেক, বৈরাগ্য। আশাহীন ভেঙ্গে পড়া মানুষকে ঠাকুর কল্পতরুর কথা বলে উদ্বুদ্ধ করেছেন, আবার নিজে কল্পতরু হয়ে তাদের হৃদয়ে চৈতন্য দান করেছেন। জগতের লোককে ঈশ্বরমুখী করাই ঠাকুরের উদ্দেশ্য। কারণ তাতেই পরম শান্তি ও শাশ্বত আনন্দ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে : কল্পতরু ঈশ্বর মানুষের সকল বাসনা পূরণ করেন কিনা? সন্তান যদি মায়ের কাছে বিষ খেতে চায়, মা কি তাকে বিষ দেন? শ্রী রামকৃষ্ণ বিষয় মদে মত্ত মানুষদের বিকার রোগীর সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, ''বিকার থাকলে কত কী বলে-আমি পাঁচ সের চালের ভাত খাবো রে; এই এক জালা জল খাবে রে। বৈদ্য বলে খাবি? এই বলে বৈদ্য তামাক খায়। বিকার সেরে যা বলবে তাই শুনতে হয়।"
এ বিষয়ে শ্রী চৈতন্য চরিতামৃতে একটি অপূর্ব উক্তি আছে :
অন্যকামী যদি করে কৃষ্ণের ভাজন
না মাগিলে ও কৃষ্ণ তারে দেন স্বচরণ।
কৃষ্ণ যাহে, আমা ভজে মাগে বিষয় সুখ,
অমৃত ছাড়ি বিষ মাগে, এত বড় মূর্খ।
আমি বিজ্ঞ এই মুখে বিষয় কেন দিব,
স্বচরণামৃত দিয়া বিষয় ভুলাইব।
শাস্ত্র বলে, বিষয়ই বিষ। ঐ বিষে জ্বালা। আর ঐ জ্বালা জুড়তে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ বছরের অন্ততঃ একটা দিন (১ জানুয়ারি) কাশীপুরের বাগান বাটীতে উপস্থিত হয়। কল্পতরু শ্রী রামকৃষ্ণের কাছে প্রার্থনা : তিনি যেন আমাদের সকলের উপর তাঁর সেই চিরকালের আমোঘ আশীর্বাদ 'চৈতন্য হোক; সদা বর্ষণ করেন। ঠাকুরের দিব্য স্মৃতি ভক্ত হৃদয়ে জাগানোর জন্য এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।
ডাঃ পরেশ চন্দ্র পাল
সভাপতি
শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ আশ্রম, চাঁদপুর।
সহায়ক গ্রন্থ : কল্পতরু শ্রী রামকৃষ্ণের ভূমিকা